২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

৩০ বছরের বসতিতে একটি ঘরও মিলছে না ভূমিহীন দম্পতির

৩০ বছরের ঠিকানা ছাপড়া ঘরের সামনে আবদুল ওয়াদুদ হাওয়াতন নেছা দম্পতি : নয়া দিগন্ত -

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার তারানিবাস গ্রামে সরকারি জমিতে ৩০-৩৫ বছর ধরে বসবাস করছে এক ভূমিহীন দম্পতি। সেখানে হতে যাচ্ছে ভূমিহীনদের জন্য সরকারি আবাসন। তবে ঘর বরাদ্দ পায়নি ওই ভূমিহীন ওয়াদুদ-হাওয়াতন নেছা দম্পতি। সরকারিভাবে ওই আবাসনে কোনো ঘর বরাদ্দ না পাওয়ায় এখন তারা রয়েছেন উচ্ছেদ আতঙ্কে।
উপজেলার হাসাদহ ইউনিয়নে তারানিবাস গ্রামের ভূমিহীন দম্পতি ওয়াদুদ (৬৫) ও হাওয়াতন নেছা (৬০) সরকারি পাঁচ শতক খাস জমিতে একটি ঝুপড়ি ঘর বেঁধে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে নিয়েছিলেন ৩০ বছর আগে। কিন্তু সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বলা হয়েছে, সেখানে সরকারিভাবে ভূমিহীনদের ঘর নির্মাণ করা হবে, তাই ছেড়ে দিতে হবে এত বছরের বসতিটুকু। ঘর বরাদ্দ না হওয়ায় তাদেরকে সেখান থেকে বাড়িঘর ভেঙে চলে যেতে মৌখিক নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাতেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে অসহায় পরিবারটি।
ভূমিহীন ওয়াদুদ-হাওয়াতন নেছার একমাত্র সন্তান মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে অনেক আগেই। মেয়ের পরিবারও অসচ্ছল। নিজেদের বাস্তুভিটা ছিল না কখনোই। জনপ্রতিনিধিসহ প্রশাসনের ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে ধরণা দিয়েও কোনো ঘর কিংবা একখণ্ড জমি পাননি তারা। প্রায় তিন যুগ ধরে বসবাস করা স্থানটিতে প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে পানি জমে। কষ্টে কাটে দিন। তা সত্ত্বে এখন ছেড়ে দিতে হবে এতদিনের আবাস।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, ছাপড়া ঘরে বসবাস করছে ওয়াদুদ-হাওয়াতন দম্পতি। দিনমজুরি পেশা হলেও বয়সের ভারে আগের মতো আর ক্ষেতে-খামারে শ্রম দিতে পারেন না ওয়াদুদ। এক দিকে বয়স অন্য দিকে সড়ক দুর্ঘটনায় পায়ে আঘাতের কারণে বর্তমানে অসহায় হয়ে পড়েছেন তিনি।
হাওয়াতন নেছা বর্তমানে চোখে দেখেন না। তিনি বলেন, ভূমিহীন হয়ে ছাপড়া ঘরে যুগ যুগ বসবাস করলেও তাদের খবর কেউ রাখে না। এখন উচ্ছেদ করা হলে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।
জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম বলেন, সরকারি জমিতে যেসব ভূমিহীন পরিবার বসবাস করছে তাদেরকে উচ্ছেদ করে নয়, সরকার সব ভূমিহীন পরিবারের জন্য পর্যায়ক্রমে আবাসনের ব্যবস্থা করবে। সরকারি জমিতে আগে থেকে যেসব ভূমিহীন রয়েছে তাদেরকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঘর দেয়ার কথা বলা হয়েছে। যাদের নামের তালিকা আগে করা হয়েছে, তাদেরকে আগে ঘর দেয়া হবে। ভূমিহীন ওয়াদুদ-হাওয়াতন দম্পতি পরিবারকে উচ্ছেদের কোনো নির্দেশ দেয়া হয়নি। তাদের ব্যাপারটি আগে জানলে আমি অবশ্যই এবারই ব্যবস্থা করতাম। তবে এবার ঘর না পেলেও পরবর্তী সময়ে ব্যবস্থা করা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement