২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ছেঁড়া টাকায় রঙিন স্বপ্ন

-

মানুষ কত ধরনের পেশা বেছে নেয়। সবার উদ্দেশ্য টাকা উপার্জন। কিন্তু যে টাকা দিয়ে সংসার চলে আবার সেই টাকাই হয় পণ্য এমন শুনলে একটু অবাকই হতে হবে। টাকা দিয়ে টাকা বিক্রি করে সংসার চালানো মানুষেরই একজন মজিবর রহমান (৬৫)। বাড়ি মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরী ইউনিয়নের তরা গ্রামে। নিজের জমিজমা নেই। ছেঁড়া, ফাটা, জোড়াতালি দেয়া পুরনো টাকা বেচাকেনার ওপরই চলে তার সংসার।
হরিরামপুর থানার অদূরে ছিল মজিবর রহমানের পৈতৃক নিবাস। পদ্মায় সব কেড়ে নিয়েছে। তার বাবা আব্দুর রশিদ কৃষিকাজ করতেন। সেই আয় দিয়ে সংসারের খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হতো। অভাবের কারণে অল্প বয়সে বন্ধ হয়ে যায় তার পড়াশোনা। পরিবারের হাল ধরতে চলে যান রাজশাহীতে পূর্বপরিচিত সিদ্দিকুর রহমানের কাছে। তিনিও পুরনো টাকার ব্যবসা করতেন। তার হাত ধরেই শুরু করেন টাকা বেচাকেনার ব্যবসা। রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ঘুরে কিনতেন ছেঁড়া, ফাটা, জোড়া লাগানো ও পুরনো টাকা। মাসে এক দিন ঢাকার গুলিস্তান এলাকার এজেন্টের কাছে বিক্রি করতেন। এভাবেই চলল ৩৫ বছর। এরপর স্থায়ীভাবে চলে আসেন মানিকগঞ্জে। তরা গ্রামে জায়গা কিনে বাড়ি করেন।
একমাত্র ছেলে শাহাদত হোসেন নয়ন বিকেএসপিতে হকি গেমস কোর্সে অধ্যয়নরত। স্বামী, স্ত্রী আর এক ছেলে মিলে বেশ সাচ্ছন্দ্যেই চলছিল সংসার। কিন্তু করোনা মহামারীর কারণে আবার অভাব-অনটনে পড়েন। তবুও হাল ছাড়েননি তিনি। আয় কমে গেলেও মানিকগঞ্জের বিভিন্ন গ্রাম ও বাজার ঘুরে ঘুরে তার ব্যবসা চালিয়ে যান তিনি।
মজিবর রহমান বলেন, আমাদের বড় পরিবার ছিল। বাবার মৃত্যুর পর এই পেশায় আসি। আর কোনো কাজ ভালো জানা না থাকায় এই বয়সেও ঘুরে ঘুরে ছেঁড়া টাকা সংগ্রহ করি। ভালো না লাগলেও এই পেশা চালিয়ে যেতে হচ্ছে। আর করোনা সব শেষ করে দিয়ে গেছে। আগে মোটামুটি আয় হলেও এখন তেমন হয় না।


আরো সংবাদ



premium cement