কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে কৃষক আজিজুল রাজাবাবু নামে একটি বড় ষাঁড়ের দাম ১৮ লাখ হাঁকালেও পাইকারেরা দিতে চাচ্ছেন ১০-১২ লাখ। শখের ওই ষাঁড়টিই এখন দরিদ্্র আজিজের ভাগ্যবদলের মাধ্যম। ষাঁড়টি দেখতে প্রতিদিনই ভিড় বাড়ছে।
জানা যায়, উপজেলার জিনারি গ্রামের আজিজুল শখের বসে ব্রাহামা জাতের একটি ষাঁড় বাছুর লালন-পালন শুরু করেন তিন বছর আগে। নিজের খামারেই জন্ম তার। তাই আজিজুল আদর করে ষাঁড়টির নাম রেখেছেন রাজাবাবু। তবে ছোট বাছুর থাকা অবস্থায় রাজাবাবুকে বাড়ির অনেকেই কিং কোবরা বলেও ডাকত। ভীষণ যতœ করে বড় করা লাল রঙের ষাঁড়টির এখন উচ্চতা প্রায় ৭ ফুট ও ওজন ১১৬০ কেজি। আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে রাজাবাবুই ভাগ্য বদলাবে আজিজুলের এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।
আজিজ জানান, নিজের খামারের গাভী থেকে জন্ম নেয় রাজাবাবু। এরপর আদর-যতেœই বড় করছেন ষাঁড়টিকে। নিজের সন্তানের মতো বড় করতে পরিশ্রম করছে তার পরিবারের অন্য সদস্যরাও। রাজাবাবুর জন্য বানানো হয়েছে আলাদা শেড। রাখা হয়েছে ২৪ ঘণ্টা ইলেকট্রিক ফ্যানের সুব্যবস্থা। খাবারের ব্যাপারেও আলাদা যতœ করতে হয় রাজাবাবুকে। তার প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় রয়েছে সয়াবিনের খৈল, গম, ভুট্টা, ছোলা, সবুজ ঘাস ও ফল। এটি কোরবানি উপলক্ষে প্রস্তুত করা জেলার সবচেয়ে বড় ষাঁড় বলে দাবি আজিজের।
স্থানীয় প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, ব্রাহামা জাতের গরুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। বাংলাদেশের আবহাওয়ায় এ জাতের গরু খুবই মানানসই। এ জাতের গরুর সাধারণত ৯০০-১৫০০ কেজি গোশত হয়। আজিজুল জানান, অনেক যতœ করে তিনি রাজাবাবুকে তিন বছর ধরে লালন-পালন করেছেন। তার ইচ্ছা রাজাবাবুকে বাড়িতে রেখেই বিক্রি করবেন। যেহেতু করোনা মহামারী চার দিকে ছড়িয়ে পড়েছে, তাই হাটে গিয়ে বিক্রির কোনো ইচ্ছা নেই তার। তিনি আরো জানান, রাজাবাবুকে লালন-পালন করার ক্ষেত্রে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতর তাকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছে। রাজাবাবুকে দেখতে ও কিনতে আশপাশের উপজেলার অনেক ক্রেতাই আসছেন, করছেন দাম দরও। এ পর্যন্ত রাজাবাবুুর দাম উঠেছে ১২ লাখ টাকা। তবে এ দামে এখনই বিক্রি করতে নারাজ আজিজুল। তিনি রাজাবাবুকে ১৮ লাখ টাকা হলে বিক্রি করবেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: আব্দুল মান্নান জানান, কৃষক আজিজুলের ষাঁড়টির লালন-পালনের বিষয়ে আমি নিয়মিত পরামর্শ দিয়েছি। তিনি কোনো ক্ষতিকর ওষুধ প্রয়োগ ছাড়াই দেশীয় খাবার খাইয়ে ষাঁড়টিকে বড় করেছেন। তার দাবি, আজিজের ষাঁড়টিই উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বড়। তাই করোনার সময়ে আজিজ ষাঁড়টির ন্যায্যমূল্য পাবেন বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা