শীতের মৌসুমের মজাদার খাবার কুমড়ো বড়ি। মাছ সবজি উভয় তরকারিতেই মানানসই। শীতের শুরুতেই বাংলার গ্রামে গ্রামে সকালের মিষ্টি রোদে কুমড়ো বড়ি প্রস্তুতের দৃশ্য চোখে পড়ে।
ঐতিহ্যবাহী এ সুস্বাদু তরকারি বিক্রি করে পাবনার চাটমোহর উপজেলার পৌরসভার আধাপাড়ার শতাধিক পরিবার আয় করছে। পাড়াটি এলাকাবাসীর কাছে কুমড়ো বড়ির গ্রাম হিসেবে পরিচিত। বছরের সাত মাসের এ ব্যবসা এখানকার চালচিত্র বদলে গেছে। ছেলেমেয়ে স্কুল-কলেজে পড়ছে। অনেক পরিবার জমি কিনে নতুন টিনের ঘর তুলে বাড়ি করেছে। গ্রামটিতে বিদ্যুৎ না থাকায় নাম আধারপাড়া গ্রাম নাম হলেও পরিশ্রমী জীবন ধারা সচ্ছলতার আলো এনেছে পরিবারে। আধারপাড়া গ্রামের যেদিকে তাকানো যায় শুধু কুমড়ো বড়ির চাতাল।
প্রায় ৪০ বছর ধরে কুমড়ো বড়ি তৈরি করেন দোলং মহল্লার উষা রানী ভৌমিক। তিনি জানান, ডাল ভেজানোর জন্য মাঝ রাতে ঘুম থেকে উঠতে হয়। আবার ভোরে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে কাজ শুরু হয়। মূলত মেয়েরা বড়ি তৈরি ও শুকানোর কাজ করেন আর পুরুষরা তা হাটবাজারে বিক্রি করেন।
পুরো গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, সবাই কুমড়ো বড়ি বানিয়ে টিনের পাতে বাড়ির আঙ্গিনায় রোদে শুকাতে দিয়েছেন। বৃদ্ধা মনোরমা পাল বলেন, আমার মাকে বড়ি বানিয়ে বেচতে দেখেছি। এখন আমি এ বড়ি বেচে তিন ছেলে ও দুই মেয়েকে মানুষ করেছি। দুই মেয়েকে আইএ পাস করিয়ে বিয়ে দিয়েছি। তিন ছেলে এখন মিষ্টির ব্যবসা করে।
মনোরমা পাল বলেন, ডাল পরিষ্কার করে ধুয়ে চার ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হয়। তারপর পাটায় ভোর বেলায় বাটতে হয়। হাত দিয়ে ফেনানোর পর কালজিরা, সাদা জিরা ও গুয়ামুড়ি দিয়ে সকালে বড়ি বানিয়ে টিনের পাতে রোদে শুকাতে হয়। শুকিয়ে বিক্রি উপযোগী করতে প্রায় দুই দিন লাগে। চলনবিলের মিঠাপানির রকমারি সুস্বাদু মাছের সাথে তরকারি হিসেবে কুমড়ো বড়ির তুলনা নেই।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা