২১ মে ২০২৪, ০৭ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ১২ জিলকদ ১৪৪৫
`


কৃষকের সন্তান হয়েও যেভাবে স্বপ্ন জয় করলেন আবির হাসান

-


ছোট বয়স থেকেই মানুষ স্বপ্ন দেখে বড় হলে সে কী হবে। কেউ স্বপ্ন দেখে আমি বড় হলে চিকিৎসক হবো। কেউ স্বপ্ন দেখে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। কেউ শিক্ষক হতে চায়। কেউবা গবেষক হওয়ার স্বপ্ন দেখে। আবার কেউ স্বপ্ন দেখে সরকারি কোনো চাকরি করার। মানুষের বয়স যত বাড়তে থাকে তার জীবনের লক্ষ্যটাও আরো সুনির্দিষ্ট ও স্পষ্ট হতে থাকে।
ছেলেটির নাম আবির হাসান। পাবনা জেলার চাটমোহর গ্রামের নিতান্ত দারিদ্র্যপীড়িত এক পরিবারের সন্তান। শৈশবে বাবার সাথে লাঙ্গল নিয়ে চাষবাস করত। বাবা রেজাউল করিম যেহেতু কৃষক ছিলেন তাই আবিরের স্বপ্নও কৃষিকেন্দ্রিক ছিল। কিন্তু সে শৈশব পেরিয়ে যখন কৈশোরে পদার্পণ করল, তার স্বপ্নের ধরনও পাল্টে গেল। দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি তার ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধ বেড়ে গেল। আবির সবসময়ই চাইত, এমন পেশা বেছে নেবে যার মাধ্যমে সরাসরি দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করা যায়।
আবির পড়াশোনায় শুরু থেকেই সাফল্য দেখিয়েছে। গ্রাম থেকে নবম শ্রেণী পাস করে মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তি হয় সে। সেখানে ভালো ফলাফল করে গ্র্যাজুয়েশনের জন্য ভর্তি হয় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনাল (বিউপি)। সেখান থেকে স্নাতক পাস করে ২০১৬ সালে ৭৭ বিএমএ কোর্সে ভর্তি হয়।

এর পরেই আবিরের জীবনে বৈচিত্র্যময় এক ঘটনা ঘটে। আবিরকে না জানিয়ে তার এক বান্ধবী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে আবিরের সিভি ও শিক্ষাগত সার্টিফিকেট জমা দিয়ে আবিরের জন্য চাকরির আবেদন করে। এরপরে যখন তাকে সেনাবাহিনী থেকে মেসেজে ডাকা হয় তখন আবির খুব অবাক এবং সেই সাথে দারুণ পুলকিত হয়। সাতপাঁচ না ভেবে নিজের যোগ্যতা ও সামর্থ্য নিরীক্ষার জন্য সেনাবাহিনীর ডাকে সাড়া দেয় আবির।
আল্লাহ আবিরের দেশ ও দেশের মানুষের সেবা করার স্বপ্ন পূরণের তাওফিক দান করেন। সে সেনাবাহিনীতে চাকরি পেয়ে যায়। আবির বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে লেফটেন্যান্ট হিসেবে যোগ দিয়ে বর্তমানে ক্যাপ্টেন পদে কাজ করছে।
পরিবারে দুই ভাই এবং দুই বোনের মধ্যে আবির সবার ছোট। এ কারণে সবার স্নেহ এবং ভালোবাসাটাও আবির বেশি পায়। মা-বাবা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইউনিফর্মে আবিরকে দেখে কেমন প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে ছিলেন সেই স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবির জানায়, চট্টগ্রাম থেকে খুব ভোরে আমাদের পাবনা কাছিকাটা বিশ্ব রোডে নেমে আচমকা বাড়িতে উঠি। দেখি মা থালা-বাসন মাজছেন। হঠাৎ করে সেনাবাহিনীর পোশাকে আমাকে দেখে তিনি ভয় পেয়ে যান। তিনি প্রথমে আমাকে চিনতেই পারেননি। এরপর যখন আমার কাকিমা আমাকে দেখে বলছিলেন, সে তো আমাদের আবির। আবির এসেছে। তখন মা আঁচল দিয়ে চোখের পানি মুছতে মুছতে আমাকে জড়িয়ে ধরেন। বলছিলেন, আমার আর কিচ্ছু লাগবে না। আমার ছেলে মানুষের মতো মানুষ হয়ে ঘরে ফিরেছে।

ইতোমধ্যে আমার বাবাও ঘর থেকে বাইরে আসেন। তখন আমি বাবাকে স্যালুট দিলে তিনিও চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে বলতে থাকেন, আমার ছেলে আর্মি অফিসার হয়ে বাড়ি ফিরেছে। এখন তাকে অন্যরা স্যালুট করবে। সম্মান করবে। আমার ছেলে দেশ ও দেশের মানুষের সেবা করবে। এর চেয়ে বড় সৌভাগ্য আমার জন্য আর কী-ইবা হতে পারে।
দারিদ্র্যপীড়িত এক কৃষকের সন্তান আবির এখনো বাড়িতে গেলে বাবার সাথে জমিতে কৃষিকাজ করেন। অতীতকে তিনি ভুলে যাননি। ভুলে যাননি তাদের গ্রামের শত-শত কৃষককেও। নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী সুযোগ পেলেই আবির তাদের পাশে দাঁড়ান। আবির এখানেই নিজের জীবনের সার্থকতা ও প্রশান্তি খুঁজে পান।

 


আরো সংবাদ



premium cement
টি স্পোর্টস-জি টিভি নয়, বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র ম্যাচ সরাসরি দেখাবে অন্য চ্যানেল ইরানের নিহত পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে প্রেসিডেন্ট রাইসির মৃত্যুতে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের শোক বিবিএসের ঘোষণা : চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিবর্তনের নজর রাখবে পাশ্চাত্যের দেশগুলো ঢাকা-তাসখন্দ সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনার উপর গুরুত্বারোপ রাষ্ট্রদূত ড. মনিরুলের নারীর জীবনমান উন্নয়নে পাশে থাকার অঙ্গীকার জাতিসঙ্ঘের আবাসিক প্রতিনিধির রাইসির স্মরণে জাতিসঙ্ঘে এক মিনিট নীরবতা পালন ইরানের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী বাগেরি কানি বড় ভাই বিপিএলে, ছোট ভাই বিসিএলে নকল ডায়াবেটিস স্ট্রিপ ধ্বংস করতে ফার্মা সল্যুশনসকে হাইকোর্টের নির্দেশ

সকল