২১ মে ২০২৪, ০৭ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ১২ জিলকদ ১৪৪৫
`


মুরাদনগরে খাল খননের নামে হরিলুট, মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়

খনন করা মাটি খালের দুই পাশে না ফেলে নেয়া হচ্ছে ইটভাটায় : নয়া দিগন্ত -

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার চাপিতলা ইউনিয়নের চাপিতলা-বিষ্ণুপুর সড়ক সংলগ্ন সরকারি খালটি খননের নামে মাটি বিক্রি ও হরিলুটের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। খাল খননের মাটি খালের দুই পাড় বাঁধাই করে উদ্ধৃত মাটি সরকারি ব্যবস্থাপনায় উন্মুুক্ত নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করার বিধি থাকলেও খাল খননের শুরু থেকে স্থানীয় আয়েশা ব্রিকসসহ বিভিন্ন ইট ভাটায় মাটি বিক্রি করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এই নিয়ে জনমনে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। রহস্যময় নামমাত্র মূল্যে নিলাম করে সরকারকে কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
জানা যায়, মুরাদনগর উপজেলার চাপিতলা-বিষ্ণুপুর সড়ক সংলগ্ন খালের সাড়ে তিন কিলোমিটার খনন প্রকল্পের অনুমোদন ও বরাদ্দ দেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর। আর এক কোটি টাকা ব্যয়ে এ খনন কাজ পায় সোলায়মান এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গত মার্চ মাস থেকে খনন কাজ শুরু করে ঠিকাদার।

স্থানীয়রা জানান, খালের মাটি বিক্রির পাশাপাশি সরকারি বরাদ্দে নির্মাণ করার রাস্তার মাটিও কেটে নিচ্ছে ঠিকাদারের লোকজন। ব্রিজের গোড়া থেকে অবাদে মাটি কেটে নেয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে কোম্পানীগঞ্জ-নবীনগর সড়কের চাপিতলা ব্রিজটি। এ ছাড়াও হুমকির মুখে পড়েছে চাপিতলা-বিষ্ণুপুর পাকা সড়কসহ খালের পাড়ের অনেক বসতবাড়ি। প্রতিদিন শতশত ড্রাম, ট্রাক ও ট্রাক্টর দিয়ে মাটি পরিবহনে সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হওয়ায় এলাকাবাসীও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
স্থানীয় জসিম উদ্দীন জানান, রাত হতেই শুরু হয়ে যায় মাটিকাটার তাণ্ডব, এলাকায় আমরা স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারছি না। ভেকু দিয়ে যে খালের পাড় বাধা হয়েছে তা এক বৃষ্টিতেই রাস্তাসহ ভেঙে যাবে, এগুলো টিকবে না।
এ বিষয়ে বিষয়ে চাপিতলা ইউপি চেয়ারম্যান আবু মুছা আল কবির বলেন, খাল খননের কাজটি দেখেছি কিন্তু উন্মুুক্ত নিলাম কবে, কখন কিভাবে হয়েছে আমি এবং আমার পরিষদের মেম্বাররা কিছুই জানি না।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সোলায়মান এন্টারপ্রাইজের মালিক সোলায়মান মিয়া বলেন, অফিসিয়ালি যেভাবে আছে সেভাবেই কাজ করছি। ব্যতিক্রম কোনোকিছু করার চিন্তাভাবনা আমাদের নাই।
উপজেলা প্রকৌশলী রায়হানুল আলম চৌধুরী বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী নির্বাহী কর্মকর্তা ও আমাদের দফতরের উপস্থিততে স্পট নিলাম করা হয়। কাজ শুরুর পর থেকে বিভিন্ন অভিযোগে আমরা একাধিকবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি, তাদের সমস্যাগুলো আমরা চিহ্নিত করে তাদেরকে সমাধানে দিকনির্দেশনা দিয়েছি।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত উদ্দিন বলেন, এ বিষয়ে যদি কোনো লিখিত অভিযোগ পাই তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। আশা করছি যেসব প্রতিষ্ঠান কাজটি বাস্তবায়ন করছে তাদের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট সমাধান পাবো।


আরো সংবাদ



premium cement