৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


চিতলমারীতে সুদ কারবারিদের দৌরাত্ম্য

৩০ হাজার টাকা নিয়ে ৪৬ হাজার দিয়েও মধ্যযুগীয় বর্বরতার শিকার

-

‘বৃদ্ধা মা ও স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে পান চাষ করে খাই। হঠাৎ করে পানের বরাজে টাকার দরকার। অনেকের কাছে হাত পেতেছি। কোনো ধার মেলেনি। বাধ্য হয়ে ক্ষেতের পান বাঁচাতে বড়গুনি গ্রামের শাহারু মণ্ডলের কাছ থেকে শতকরা ৫ টাকা হারে ৩০ হাজার টাকা সুদে নিলাম। ১৭ মাস পরে ৪৬ হাজার টাকা পরিশোধ করতে গেলে ওরা গাছের সাথে বেঁধে আমার ওপর মধ্যযুগীয় বর্বর নির্যাতন চালাল। প্রায় দেড় মাস চিকিৎসা শেষে ৬ আগস্ট থানায় লিখিত অভিযোগ করি। তার পরও প্রভাবশালী ওই সুদ কারবারি আমাকে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।’ সম্প্রতি সাংবাদিকদের কাছে এভাবেই নিজের ওপর নির্মম নির্যাতনের বর্ণনা দিলেন পানচাষি সঞ্জয় কুমার মজুমদার।
উপজেলার বড়বাড়িয়া ইউনিয়নের বড়গুনি গ্রামের মৃত হরসিত মণ্ডলের ছেলে সঞ্জয় কুমার মজুমদার আরো জানান, গত ২৫ জুন বিকেলে সুদে নেয়া ৩০ হাজার টাকার সুদসহ ৪৬ হাজার টাকা পরিশোধ করতে তিনি সুদ কারকারি শাহারু মণ্ডলের বড়গুনি গ্রামের বাড়িতে যান। শাহারুকে ৪৬ হাজার দেয়ার পর সে আরো ৯ হাজার টাকা দাবি করে। তখন সঞ্জয় ৪ হাজার টাকা দিতে চাইলে শাহারু ও তার লোকজন তাকে সুপারি গাছের সাথে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বর নির্যাতন শুরু করে। পরে বৃদ্ধা মা যশোদা মজুমদার ছেলেকে নিয়ে গোপালগঞ্জে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি করেন। সেখানে তার চিকিৎসকরা তাকে অস্ত্রোপচার করেন। প্রায় দেড় মাস সেখানে চিকিৎসা শেষে গত ৬ আগস্ট তিনি বাদি হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। তার পরও প্রভাবশালী ওই সুদ কারবারি শাহারু মণ্ডল তাকে নানা হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। তার অব্যাহত হুমকিতে গোটা পরিবার ভয়ে তটস্থ হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে শাহারু মণ্ডলের বড় ভাই স্বপন মণ্ডল সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সঞ্জয়কে কোনো নির্যাতন করা হয়নি। তবে চিতলমারী থানার ওসি মীর শরিফুল হক জানান, মাদক ও সুদ কারবারিদের বিরুদ্ধে চিতলমারী থানা পুলিশ জিরো টলারেন্স অবস্থান নিয়েছে। এ ধরনের কোনো অভিযোগ তার কাছে পৌঁছেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই বিষয়টি গুরুত্বে সাথে দেখা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।


আরো সংবাদ



premium cement