২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`
স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই

চার গুণ যাত্রী নিয়ে চলছে ঢাকা-বরগুনা লঞ্চ

-

বরগুনায় ঈদের পর ঢাকামুখী যাত্রীর চাপ পড়েছে লঞ্চে। ধারণক্ষমতার চেয়ে চার-পাঁচগুণ যাত্রী নিয়ে আমতলী লঞ্চঘাট থেকে ছেড়ে যাচ্ছে লঞ্চ। লঞ্চ কর্তৃপক্ষ বরগুনা বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের সাথে আঁতাত করে অতিরিক্ত যাত্রী নিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া লঞ্চের ভেতরে ও ঘাট এলাকায় স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই।
জানা যায়, বৈরি আবহাওয়া ও করোনার কারণে আতঙ্ক রয়েছেন যাত্রীরা। এ ছাড়া লঞ্চের স্টাফ ও দালালদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে কেবিন ও ডেকের জায়গা কিনতে হচ্ছে এমন অভিযোগ যাত্রীদের। আমতলী-ঢাকা রুটে এমভি তরঙ্গ-৭, এমভি ইয়াদ-১ ও এমভি সুন্দরবন-৭ নামের তিনটি লঞ্চ চলাচল করছে। ঈদ উপলক্ষে যাত্রীদের সুবিধার জন্য অতিরিক্ত কোনো লঞ্চ সার্ভিস চালু করেনি লঞ্চ মালিক কর্তৃপক্ষ। অতিরিক্ত লঞ্চ সার্ভিস চালু না করায় ঢাকামুখী যাত্রীদের করোনার মধ্যে স্বাস্থ্যবিধির বেঘাতসহ চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে লঞ্চ মালিক কর্তৃপক্ষ বরগুনা বিআইডব্লিউটিএর সহকারী পরিচালক মামুনুর রশিদকে ম্যানেজ করে যাত্রী ধারণক্ষমতার চেয়ে তিনগুণ থেকে পাঁচগুণ যাত্রী পরিবহন করছে। এমভি তরঙ্গ-৭ লঞ্চে ধারণক্ষমতা-৭০২ জন যাত্রী। কিন্তু নেয়া হচ্ছে অন্তত দুই হাজার ৫০০ থেকে তিন হাজার। এ ছাড়া সরকারি নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। আগে আমতলী-ঢাকা প্রথম শ্রেণীর সিঙ্গেল কেবিনের ভাড়া ছিল এক হাজার, ডাবল কেবিনের ভাড়া দুই হাজার এবং ডেকের যাত্রীদের ভাড়া ছিল ৩০০ টাকা।
ঈদের আট দিন আগ থেকে কোনো কারণ ছাড়াই এ ভাড়া বৃদ্ধি করে সিঙ্গেল কেবিন এক হাজার ৩০০ টাকা, ডাবল কেবিন দুই হাজার ৪০০ টাকা এবং ডেকের ভাড়া ৩৫০ টাকা করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে এমভি তরঙ্গ-৭ লঞ্চটি বৈরি আবহাওয়া ও স্বাস্থ্যবিধি না মেনে কমপক্ষে দুই হাজার ৫০০ যাত্রী নিয়ে আমতলী লঞ্চ ঘাট ছেড়ে গেছে। এরপরে লেবুখালী পর্যন্ত মাঝখানে পুরাকাটা, আয়লা পাতাকাটা, ভয়াং, কাকরাবুনিয়া ও পায়রাকুঞ্জু নামের পাঁচটি ঘাট রয়েছে। ওই সব ঘাট থেকে অন্তত আরো এক হাজার যাত্রী লঞ্চে উঠেছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
তালতলী উপজেলার কাজিরখাল গ্রামের রুহুল আমিন বলেন, অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই এমভি তরঙ্গ-৭ লঞ্চে ঢাকায় যাচ্ছি। ভাড়াও বেশি নিচ্ছে। কচুপাত্রা গ্রামের জাহানারা বেগম বলেন, বৈরী আবহাওয়ায় যাত্রী বোঝাই লঞ্চে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছি। কী হয় আল্লায় জানে।
এমভি তরঙ্গ-৭ লঞ্চের সুপারভাইজার নুরুল ইসলাম ঈদের অতিরিক্ত যাত্রী নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ঈদ উপলক্ষে যাত্রীর চাপ বেশি। তাই বেশি নেয়া হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চে বসার কথা বললেও যাত্রীরা তা মানছেন না। আমতলী থানার ওসি শাহ আলম হাওলাদার বলেন, ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী নিতে পারবে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই লঞ্চে যাত্রী বহন করতে হবে। এর ব্যতিক্রম হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বরগুনা বিআইডব্লিউটিএর সহকারী পরিচালক মামুনুর রশিদ লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী নেয়ার বিষয়ে লঞ্চ কর্তৃপক্ষের সাথে তার সংশ্লিষ্টতার কথা অস্বীকার করে বলেন, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে ও ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী বহনের বিষয়টি আমার জানা নেই। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement