২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মিরসরাইয়ে যত্রতত্র গভীর নলকূপ : কমেছে পানির স্তর

-

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে নিয়মের তোয়াক্কা না করে যত্রতত্র স্থাপন করা হয়েছে গভীর নলকূপ। ফলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। এর প্রভাবে খরা মৌসুমে সাধারণ নলকূপ থেকে পানি পাওয়া যাচ্ছে না।
জানা গেছে, উপজেলার জোরারগঞ্জ বাজার থেকে আজমপুর পর্যন্ত প্রায় ১০টি গভীর নলকূপ রয়েছে। এদের মধ্যে আজামপুর বাজারে তিনটি, জোরারগঞ্জ ট্রেক্সটাইলের পাশে, দেওয়ানপুর ও বিশুমিয়ারহাটে একটি করে। প্রতিটি গভীর নলকূপ মুহুরী প্রজেক্ট সড়কের পাশে অবস্থিত। কর্তৃপক্ষের নজর এড়াতে নলকূপগুলো বিভিন্ন ধরনের বেড়া দিয়ে ঢেকে রাখা হয়।
স্থানীয়রা জানায়, একটি সিন্ডিকেট প্রতিদিন ভোরে এসব নলকূপ থেকে পনি তুলে সোডিয়াম কার্বনেট পার অক্সিহাইড্রেট জাতীয় ওষুধ মেশায়। পরে মিনি পিকআপে করে মুহুরী প্রজেক্টে নেয়া হয়। এই পানি মাছ তাজা রাখতে ব্যবহার করা হয়। একটি পিকআপে ২৬টি ড্রাম থাকে। দৈনিক ৭০ থেকে ৮০টি পিকআপ পানি প্রজেক্ট নেয়া হয়। এভাবে প্রতিদিন কয়েক হাজার লিটার পানি এসব নলকূপ থেকে ওঠানো হয়। স্থানীয়রা আরো জানায়, রাসায়নিক মিশানো পানি সড়কে পড়ে বিটুমিনের গুণগত মান নষ্ট হচ্ছে। এতে অল্প বৃষ্টিতে সড়ক ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে ১৯৮৬ সালে একটি অধ্যাদেশ জারি হয়। কিন্তু ১৯৯২ সালে একটি প্রজ্ঞাপনে অধ্যাদেশটি স্থগিত করা হয়। যা ছিল অবৈধ। ১৯৮৬ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী একটি গভীর নলকূপ থেকে আরেকটি গভীর নলকূপের দূরত্ব কম পক্ষে ২৫০০ ফুট। কিন্তু সেই আইনের তোয়াক্কা না করে একটি সিন্ডিকেট জোরারগঞ্জ ও ওসমানুপর ইউনিয়নে যত্রতত্র গভীর নলকূপ স্থাপন করছে। যার প্রভাবে ইতোমধ্যে ওই এলাকার সাধারণ নলকূপে পানি স্বল্পতা দেখা দিয়েছে।
কৃষি কাজে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবস্থাপনা আইন-১৭ নামে একটি আইনের খসড়া অনুমোদন দিয়েছেন মন্ত্রিসভা। সেই আইন অনুযায়ী উপজেলা পরিষদের লাইন্সেস ছাড়া নলকূপ স্থাপন করা যাবে না। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা কমিটি অনুসন্ধান করে নলকূপ স্থাপনের লাইন্সেস দেবেন।
উপজেলা পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা ফোরামের সভাপতি ডা: জামশেদ আলম জানান, যত্রতত্র গভীর নলকূপ স্থাপনের ফলে ভবিষ্যতে উপজেলাবাসী বিশুদ্ধ পানির সঙ্কটে পড়বে। নলকূপের পানিনির্ভর কৃষি জমিগুলো অনাবাদি হয়ে পড়বে। ফলে খাদ্য সঙ্কট দেখা দেবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা জনস্বাস্থ্য উপসহকারী প্রকৌশলী মাঈন উদ্দিন জানান, গভীর নলকূপের আশপাশে সাধারণ নলকূপ থাকলে পানি কম উত্তোলন হবে। কারণ গভীর নলকূপের কারণে পানির স্তর নিচে নেমে যায়। এই বিষয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement