চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে ব্যস্ততম একটি রাস্তা প্রশস্তকরণ ও সংস্কারকাজে ধীরগতিতে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে স্থানীয়রা। ধুলায় ছেঁয়ে যাচ্ছে রাস্তার পার্শ¦বর্তী ঘরবাড়ি। এতে শ্বাসকষ্টের রোগীরা পড়েছেন মহাবিপদে। ধুলার প্রভাবে শ্বাসকষ্ট বাড়ছে। কিন্তু হাসপাতালে কোনো চিকিৎসা মিলছে না। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতিতে কাজ শেষ হচ্ছে না বলে জানা যায়।
সরেজমিন দেখা যায়, পৌর শহরের প্রবেশ দ্বার ইসলামপুর চ্যাংখালী সড়ক থেকে দৌলৎগঞ্জ-মাঝদিয়া স্থলবন্দর পর্যন্ত আট কিলোমিটার সড়ক এখন ধূলির রাজ্যে পরিণত হয়েছে। দু-তিন মাস আগে ইট, বালু ও খোয়া দিয়ে রাস্তা মেরামত করা হয়। কিন্তু পিচ ঢালাইয়ের কাজ এখনো শুরু হয়নি। এতে রাস্তাটি থেকে প্রচুর পরিমাণে ধুলা সৃষ্টি হচ্ছে।
এ দিকে ধুলাবালুর মধ্যেই গয়েশপুর, মেদিনীপুর, হরিহরনগর, বেনীপুর, নতুনপাড়া, গোয়ালপাড়া ও সদর পাড়া এলাকার মানুষকে নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজে রাস্তায় নামতে হচ্ছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও ধুলার মধ্যেই যাতায়াত করছে। তাদের অভিযোগ, বড় গাড়ি চলার সময় ধুলার জন্য পথচারী কিংবা ছোট পরিবহনে যাত্রীদের দম বন্ধ হয়ে আসে। পথচারীরা শ্বাসকষ্ট, এলার্জিসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
স্থানীয় চিকিৎসক ডা: আবু হেনা মোস্তফা জামাল শুভ বলেন, ক্ষতিকর উপাদান ও রোগজীবাণু মিশ্রিত ধুলাবালু মানবদেহে প্রবেশ করে এলার্জি ও শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি করে থাকে। মারাত্মক বায়ুদূষণ জনস্বাস্থ্যের জন্য চরম হুমকি।
কলেজ শিক্ষার্থী তুষার বলেন, সড়কটি ভাঙা-চোরা ও কম প্রস্থ থাকলেও ভালো ছিল। আগে ধুলাবালু তো ছিল না। পিচের কাজ শেষ না করায় আমাদের চম অসুবিধা হচ্ছে। বাড়ি থেকে সড়কে ওঠার সাথে সাথে গায়ের জামাকাপড় ধুলাবালুতে ধূসর হয়ে যায়। নাক-মুখ বন্ধ হয়ে আসে। মাঝে মধ্যে চোখে ধুলা প্রবেশ করায় চোখ যন্ত্রণা করে।
ইসলামপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম খোকন বলেন, সড়কটির খোঁড়াখুঁড়ির পর রাস্তায় ইটের খোয়া বিছিয়ে তা রোলার করার কাজ দু-তিন মাস আগে শেষ হলেও রহস্যজনক কারণে পিচের কাজ থমকে আছে। এতে সৃষ্ট ধুলায় জনজীবন অসহনীয় হয়ে উঠেছে। বর্তমানে এমনিতেই করোনার আতঙ্ক রয়েছে। তার ওপর আবার প্রচণ্ড ধুলার কারণে মাস্ক ছাড়া রাস্তায় চলাচল দুষ্কর হয়ে পড়েছে। ইসলামপুর গ্রামের সংবাদকর্মী মামুন মোল্যা বলেন, রাস্তা নির্মাণে সব মহলকে ম্যানেজ করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান নি¤œমানের উপকরণ ব্যবহার করেছেন। আবার এখন রাস্তায় পিচকরণের কাজও অযথাই দেরি করে এলাকাবাসীর ভোগান্তি বাড়াচ্ছেন।
সীমান্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ময়েন উদ্দিন ময়েন বলেন, ধুলাবালু নাকে মুখে প্রবেশ করে কাশতে কাশতে বমি হয়ে যায়। এ সড়ক দিয়ে অনেক বেশি গাড়ি চলাচলের কারণে ধুলাবালুর পরিমাণও বেড়েছে। দ্রুত পিচকরণের কাজ শেষ করা দরকার।
দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিক হাজী জাকাউল্যাহ বলেন, চুক্তি মোতাবেক সড়ক ও জনপথ বিভাগ কাজ করতে না দেয়ায় সামান্য বিলম্ব হয়েছে। তবে খুব শিগগিরই পিচকরণের কাজ শেষ করা হবে। এর আগ পর্যন্ত সড়কে পানি দিয়ে ধুলাবালু কমানোর চেষ্টা করা হবে।
উপজেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৌশলী বোরহান উদ্দিন খান বলেন, আমি কয়েক দিন আগে যোগদান করেছি। সড়কটি সম্পর্কে আমার কিছু জানা নেই। তবে সড়কটির ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেবো।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, সড়কটির ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে কাজ শেষ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।