০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`


রোহিঙ্গা গণহত্যা

স্বীকারোক্তি দেয়া সেই ২ সেনাকে ফেরত চায় মিয়ানমার

- ছবি : সংগৃহীত

নেদারল্যান্ডসের হেগে রোহিঙ্গা নাগরিকদের উপর নৃশংসতা করার কথা স্বীকার করা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দুই সেনাকে অবশ্যই দেশটিতে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানান মিয়ানমার সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্র।

গত সপ্তাহে দুই সেনা ২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনী কতৃক রাখাইন রাজ্যে পরিচালিত ‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশন’ নিয়ে নেদার‌ল্যান্ডের হেগে স্বীকারোক্তি দেয়। তারা এখন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) হেফাজতে রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।

গত ‍জুলাইয়ে মিয়ানমারের উগ্র গোষ্ঠী আরকান আর্মি সর্বপ্রথম দুই সেনার বিষয়ে ভিডিও প্রকাশ করে।

মিয়ানমারের সামরিক মুখপাত্র মেজর জেনারেল জাও মিন তুন বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত মিয়ানমারের রেসামরিক ও সামরিক আদালত সাধারণভাবে চলছে, ততক্ষণ পর্যন্ত ওই দুই সেনার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচার ‘জাতীয় বিচারিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ’ করার সামিল।

তিনি বলেন, ওই দুই সৈন্যকে গ্রেফতার করে সেখানে পাঠানো হয়েছে, সুতরাং তাদেরকে মিয়ানমারে ও দেশটির সেনাবাহিনীর কাছে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত।

তিনি বলেন, রাখাইনে নৃশংসতার অভিযোগে সেনা আদালতে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণসহ যে কাউকে তাদের ইমেল, টেলিফোন বা চিঠির মাধ্যমে তাতমাদো’র (মিয়ানমারের সেনাবাহিনী) কাছে প্রেরণের জন্য অনুরোধ জানান তিনি।

মুখপাত্র আরো বলেন, সরকার ও তাতমাদো জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নিয়েছে এবং রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৃশংসতায় জড়িতদের বিচারের জন্য কোর্ট-মার্শাল চালুসহ সরকার সমর্থিত স্বাধীন তদন্ত কমিশন (আইসিওই) সুপারিশ করেছে।

এই বছরের শুরুর আইসিওই প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাখাইনে সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানের "গণহত্যার উদ্দেশ্য" ছিল না। যদিও সেটা জাতিসংঘের চালানো তদন্তের বিপরীত রিপোর্ট। তবে আইসিওই স্বীকার করেছে যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে "যুদ্ধাপরাধ, মারাত্মক মানবাধিকার লঙ্ঘন ও দেশীয় আইন লঙ্ঘনের মতো অপরাধ করা হয়েছে"।

দুই সাবেক সৈনা, মায়ো উইন তুন(৩৩), লাইট ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়ন (এলআইবি) ৫৬৫ ও জাও নাইং তুন(৩০) এলআইবি ৩৫৩ আরকান আর্মির প্রকাশিত একটি ভিডিওতে স্বীকার করেন যে ২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনী কর্তৃক রোহিঙ্গা জনগণের উপর যে অত্যাচার চালিয়েছিল এই দুইজন তাতে অংশ নিয়েছিলেন।

দুই সেনা জানায়, তারা ২০১৭ সালের শেষের দিকে রাখাইনের মংডুতে পাঁচটি গ্রামে ও বুথিডংয়ের আশেপাশে এবং তাং বাজার এলাকায় ১৮০ জনের বেশি নারী, পুরুষ ও শিশু হত্যার সাথে জড়িত ছিল। ময়ো উইন তুন আরো স্বীকার করে যে তিনি তাং বাজারে ধর্ষণের সাথে জড়িত।

রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ এনে বর্তমানে হেগের ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিজে (আইসিজে) গাম্বিয়ার দায়ের করা একটি মামলা লড়য়ে মিয়ানমার। যেখানে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন নেত্রী অং সান সু চি গত ডিসেম্বরে এই অভিযোগের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। দ্য ইরাবতি


আরো সংবাদ



premium cement