২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জেনারেল এম আই মজিদ

মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইশফাকুল মজিদ - সংগৃহীত

বাঙালির সামরিক ইতিহাসের অবিস্মরণীয় নাম মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইশফাকুল মজিদ। তিনিই প্রথম বাঙালি মুসলিম জেনারেল। ১৯০৩ সালের ১৭ মার্চ আসামের জোড়হাটে তার জন্ম উচ্চশিক্ষিত পরিবারে। তার বাবা আবদুল মজিদ সিআইই ছিলেন আসামের ইংরেজ গভর্নরের প্রথম ভারতীয় নির্বাহী কাউন্সিলর।

বড় ভাই এনামুল মজিদ ছিলেন আইসিএস (১৯২২)। বোন জোবায়দা আতাউর রহমান আসাম বিধানসভার প্রথম মহিলা সভাপতি বা স্পিকার। এম আই মজিদ বাঙালিদের মধ্যে প্রথম ব্যক্তি, যিনি ইংল্যান্ডের বিখ্যাত স্যান্ডহার্স্ট রয়েল মিলিটারি কলেজের গ্র্যাজুয়েট হিসেবে কমিশন লাভ করেছেন (১৯২৪)। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মালয় ও মিয়ানমারের রণাঙ্গনে লড়াই করেছেন। উপনিবেশবাদবিরোধী মানসিকতার কারণে মজিদকে ব্রিটিশ আমলে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। ১৯৪৬ সালে কলকাতার দাঙ্গা রোধে মুখ্যমন্ত্রী সোহরাওয়ার্দীর সাথে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করতেন। ১৯৪৭ সালে প্রধানমন্ত্রী নেহরু এবং সেনাপ্রধান জেনারেল কারিয়াপ্পা মজিদকে অনুরোধ করেন ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে। তিনি তা না করে করে মুসলমানদের অবিসংবাদিত নেতা, জিন্নাহর ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন।

পাকিস্তানে তিনি মেজর জেনারেল পদে উন্নীত হন। ১৯৫১ সালে জেনারেল আইয়ুব খান (পরে প্রেসিডেন্ট) হলেন সেনাবাহিনী প্রধান। মজিদ তার দুই বছরের সিনিয়র। তাই এই পদোন্নতি মেনে না নেয়ায় আইয়ুবের সাথে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। আইয়ুব খান মে. জে. মজিদকে ‘রাওয়ালপিন্ডি ষড়যন্ত্র মামলায়’ জড়িয়ে দেন। কিন্তু মজিদ নির্দোষ প্রমাণিত হন। পরে সরকার উচ্চপদে মজিদকে নিয়োগের প্রস্তাব দিলে তিনি অসম্মতি জ্ঞাপন করেন। স্বেচ্ছায় অবসর নেন ১৯৬২ সালে। জীবনের বাকি ১৪ বছর নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় এক গ্রামে কাটিয়ে দেন। ১৯৭১ সালের অসহযোগ আন্দোলনে অবসরপ্রাপ্ত সৈনিকদের সংগঠিত করেন। ’৭১ সালের ২২ মার্চ মজিদ ঢাকায় সাবেক সৈনিকদের মিছিলে নেতৃত্ব দেন। ২৫ মার্চের কালরাতে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। কিছু দিন পর মজিদ গ্রেফতার হন। তবে নির্যাতন সত্ত্বেও নতিস্বীকার করেননি।

তিনি আর পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেননি। আগস্ট মাসে তিনি মুক্তি পান। স্বাধীনতার পর সরকার জে. মজিদকে বিভিন্ন পদ গ্রহণের অনুরোধ জানালে অপারগতা প্রকাশ করেন। দীর্ঘ রোগভোগের পর ১৯৭৬ সালের ৩১ মার্চ এই ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্ব ইন্তেকাল করেন। আজিমপুর গোরস্থানে তিনি চিরশয্যায় শায়িত।

মৃত্যুর পরদিন দীর্ঘ বিবৃতিতে জেনারেল এম এ জি ওসমানী বলেছিলেন, ‘মেজর জেনারেল মজিদ সাহস, আনুগত্য, সততা, নিঃস্বার্থপরতা, আত্মোৎসর্গ ও পেশাগত দক্ষতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।’
একসময় মজিদ ছিলেন খ্যাতিমান ক্রীড়াবিদ। তিনি বিয়ে করেছিলেন উপমহাদেশের বিখ্যাত ব্যক্তি স্যার আবদুর রহীমের মেয়েকে। অর্থাৎ সোহরাওয়ার্দী তার ভায়রাভাই। দেশ ও জাতির জন্য বিপুল অবদান থাকলেও জেনারেল মজিদ যথার্থ স্বীকৃতি পাননি। সেনাবাহিনীর কাছে তার সম্পর্কে তথ্য নেই। পরিবারের অভিযোগ, যিনি বৃদ্ধ বয়সে মুক্তিযুদ্ধের সময় নির্যাতিত হয়েও মাথা নোয়াননি, স্বাধীনতার পর বেতনভাতা বা কোনো সুবিধাই তিনি পাননি সরকার থেকে।


আরো সংবাদ



premium cement
ষড়যন্ত্র রুখে ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ জনপদে পরিণত করবো : ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে হিট স্ট্রোকে পর্যটকের মৃত্যু জামালপুরে বউ-শাশুড়ি দ্বন্দ্বের জেরে সংঘর্ষ : নিহত ১, আহত ২ ঈশ্বরদীর তাপমাত্রা ৪১.৫ ডিগ্রি, বেঁকে যাচ্ছে রেলপথ আটক জাহাজের ক্রুদের ছেড়ে দেবে ইরান ফতুল্লা ৮৩০ গার্মেন্টেস শ্রমিক বিরুদ্ধে মামলা শ্রীনগরে ২ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলার প্রতিবাদ টানা চতুর্থবার কমলো স্বর্ণের দাম দেশের রাজনীতি ঠিক নেই বলেই অর্থনীতির ভয়ঙ্কর অবস্থা : সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন বগুড়ায় ২ বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে একজন নিহত, আহত ৫ সোনারগাঁওয়ে বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায়

সকল