০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`


সাঁতরে কাবা তাওয়াফ করেছিলেন যিনি

কাবার সামনে সাঁতার কাটছেন আল আওদাহ। (ইনসেটে) আলী আল আওদাহ। ছবি - সংগৃহীত

এমন দৃশ্য কি কল্পনা করেছেন, যে কেউ পবিত্র কাবা শরীফের সামনে সাঁতার কাটছে! আর তিনি সাতার কেটে কেটে পবিত্র কাবা তাওয়াফ করছেন! আজ থেকে ৭৭ বছর আগে ১৯৪১ সালে এমন আশ্চার্যজনক দারুণ একটি দৃশ্য ক্যামেরায় ধরা পড়েছিল।সেই ছবিতে দেখা যায় একজন ব্যক্তি কাবা শরীফের সামনে সাঁতার কাটছেন। শুধু তাই নয় তিনি সাঁতার কেটে পবিত্র কাবা শরীফ তাওয়াফ করছেন। ঐ বছর সপ্তাহব্যাপী ব্যাপক বৃষ্টি হওয়ায় মসজিদুল হারামসহ মক্কার বিভিন্ন এলাকা ডুবে গেছিল।

তিনি আলী আল আওদাহ। একজন বাহরাইনি নাগরিক। সাঁতরে কাবা তাওয়াফের বিষয়টির ছবি প্রকাশিত হলে তখনকার সময়ে তিনি খুব দ্রুত বিখ্যাত হয়ে উঠেন। এখন থেকে ৭৭ বছর আগে আল আওদাহকে মাকামে ইবরাহীমের পাশে সাঁতার কাটতে দেখা যায়। আর আল আওদার পেছেনে তার বড় ভাই ও বন্ধুকে কাবার দরজার সামনে বসে থাকতে দেখা যায়।

২০১৫ র মে মাসের ১৬ তারিখ ৮৬ বছর বয়সে শেখ আল আওয়াদি বাহরাইনে ইন্তেকাল করেন।  ১৯৪১ সনে একাধারে ৭ দিন বৃষ্টি হওয়াতে ৬ ফুট পানি জমে গিয়েছিলো কাবার চারপাশে। বাহরাইনের ১২ বছর বয়সী শেখ আল আওদাহ তখন মক্কায় দ্বীনি স্কুলের ছাত্র। ২০১৩ সনে কুয়েত আল রাই টেলিভিশনে তিনি তার স্মৃতি চারণে বলেন, বন্যার পানিতে মানুষ, যানবাহন, আর গবাদি পশু ভেসে যেতে দেখেছি। ৭ দিন পর বৃষ্টি থামলে আমার ভাই হানিফ, বন্ধুবর মোহাম্মদ আল তাইয়িব ও আলী থাবিত, আর ইয়ামেনের এডেনের হাসিম আল বার, আর আমাদের শিক্ষক তিউনিসের আব্দুল রউফ মিলে কাবা শরীফের বন্যার অবস্থা দেখতে যাই।

তিনি বলেন, বাচ্চারা পানি দেখলে যা করে আমরাও তাই করলাম, মাথায় আসলো সাঁতরিয়ে তওয়াফ করবো। যা ভাবা তাই, আমরা চারজন পানিতে ঝাপিয়ে পড়লাম। পুলিশ হই হই করে উঠলো, আমরা কালো পাথর (হাজারে আসওয়াদ) চুরি করতে পানিতে নেমেছি কিনা! আমি সাঁতরিয়ে পুলিশকে বোঝাতে চেষ্টা করলাম যে, আমি শুধু সাঁতরিয়ে ৭বার কাবা তাওয়াফ করব। কিন্তু পুলিশ তার স্বভাব সুলভ খবরদারী করেই চলছিলো। ইতোমধ্যে আলী থাবিত আর মোহাম্মদ আল তাইয়িব ক্লান্ত হয়ে পড়লে কাবা শরীফের দরজার ওপর বসে থাকে, উদ্ধার হবার আশায়।

আল আওদাহ বলেন, আমার ভয় হচ্ছিলো যেকোন সময় পুলিশ আমাকে গুলি করতে পারে আবার আনন্দও হচ্ছিলো এই ভেবে যে, পৃথিবীতে কেউ কোনদিন এই ভাবে কাবা তাওয়াফ করেননি, আমিই প্রথম। তাই ভয় আর আনন্দের মিশ্র অনুভূতি নিয়ে আমি কাবার চারপাশে সাঁতরিয়েই চললাম। পরবর্তীতে জানতে পেরেছিলাম, পুলিশের রাইফেলে আসলে গুলি ছিলোনা।


তিনি আরো জানান, তত্কালীন মক্কার বয়স্কদের কাছে জানতে চেয়ে ছিলেন তারা এরকম বন্যার পানি আগে দেখেছেন কিনা? তারা কোন সময়েই এত পানি দেখেননি বলে জানান।

কে সর্ব প্রথম কাবা তাওয়াফ করেছেন?

হযরত মুহাম্মদ সা. এর জীবনী থেকে জানা যায় যে, সর্বপ্রথম একজন সাহাবী সাঁতরে কাবা তাওয়াফ করেন। তিনি একজন সাহাবী। তার নাম হযরত আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়ের রা.।

এছাড়াও আরো একজনের নাম জানা যায় যিনি সাঁতরে কাবা তাওয়াফ করেছেন। তিনি হলেন প্রখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ বদর আল-দীন ইবনে জাম’আ। তিনি প্রত্যেকবার কাবা প্রদক্ষিণের সময় হাজারে আসওয়াদ চুম্বন করেছেন।

কাবা তাওয়াফকারীদের জন্য সাঁতরে কাবা তাওয়াফ করার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। কারণ মক্কায় অনেক বন্যা দেখা গেলেও সাঁতার কেটে তাওয়াফ করার মতো পরিস্থিতি হয়না।

ঐতিহাসিকগণ বলেন, এখন পর্যন্ত দুইবার মক্কায় এমন বন্যা হয়েছে যার ফলে কাবা শরীফে সাঁতরে তাওয়াফ করা গেছে। প্রথমটি মুসলিম শাসনের স্বর্ণযুগে আর দ্বিতীয়টি ৭৭ বছর আগে।  

 


আরো সংবাদ



premium cement
গাজীপুরে আসামির পরিবর্তে ভিকটিমকে আটক : ৫০ হাজার টাকায় মুক্তি রাখাইনে জান্তার ২০০ সেনাকে আটক করল আরাকান আর্মি জাতিসঙ্ঘে ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্য পদে সমর্থন বেলজিয়ামের লিগ্যাল এইড দরিদ্রের আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার সহজতর করেছে : প্রধান বিচারপতি এসপি সুব্রত হালদারসহ ৫ জনের নামে চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দুদকের হালদা নদীর মা মাছেরা নমুনা ডিম ছেড়েছে আদর্শিকভাবে ব্যর্থ হয়ে হামলা-মামলা দিয়ে হয়রানি করছে সরকার : গোলাম পরওয়ার রাজশাহীতে পাথর বোঝাই ট্রাক থেকে ৫ কোটি টাকার হেরোইন উদ্ধার ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় শিক্ষকের দুই হাত ভেঙে দিলো কিশোর গ্যাং মালয়েশিয়ায় ঝড়ে চলন্ত গাড়ির ওপর গাছ পড়ে নিহত ১ কাওরান বাজারে চলন্ত প্রাইভেট কারে আগুন

সকল