১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলকদ ১৪৪৫
`


এমপিওভুক্ত হচ্ছে ২ হাজার ৬২৭ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

-

নতুন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (স্কুল-কলেজ-মাদরাসা-কারিগরি) এমপিওভুক্তির ঘোষণা দেয়া হবে আজ। বেলা সাড়ে ১১টায় এ ঘোষণা দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি এ তথ্য জানিয়েছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এবার মোট দুই হাজার ৬২৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হচ্ছে।
গতকাল দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় অবস্থিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে শিক্ষামন্ত্রী এ তথ্য জানান। এ সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব এবং কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিব উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এমপিওভুক্তির ঘোষণা এখন হলেও কার্যকর হবে গত জুলাই থেকে। কতগুলো প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হচ্ছে তা না জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এ ঘোষণা ও সংখ্যা প্রধানমন্ত্রীই বলবেন আগামীকাল (আজ)। তবে তিনি বলেন, ২০১০ সালে সর্বশেষ যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হয়েছিল এবার তার দ্বিগুণ প্রতিষ্ঠানকে এমপিওর আওতায় আনা হচ্ছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, মোট দুই হাজার ৬২৭টি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হচ্ছে। এরমধ্যে আছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে (স্কুল-কলেজ) এক হাজার ৫৪৮টি এবং কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগে এক হাজার ৭৯টি প্রতিষ্ঠান। কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগে এমপিওর জন্য অনুমোদন পাওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকায় আছে মাদরাসা দাখিল স্তরে ৩৫৯, আলিমে ১২৭, ফাজিল ৪২ এবং কামিল স্তরে ২৯টিসহ মোট ৫৫৭টি মাদরাসা। কারিগরি ক্যাটাগরিতে কৃষি স্তরে ৬২টি, ভোকেশনাল স্তরে ৪৮ এবং ভোকেশনাল সংযুক্ত ১২৯টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ ছাড়াও এইচএসসি বিএম ও বিএম স্বতন্ত্র ১৭৫, বিএম সংযুক্ত ১০৮টি প্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত এমপিওভুক্তির জন্য যোগ্য বিবেচিত হয়েছে। তবে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিভাগের কোন স্তরের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কত সেটি জানা সম্ভব হয়নি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ৫ থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিদ্যালয় (বুয়েট) তৈরি করা বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে সারা দেশে এমপিওভুক্তির আবেদন জমা নেয়া হয়। এমপিওভুক্তির নীতিমালা-২০১৮-এর ১৪ ধারা অনুযায়ী চারটি মানদণ্ডে প্রতিষ্ঠান যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের যোগ্যতা হিসেবে প্রতিষ্ঠানের বয়সের ক্ষেত্রে ২৫ নম্বর, শিক্ষার্থীর সংখ্যার ক্ষেত্রে ২৫ নম্বর, পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যার ক্ষেত্রে ২৫ নম্বর এবং পাসের হারে ২৫ নম্বর করে মোট ১০০ নম্বরের গ্রেডিং করা হয়।
এমপিও নীতিমালা-২০১৮ তে এমপিওভুক্তির জন্য পাঁচটি স্তর নির্ধারণ করা হয়। স্তরগুলো হলোÑ নি¤œ মাধ্যমিক (৬ষ্ঠ থেকে ৮ম), মাধ্যমিক (৯ম থেকে ১০ম) এবং উচ্চ মাধ্যমিক (৬ষ্ঠ থেকে ১২ শ’), কলেজ (১১ শ’ থেকে ১২ শ’), ¯œাতক (পাস) তথা ডিগ্রি কলেজ (১১ শ’ থেকে ১৫ শ’)। এমপিওভুক্তির জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে মোট আবেদন জমা পড়েছিল ছয় হাজার ১৪১টি। যাচাই-বাছাই শেষে ও ক্ষমতাসীন দলের এমপি-মন্ত্রীদের তদবিরে বিশেষ বিবেচনায় এক হাজার ৭৬৭টি প্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত করে প্রথম দফায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়। তাতে ৫৫১টি নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, এক হাজার দু’টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৬৭টি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ৯৪টি উচ্চমাধ্যমিক কলেজ এবং ৫৩টি ডিগ্রি (অনার্স-মাস্টার্স) কলেজ ছিল। সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী এক হাজার ৬৫১টি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত এক হাজার ৫৪৮টি প্রতিষ্ঠান এ তালিকায় রয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
মতবিনিময় সভায় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, নতুন নীতিমালা ও জনবল কাঠামোর আলোকেই যোগ্য বিবেচিত প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হচ্ছে। যোগ্য বিবেচিত একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও এমপিওভুক্তির বাইরে রাখা হয়নি। এ ছাড়া এখন থেকে প্রতিবছরই যোগ্য বিবেচিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হবে। তিনি আরো বলেন, ২০১৮ সালে প্রণীত নীতিমালা অনুসারে প্রতি বছরই সব (অতীতে প্রাপ্ত) এমপিভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান যাচাই করা হবে। এমপিভুক্ত প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে নীতিমালা অনুসারে যোগ্যতার মানদণ্ড বজায় রাখতে হবে, অনথ্যায় এ সুযোগ বাতিল করা হবে। আবার কখনো যোগ্যতা অর্জন করলে, তা আবার চালু করা হবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক বা দলীয় বিবেচনায় কোনো প্রতিষ্ঠানকে বাদ দেয়া হয়নি। রাজনৈতিক পছন্দ-অপছন্দ নয়, বরং যোগ্য সব প্রতিষ্ঠানকেই এবার এমপিও দেয়া হচ্ছে।
নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নির্ভুল তালিকা প্রণয়ন করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকেই যাচাই-বাছাই করা হয়েছে তালিকা চূড়ান্ত করার সময়। নীতিমালায় শর্ত পূরণ করতে পারে এমন প্রতিষ্ঠান ও এলাকা সম্পর্কে নীতিমালার নির্দেশনা অনুসারে, পিছিয়ে পড়া এলাকা ও জনগোষ্ঠী, হাওর, নি¤œাঞ্চল, চরাঞ্চল ও নৃ-গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিবেচনা করা হয়েছে।
এমপিওভুক্তির দাবিতে নন এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের আন্দোলন ও তাদের দাবি সম্পর্কে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব প্রতিষ্ঠান এমপিভুক্ত করার দাবিটি কি যৌক্তিক? পাল্টা প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় শিক্ষক-শিক্ষার্থী থাকা ও পাসের হার কাক্সিক্ষত না হলে তাদেরকে কি করে এমপিও দেয়া হবে? তিনি বলেন, শিক্ষক নেতাদের সাথে আলোচনা করেছি, তারাও একমত যে, নীতিমালার শর্ত পূরণ না করে কাউকে এমপি দেয়া যায় না। কারণ এ ক্ষেত্রে জনগণের অর্থের একটি জবাবদিহিতার বিষয় রয়েছে। সরকারি অর্থ দাবি-দাওয়া দিয়ে আদায় হয় না। তিনি বলেন, এমপিভুক্তি একটি চলমান প্রক্রিয়া, তাই তারা যখনই যোগ্যতার প্রমাণ দেবেন, তখনই তাদের এমপিওভুক্ত করা হবে।
নতুন নীতিমালা বাতিল করে পুরনো নিয়মে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্তির দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আমরণ অনশনরত শিক্ষক-কর্মচারীদের আন্দোলন প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, তারা অনশন ও আন্দোলন করে নিজেদের ও প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি করছেন। তাদের উচিত হবে এমপিওর যোগ্যতা অর্জনের জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করা। কারণ এখন প্রতি বছরই যোগ্য প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
মুসলিম নেতা ওয়াইসির টক্কর নিতে হায়দরাবাদে হিন্দুত্বের মাধবীলতা সংস্কৃতিতে আরো বেশি শ্রম-মেধা বিনিয়োগ করতে হবে : তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী পঞ্চগড়ে বিএসএফের গুলিতে নিহত ২ বাংলাদেশীর লাশ হস্তান্তর কালীগঞ্জে আম পাড়তে গিয়ে কিশোরের মৃত্যু ‘নুসুক’ কার্ডধারী ছাড়া অন্য কারো মাশায়েরে মুকাদ্দাসায় প্রবেশ নিষিদ্ধ বোলারদের নৈপুণ্যে কষ্টার্জিত জয় বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে ইসলামের সঠিক দাওয়াত পৌঁছাতে হবে : মোবারক হোসাইন নাঙ্গলকোটে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকা তরুণীর অনশন, পলাতক প্রেমিক চার উইকেট নেই জিম্বাবুয়ের বরিশাল অঞ্চল জামায়াতের উপজেলা আমির সম্মেলন অনুষ্ঠিত তারা আহম্মকের স্বর্গে বাস করেন : শাহজাহান খান

সকল