২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
আসামির স্ত্রীকে পুলিশের ধর্ষণ

অপরাধ প্রমাণ হলে কঠোর শাস্তি প্রাপ্য

-

এ দেশের পুলিশের একটা অংশ অপরাধের সাথে জড়িয়ে গেছে, এটা সবার মোটামুটি জানা। যেসব অপরাধীকে খুঁজে বের করে আইনের মুখোমুখি করা তাদের কর্তব্য, সেসব অপরাধীর সাথেই মিলেমিশে নানাবিধ অপরাধ করছে পুলিশ। অনেক সময় নিজেরাই একটি টিম গঠন করে অপরাধে লিপ্ত হচ্ছে তারা। এ ধরনের চক্র বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর হাতে আটক হয়েছে। অনেক সময় এসব বাহিনীর কোনো কোনো সদস্য বিচ্ছিন্নভাবে হলেও অপরাধে লিপ্ত হচ্ছে। সম্প্রতি পুলিশের মধ্যে অপরাধ সঙ্ঘটনে আরো ‘অগ্রগতি’র খবর পাওয়া যাচ্ছে। তারা নিজেদের সুবিধাভোগী অবস্থানের সুযোগ নিয়ে ধর্ষণের ঘটনাও ঘটাতে দ্বিধা করছে না। যশোরের শার্শা উপজেলায় এক আসামির স্ত্রীকে ধর্ষণের জঘন্য অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। তার সাথে ওই নারীকে একই সময় ধর্ষণ করেছে তার সোর্সও। রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলাবাহিনী যদি এভাবে উচ্ছৃঙ্খল হয়ে মারাত্মক অপরাধে জড়িয়ে পড়ে, তাহলে জাতির উপায় কী? কেন এ ধরনের অপরাধের হার বাড়ছে? তাহলে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা কি অপরাধ করে পার পেয়ে যাচ্ছে? এসব প্রশ্ন সাধারণ মানুষের মনে উদয় হওয়া অনিবার্য।
জানা যায়, শার্শার লক্ষণপুর গ্রামের আসাদুজ্জামান আশাকে ২৫ আগস্ট রাতে স্থানীয় গোড়পাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক খায়রুল বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যান। পরদিন আশার কাছ থেকে ‘৫০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার’ দেখিয়ে তাকে আদালতে চালান দেয়া হয়। গত সোমবার ওই উপপরিদর্শক কয়েকজন সোর্সকে নিয়ে আশার বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রীকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন। আশাকে ‘মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া’র প্রলোভন দেখিয়ে তার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। উপস্থিত স্থানীয় ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে সাংবাদিকেরা জানতে পেরেছেন, আশার স্ত্রী টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করায় পুলিশ ও তার সাথে থাকা সোর্স ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। শুধু তা নয়, প্রথমে খায়রুল ও পরে সোর্স কামরুল তাকে ধর্ষণ করেন। এ সময় সোর্স লতিফ ও কাদের ঘরের বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন। ধর্ষণের ঘটনা গোপন রাখার জন্য তারা ওই নারীকে হুমকি দিয়েছেন। ঘটনা ফাঁস হলে তাকেও ‘মামলায় জড়িয়ে দেয়া’র ভয় দেখানো হয়। পরদিন ধর্ষিতা যশোর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের অফিসে গিয়ে এ ব্যাপারে অভিযোগ উত্থাপন করেন। পরে তাকে জেলা পুলিশ সুপার অফিসে পাঠিয়ে দেয়া হয়। অভিযোগটি তদন্ত করার আশ্বাস দেয়া হয়েছে। আমরা জানি না, এ ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের শনাক্ত করা হবে কি না এবং প্রকৃত অপরাধী শনাক্ত হলেও তার বিচার করা হবে কি না।
সম্প্রতি আমরা দেখেছি, খুলনা জিআরপি থানার মধ্যেই এক নারীকে ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগ, দিনাজপুরে টহল পুলিশের বিরুদ্ধে এক নারীকে ধর্ষণ করার পর হত্যার ঘটনা, মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান থানার এক উপপরিদর্শক অস্ত্রের মুখে এক ছাত্রীকে ধর্ষণের খবর। অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, নির্যাতিত মানুষের আশ্রয়স্থল হওয়ার কথা পুলিশের। সে পুলিশ নিজেই হয়ে উঠছে পাকা অপরাধী। ছোটখাটো অপরাধ করে তারা ক্ষান্ত হচ্ছে না। ধর্ষণের মতো চরম গর্হিত পাশবিক অপরাধও তারা অবলীলায় করছে। এ ধরনের একটি ঘটনার পর আরেকটি ঘটতে এখন আর বেশি সময় নিচ্ছে না। তাহলে কি এটাই প্রমাণ হচ্ছে যে, অপরাধ করার ক্ষেত্রে পুলিশের মধ্যে কোনো ধরনের ভয় কিংবা শঙ্কা কাজ করে না। তাদের যে পেশাগত ও নৈতিক দায় সেটির গুরুত্ব অনেক। এভাবে আমরা অপরাধের অন্ধকারে হারিয়ে যেতে পারি না। শার্শায় পুলিশের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগটি অচিরেই তদন্ত করা হোক। অপরাধ প্রমাণ হলে তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
কুষ্টিয়াতে মসজিদ কমিটি নিয়ে সংঘর্ষে আহত ৫ চেয়ারম্যান তপন ও অজিত মেম্বারকে ধরিয়ে দিতে পারলে পুরস্কার ঘোষণা নারায়ণগঞ্জে ২৪ ঘণ্টায় ১৪ ডাকাত সদস্য গ্রেফতার রাজশাহীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি ছাড়াল যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশী শ্রমিকদের ভিসা সহজ করার আহ্বান প্রবাসী প্রতিমন্ত্রীর চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী না হয়ে অংশীদার হওয়া উচিত : শি জিনপিং ওকাব সভাপতি নজরুল ইসলাম, সম্পাদক জুলহাস আলম পাবনায় ১০ কোটি টাকার অনিয়মে ৩ ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে চুয়েট ১১ মে পর্যন্ত বন্ধ, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত নরসিংদীতে হিট স্ট্রোকে শিশুর মৃত্যু হিলিতে ভটভটি-মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ২

সকল