০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`


আকস্মিকভাবে ডায়রিয়ার প্রকোপ

অনিরাপদ খাবার ও পানি পরিহার করুন

-

রাজধানী ও এর আশপাশের এলাকায় হঠাৎ করে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। ঢাকার মহাখালীতে অবস্থিত আইসিডিডিআর,বি (আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ) হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীরা চিকিৎসা নিতে ভিড় করছেন। বিশেষায়িত এ হাসপাতালে শয্যাসংখ্যা ৪২৫টি। রোগীর চাপ সামাল দিতে হাসপাতালের সামনে তাঁবু টানিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হয়েছে। মূল ভবনে রোগীদের স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় এই ব্যবস্থা। সেখানেও রোগীর চাপ থাকায় স্বাস্থ্যকর্মী, নার্স ও চিকিৎসকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। গত তিন দিনে গড়ে প্রতি দুই মিনিটে একজন করে রোগী চিকিৎসা নিতে এ হাসপাতালে আসছেন বলে জানা যায়। আক্রান্তদের ৩০ খেকে ৩৫ শতাংশ শিশু। এমনকি, ২৫ শতাংশ রোগী কলেরার।
একটি সহযোগী দৈনিকের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে শুক্রবার সকাল ১০টা পর্যন্ত আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত নতুন রোগী এসেছেন ২৪৮ জন। শুক্রবার বেলা ১১টায় বেড়ে তা দাঁড়ায় ৩০৮ জনে। আইসিডিডিআর,বি কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে রোগী ভর্তি হয়েছেন ৮০৯ জন। আগের দিন ভর্তি হয়েছিলেন ৮৪৮ জন। মঙ্গলবার রোগীর সংখ্যা ছিল ৭৭৮। সোমবার ছিলেন প্রায় ৪০০ রোগী। তিন দিনে গড়ে ৮০০ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের সূত্র থেকে জানা যায়, কিশোরগঞ্জ, কুমিল্লা, রাঙ্গামাটি, ফেনী, পাবনা, বগুড়া, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও, যশোর ও কুষ্টিয়ার সরকারি হাসপাতালে শুক্রবার ৪৪১ জন ডায়রিয়ার রোগী ছিলেন।
ঢাকার মিরপুর, বাড্ডা, তেজগাঁও এবং পাশের টঙ্গী এলাকা থেকে আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালে বেশি রোগী ডায়রিয়ার চিকিৎসা নিতে আসছেন। এসব এলাকায় বিপুল নিম্নবিত্ত লোকজনের বাস। তারা স্বাস্থ্য সচেতনতার অভাবে বাসিপচা খাবার খেয়ে থাকেন। আর খাবার পানির বিষয়ে থাকেন উদাসীন। এ দিকে, ঢাকায় ওয়াসার সরবরাহ করা পানিতে অনেক সময় থাকে জীবাণুযুক্ত ব্যাকটেরিয়া। এই অনিরাপদ পানি পান করে গরমের সময় রাজধানীবাসী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হতে পারেন।
আমাদের দেশে সাধারণত গরমের সময় দেখা দেয় ডায়রিয়ার প্রকোপ। এই সময় খাদ্যদ্রব্য অল্প সময়ে হয়ে পড়ে অস্বাস্থ্যকর। তদুপরি, খাবার পানির সঙ্কট দেখা দেয়। ওই সব খাবার খেলে এবং অনিরাপদ পানি পান করলে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সমূহ আশঙ্কা। স্বাস্থ্য সচেতনতার অভাবে অনেকই এসব খাবার খেয়ে ও অনিরাপদ পানি পান করে আক্রান্ত হয়েছেন ডায়রিয়ায়। বিশেষ করে শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় তারা বাসিপচা খেয়ে সহজেই আক্রান্ত হয়। ডায়রিয়া পানিবাহিত রোগ এবং এ রোগ হলে দেখা দেয় পানিশূন্যতা। এতে শিশুর বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়, এমনকি রোগীর মৃত্যুও হতে পারে।
ডায়রিয়া থেকে বাঁচতে নষ্ট খাবার ও অনিরাপদ পানি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলেছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। তারা বলেছেন, নিরাপদ খাবার খেতে হবে এবং বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। পানি ফুটিয়ে পান করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। ডায়রিয়া থেকে রক্ষা পেতে সবার আগে চাই গণসচেতনতা। এ জন্য সরকারকে গণমাধ্যমে ব্যাপক ও ফলপ্রদ প্রচার চালাতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement