১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

তালতলীতে চেয়ারম্যান ও ছাত্রলীগ নেতাসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ মামলা

তালতলীতে চেয়ারম্যান ও ছাত্রলীগ নেতাসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ মামলা - প্রতীকী ছবি

এক নারীতে ধরাশায়ী তিন চেয়ারম্যান ও এক সাবেক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে আদালতে গণধর্ষণ মামলা হয়েছে। আদালতের বিচারক মো: মশিউর রহমান খাঁন মামলাটি আমলে নিয়ে পটুয়াখালী পিবিআইকে তদন্তপূর্বক সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশও দিয়েছেন।

বুধবার বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ধর্ষিতার বাবা এ মামলাটি দায়ের করে।

জানা যায়, বরগুনার তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো: রেজবি-উল কবির জোমাদ্দার, নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ড. কামরুজ্জামান বাচ্চু, পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার ও উপজেলা ছাত্রলীগ সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল আবেদীন মিঠুর বিরুদ্ধে গণধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা হয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, বরগুনার তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ড. কামরুজ্জামান বাচ্চু মিয়ার সাথে মামলার বাদির মেয়ের মোবাইলফোনে প্রেম হয়। একপর্যায় চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বাচ্চু মেয়েটিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। কিন্তু চেয়ারম্যান তাকে বিয়ে না করে টালবাহানা করতে থাকেন। মেয়েটি বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করলে চেয়ারম্যান তাকে বিয়ে করবে বলে স্ট্যাম্পে লিখিত দেন এবং বিভিন্ন স্থানে নিয়ে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ধর্ষণ করেন এবং মেয়েটির অজান্তে গোপনে মোবাইলে নগ্ন ছবি ধারণ করেন। ওই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে মামলার ২ নম্বর আসামি পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার দৈহিক সম্পর্কে বাধ্য করেন। চেয়ারম্যান রাজ্জাক তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন এবং তিনিও একইভাবে মোবাইলে নগ্ন ছবি ধারণ করেন। পরে পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আ: রাজ্জাক মেয়েটিকে ব্ল্যাকমেইল করেন এবং তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো: রেজবি-উল কবির জোমাদ্দারের সাথে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে বাধ্য করেন। তার কথা না শুনলে তাকে জীবননাশের হুমকিও দেন। নিরুপায় হয়ে মেয়েটি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রেজবি-উল কবির জোমাদ্দারের সাথেও দৈহিক সম্পর্কে বাধ্য হন।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানও ভিকটিমকে বিভিন্ন হোটেল ও লঞ্চে নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে বলে দাবি করেন মামলার বাদি।

জানা গেছে, তাদের হাত থেকে রক্ষা পেতে ধর্ষণের শিকার ওই মেয়ে তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করবে বলে হুমকি দেন। এ খবর পেয়ে তিন চেয়ারম্যান ও ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিলে ওই ধর্ষিতার বিরুদ্ধে উল্টা পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দেন। মামলায় ডিবি পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে এবং বর্তমানে মেয়েটি জেল হাজতে রয়েছেন।

তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো: রেজবি উল কবির জোমাদ্দার বলেন, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে আমার বিরুদ্ধে আমার প্রতিপক্ষরা ষড়যন্ত্রমূলক এ মামলা দায়ের করেছে। এ ঘটনার সাথে আমি ও অন্য দুই চেয়ারম্যানের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।’

এ মামলার বাদি পক্ষের আইনজীবি মো: আনিচুর রহমান মিলন বলেন, ‘বরগুনা আদালতের বিচারক আমার বাদির মামলাটি আমলে নিয়ে পটুয়াখালী পিবিআইকে তদন্ত করে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।’


আরো সংবাদ



premium cement