মুষলধারে কয়েক দিনের বৃষ্টিপাত
- ১০ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০
দেশের বিভিন্ন স্থানে তিন দিন ধরে এই চৈত্রেও ঝরছে ‘শ্রাবণধারা’, অর্থাৎ তুমুল বৃষ্টিপাত। আবহমান কাল থেকে এ দেশের আবহাওয়ার যে বৈশিষ্ট্য, তার সাথে এর মিল খুঁজে পাওয়া ভার। সাধারণত ষড়ঋতুর বাংলাদেশে বর্ষাকাল, মানে আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। আর স্বাভাবিক প্রকৃতির বৈশিষ্ট্য হচ্ছেÑ চৈত্রে সৃষ্টি হয় খরা। অনেকের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, তাহলে কি চিরাচরিত আবহাওয়ায় ব্যাপক পরিবর্তন আসছে? এ দিকে অব্যাহত ও অতিরিক্ত বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশে দেশে জলবায়ুতে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। এতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গরিব দেশ, অথচ ধনী দেশগুলোই এর জন্য দায়ী। সুনির্দিষ্ট সময় পরপর প্রাকৃতিক ধারাবাহিকতায় বদলে যায় জলবায়ু। তবে মনুষ্যসৃষ্ট কারণে এ স্বাভাবিক ধারাবাহিকতা ক্ষুণœ হচ্ছে। বিশ্ব এখন নেতিবাচক পরিবর্তনের মুখোমুখি। শিল্পবিপ্লব-পরবর্তী যুগে উন্নত দেশগুলোর ব্যাপক হারে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহারে বিশ্বের উষ্ণতার মাত্রা ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে। গলছে হিমবাহের বরফ, উত্তপ্ত হচ্ছে সমুদ্র, বাড়ছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক ঋতুচক্র। এই দুর্যোগে বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষি। বাস্তুচ্যুত হচ্ছে বহু মানুষ। এমন ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সামনের কাতারে। সমতল ভূত্বক, ঘনবসতি ও দুর্বল অবকাঠামোর কারণে আকস্মিক দুর্যোগের ঝুঁঁকিতে রয়েছে এ দেশ। বৈশ্বিক জলবায়ু ঝুঁঁকি সূচক ২০১৯-এ নবম অবস্থানে বাংলাদেশ।
এমন যখন বিশ্ব জলবায়ুর অবস্থা, তখন ঝড়ের সাথে তুমুল বৃষ্টিপাতে গত সোমবার রাজধানীতে তৈরি হয় এক ভিন্ন চিত্র। এ দৃশ্য মনে করিয়ে দেয় শ্রাবণের বর্ষণ। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সোমবার ঘণ্টা দেড়েকের বর্ষণে তলিয়ে যায় রাজধানীর অনেক এলাকা। রাজপথেও দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। অলিগলিসহ শাখা সড়ক ভাসে পানিতে। নগরজীবনে নেমে আসে সীমাহীন ভোগান্তি। অফিস থেকে ঘরমুখী নগরবাসীকে পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। রাজধানীর পথে পথে দেখা দেয় তীব্র যানজট। অবস্থা স্বাভাবিক হতে হতে মধ্যরাত প্রায়।
আবহাওয়াবিদদের মতে, দেশে ফাল্গুন-চৈত্র মাসের এ সময়ে ঝড় বা কালবৈশাখী স্বাভাবিক ঘটনা; কিন্তু এত ভারী বৃষ্টিপাত অনেকটাই ব্যতিক্রম। আবহাওয়া অফিস জানায়, ঢাকায় গত সোমবার দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৫১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।
বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশ যে ভয়াবহ ঝুঁকিতে রয়েছে, সেই প্রেক্ষাপট সামনে রেখে অসময়ে মুষলধারে এই বৃষ্টিপাতকে হালকাভাবে না দেখে এ নিয়ে অধিকতর গবেষণা করা প্রয়োজন। একই সাথে রাজধানীসহ দেশের বড় বড় নগরীতে বৃষ্টিপাতের কারণে যে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়, সেই দুর্ভোগ লাঘবে ওয়াসা ও সিটি করপোরেশনকে বর্ষা মওসুমের আগেই প্রস্তুতি নিতে হবে। তাহলেই নাগরিক জীবনে জলাবদ্ধতায় সৃষ্ট দুর্ভোগ অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা