২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`
ব্রিটেনের ৫ মসজিদে হামলা

সম্প্রীতি নষ্টের অপচেষ্টা রোধ করুন

-

বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণা উসকে দেয়া হয়েছে বিভিন্নভাবে। বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্বে এ কাজটি হয়েছে পরিকল্পিতভাবে। এ ক্ষেত্রে তারা ব্যবহার করেছে সন্ত্রাসী ঘটনাগুলোকে। যদিও ওই সব ঘটনার প্রত্যেকটির মোটিভ স্পষ্ট হয়নি। বিশেষ করে নাইন ইলেভেনে টুইন টাওয়ারে হামলার পর সেটি নতুন রূপ পেয়েছে। যদিও এটা প্রমাণ হয়নি যে, একদল মুসলমান এ কাজটি করেছে এবং এর ইন্ধনদাতাও মুসলমানেরা। এর পরপর ইউরোপ আমেরিকায় মুসলমান নামধারী কিছু ব্যক্তির বিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসী ঘটনাকে ব্যবহার করা হয়েছে একই কাজে। মুসলমানবিদ্বেষীরা সুচারুরূপে এসব ঘটনাকে প্রচারণার কাজে ব্যবহার করেছে। ফলে পশ্চিমা বিশ্বে মুসলমানদের ওপর নানা ধরনের হামলার ঘটনা ঘটছে। সম্প্রতি নিউজিল্যান্ডের দু’টি মসজিদে হামলার পর এই হামলা আরেকটি নতুনরূপ পেয়েছে। সর্বশেষ ব্রিটেনের পাঁচটি মসজিদে হামলা হয়েছে। শুক্রবার জুমার দিন সামনে রেখে এ হামলার ঘটনা ঘটানো হলো। এর মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী তাদের হীন উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায়।
ডেইলি মিররের খবরে জানা যায়, দুষ্কৃতকারীরা হাতুড়ি দিয়ে মসজিদের দরজা ও জানালা ভাঙচুর করেছে। উইটন ইসলামিক সেন্টার মসজিদের ইমাম জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় রাত দেড়টা থেকে ২টার মধ্যে এ হামলা হয়। এ ছাড়া অ্যালবার্ট রোড, বার্চফিল্ড রোড, স্লেড রোড, ব্রডওয়ের একটি করে মসজিদে হামলা চালানো হয়েছে। রাত আড়াইটায় বার্চফোল্ড রোডের মসজিদে হামলার খবর পুলিশকে জানানো হয়। রাত সোয়া ৩টায় একই ধরনের হামলা হয় এরডিংটন এলাকার স্লেড রোডের মসজিদে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পাঁচটি মসজিদে হামলার আলামত পেয়েছে। একই রাতে পাঁচটি মসজিদে এভাবে হামলার ঘটনা নতুন। এর মাধ্যমে হামলাকারীরা তাদের কট্টর সাম্প্রদায়িক অবস্থানের জানান দিলো। ব্রিটেন একটি সভ্য দেশ। এই দেশের সংবিধান সব ধর্ম বর্ণ গোত্রের মানুষের সমানাধিকার নিশ্চিত করার কথা বলে। এটা ঠিক যে, এ দেশেও ট্যারান্টের মতো শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদীরা রয়েছেন। তারা এ ধরনের হামলা ঘটিয়ে মুসলমানবিদ্বেষের মাত্রাকে আরো বাড়িয়ে দিতে চান। এর আগে আমরা দেখেছি ডেনমার্কে ট্রামে গুলি চালিয়ে তিনজনকে হত্যা করা হয়েছে। তুর্কি বংশোদ্ভূত একজন প্রকাশ্যে গুলি চালালেও এর কারণ এখনো উদঘাটন হয়নি। হামলাকারীর তুর্কি পরিচিতি এটাকে সাম্প্রদায়িক ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত করতে ব্যবহার করা হয়েছে। মুসলমানরা সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটাচ্ছে, অন্যদের জীবন অনিরাপদ করে ফেলছে, এমনটা দেখাতে এ ধরনের ঘটনাকে ব্যবহার করা হয়।
শুক্রবারের জুমার দিন সামনে রেখে মসজিদে এ ধরনের হামলা সুপরিকল্পিত। নিউজিল্যান্ডের দুই মসজিদে গুলি করে মুসলমানদের হত্যার ঘটনার সাথে এর মিল রয়েছে। ট্যারান্ট মূলত মুসলমান অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ওই ভয়াবহ হামলা পরিচালনা করেন। এর মাধ্যমে তিনি অভিবাসীবিরোধী একটা বার্তা পৌঁছে দেন। এ হামলায় এক দিকে অভিবাসীদের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে দেয়া হয়, আর শ্বেতাঙ্গদের আরো সাম্প্রদায়িক করে তোলার চেষ্টা রয়েছে। একসাথে পাঁচটি মসজিদে হামলা চালিয়ে ব্রিটেনের মুসলমানদের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। একই সাথে অভিবাসীদের বিরুদ্ধে একটি বার্তা হিসেবে ঘটানো হয়েছে কি না, সেটি খতিয়ে দেখতে হবে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দরকার। অপরাধীদের চিহ্নিত করে তাদের লক্ষ্য উদ্দেশ্য সম্পর্কেও পরিষ্কার হওয়া দরকার। সভ্য বিশ্বের অগ্রগামী দেশ হিসেবে ব্রিটেনের উচিত এ ধরনের ঘটনার কারিগরদের দ্রুততার সাথে চিহ্নিত করে যথোপযুক্ত বিচারের আওতায় আনা।

 


আরো সংবাদ



premium cement