২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`
দ্বিতীয় দফা সংলাপেও সমাধান মেলেনি

সরকারের ওপরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে

-


দ্বিতীয় সংলাপও অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ক্ষমতাসীন জোটনেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের সাথে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা তাদের পক্ষ থেকে চার দফা প্রস্তাবসহ নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের একটি রূপরেখা উপস্থাপন করেছেন। চার দফা প্রস্তাবের মধ্যে ছিল নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, নির্বাচনী লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি এবং নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন। তিন নম্বর প্রস্তাবের কয়েকটি উপধারার প্রথমটি ছিল বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি। এসব প্রস্তাব নিয়ে দু’পক্ষের নেতারা যুক্তি-পাল্টাযুক্তি দেখান। শেষ পর্যন্ত কোনো সমাধান মেলেনি। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রস্তাবগুলো নাকচ করে দেয়া হয়। তবে সংলাপ শেষে উভয় পক্ষ থেকে সতর্ক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়। আরো আলোচনার আশা করছেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা, তবে আলোচনা শেষে কোনো পক্ষই সুনির্দিষ্ট কোনো সমাধানের কথা জানাতে পারেনি।
ঐক্যফ্রন্টের দাবির প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সংলাপে ঐক্যফ্রন্ট যেসব দাবি করেছে, তা মূলত নির্বাচন পেছানোর বাহানা। সংলাপে অংশ নেয়া এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেছেন, সংলাপে ঐক্যফ্রন্ট লিখিত চারটি প্রস্তাব দেয়। তবে আওয়ামী লীগ এসব দাবি নাকচ করে দেয়। প্রস্তাবের জবাবে আওয়ামী লীগ নেতারা বলেছেন, এসব প্রস্তাব সংবিধানসম্মত নয়। এতে সাংবিধানিক শূন্যতার সৃষ্টি হবে। আর এ সুযোগে তৃতীয়পক্ষ ঢুকে পড়তে পারে।
দুই সংলাপ শেষে ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, বল এখন সরকারের কোর্টে। দ্বিতীয় দফা সংলাপে সীমিত পরিসরে আরো আলোচনার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। আলোচনা না করলে, দাবি না মানলে যে পরিস্থিতি হবে এর দায়ভার সরকারের। এ দিকে সরকারের সাথে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংলাপে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হওয়ার প্রেক্ষাপটে দলের নীতিনির্ধারকদের আন্দোলনমুখী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। আন্দোলনের পাশাপাশি নির্বাচনের প্রস্তুতির পরামর্শও দিয়েছেন তারা।
বহু প্রতীক্ষিত এই সংলাপ থেকে দেশবাসী এমন ইতিবাচক সমাধান আশা করেছিল, যা দেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধানের পথ উন্মোচিত করবে; কিন্তু কাক্সিত সে ধরনের কোনো সমাধান না পেয়ে কার্যত দেশবাসী আশাহত হয়েছে। তবু তাদের আশাবাদের ইতি ঘটেনি, যেহেতু সংলাপের চূড়ান্ত অবসান না ঘটিয়ে আরো আলোচনা কামনা করা হয়েছে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে। সরকার এ ব্যাপারে এখনো নেতিবাচক সিদ্ধান্ত জানায়নি। হতে পারে আনুষ্ঠানিক সংলাপের বাইরে দুই পক্ষ আলোচনা অব্যাহত রেখে সমাধানের একটি ঐকমত্যভিত্তিক পথরেখা তৈরি করতে সক্ষম হবে। দেশবাসী এখনো সে প্রত্যাশাই করে। দেশবাসী মনে করে, এই সংলাপের ব্যর্থতা ও সাফল্য কার্যত নির্ভর করছে সরকারপক্ষের ওপর। আমরা মনে করি, সমাধানের পথ বের করার সুযোগ এখনো হাতছাড়া হয়নি। সরকার আন্তরিক হলে সে সমাধান দ্রুত সম্ভব, যা আগামী নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ ও প্রতিযোগিতাপূর্ণ করবে। সে পথেই সবার কল্যাণ।


আরো সংবাদ



premium cement