২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`
নিরাপদ সড়কের দাবিতে বিক্ষোভ

শিক্ষার্থীদের ন্যায়সঙ্গত দাবি মেনে নিন

-

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীরা কয়েক দিন ধরে রাজধানীতে বিক্ষোভ করছে। এই বিক্ষোভে যারা অংশ নিচ্ছে, সবাই স্কুলের শিক্ষার্থী। রাজধানীতে অদক্ষ চালকদের দিয়ে বেপরোয়া বাস চালানোর কারণে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে। বহু লোকের প্রাণহানি হচ্ছে। বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিার্থীকে হত্যার ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমে আসে। স্কুলের শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে পরিবহন খাতে চরম অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।
দুর্ঘটনা রোধে শিক্ষার্থীরা ৯ দফা দাবি দিয়েছেÑ ১. বেপরোয়া ড্রাইভারকে ফাঁসি দিতে হবে এবং এই শাস্তি সংবিধানে সংযোজন করতে হবে। ২. নৌপরিবহনমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার করে শিার্থীদের উদ্দেশে নিঃশর্ত মা চাইতে হবে। ৩. শিার্থীদের চলাচলে এমইএস ফুটওভারব্রিজ বা বিকল্প নিরাপদ ব্যবস্থা নিতে হবে। ৪. প্রত্যেক সড়কের দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় স্পিডব্রেকার দিতে হবে। ৫. সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছাত্রছাত্রীদের দায়ভার সরকারকে নিতে হবে। ৬. শিার্থীরা বাস থামানোর সিগন্যাল দিলে, থামিয়ে তাদের বাসে তুলতে হবে। ৭. শুধু ঢাকা নয়, সারা দেশের শিার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ৮. ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় চলাচল বন্ধ ও লাইসেন্স ছাড়া চালকেরা গাড়ি চালাতে পারবে না। ৯. বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নেয়া যাবে না।
দুর্ঘটনা রোধে এভাবে মানুষ হত্যার ব্যাপারে সরকার কোনো কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করছে না। রাজধানীতে দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর সরকার বিশেষ করে নৌমন্ত্রীর ভূমিকায় শিক্ষার্থী তো বটেই, দেশের সাধারণ মানুষ ও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। নৌমন্ত্রী বরাবরই দুর্ঘটনার পর বাসচালকদের পক্ষে সাফাই গেয়ে আসছেন। বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর তিনি হাস্যোজ্জ্বল মুখে ভারতে এ ধরনের দুর্ঘটনা হয়, কিন্তু আন্দোলন বা এভাবে কথা হয় না বলে যুক্তি দেখান। এর আগে গরু-ছাগল চিনতে পারলে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়া যায় বলে মন্তব্য করে সমালোচিত হয়েছিলেন। নৌমন্ত্রী একজন শ্রমিক নেতা। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার চেয়ে শ্রমিকের অযৌক্তিক পক্ষাবলম্বনকেই তিনি জাতীয় কর্তব্য হিসেবে নিয়েছেন।
শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়ক ও মানুষের নিরাপত্তার দাবিতে একটি ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনে নেমেছে। পরিবহন খাতে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন মহল থেকে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করা হলেও গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না। আমরা মনে করি, শিক্ষার্থীদের এসব যুক্তিসঙ্গত দাবি মেনে নিয়ে পরিবহন খাতের নৈরাজ্য দূর করার পদক্ষেপ নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement