২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

শেষ হলো গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব

-

ভারত বাংলাদেশের শিল্পীদের নিয়ে শুরু হওয়া গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব শেষ হয়েছে। এর মাধ্যমে ভাঙল দুই দেশের শিল্পীদের মিলনমেলা। এটি ছিল উৎসবের অষ্টম আসর। ১০ দিনব্যাপী এ উৎসবের গতকাল শেষ দিনে আরণ্যক নাট্যদল ময়ূর সিংহাসন, সময় ভাগের মানুষ এবং থিয়েটার ৫২ নননপুরের মেলায় একজন কমলাসুন্দরী ও একটি বাঘ আসে মঞ্চস্থ করে। ড. নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে ছিল থিয়েটুনের সিচুয়ানের সুকন্যা। নাটক মঞ্চায়নের আগে বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত জাতীয় নাট্যশালার উন্মুক্ত মঞ্চে এবং সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে ছিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। জাতীয় সঙ্গীত ও নৃত্যকলা ভবন মিলনায়তনে ছিল কণ্ঠশীলনের আবৃত্তি প্রযোজনা চাঁদ বণিকের পালা এবং আনন্দনের সঙ্গীত পরিবেশনা।
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার অভিন্ন সংস্কৃতির অভিজ্ঞতাবিনিময় এবং সংস্কৃতির মানুষের মৈত্রীর বন্ধন আরো সুদৃঢ় করার লক্ষ্য নিয়ে সাত বছর ধরে ‘গঙ্গা-যমুনা উৎসব’-এর আয়োজন করে যাচ্ছে গঙ্গা-যমুনা নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব পর্ষদ। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউটের সভাপতি রামেন্দু মজুমদার। অন্যান্যের মধ্যে নাট্যজন কেরামত মওলা, নাট্যজন দেবপ্রসাদ দেবনাথ, নাট্যজন ঝুনা চৌধুরী, নৃত্যশিল্পী মিনু হক, নাট্যজন আহাম্মেদ গিয়াস উপস্থিত ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন সাংস্কৃতিকব্যক্তিত্ব গোলাম কুদ্দুছ।
শেষ দিনে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে নাট্যচক্রের ‘ভদ্দরনোক’, পরীক্ষণ থিয়েটার হলে ভারতের বেলঘরিয়া রূপতাপস প্রযোজিত ‘এলা এখন’ ও স্টুডিও থিয়েটার হলে মঞ্চায়ন হয় নাট্যম রেপার্টরির নাটক ‘ডিয়ার লায়ার’। একই সময়ে মহিলা সমিতির ড. নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে মঞ্চায়ন হয় শব্দ নাট্যচর্চা কেন্দ্রে নাটক ‘তৃতীয় একজন’।
‘বাংলা নাট্যোৎসব’
আজ থেকে শুরু হচ্ছে ‘বাংলা নাট্যোৎসব ২০১৯’। এতে বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন নাট্যদলের ৩১টি নাটক মঞ্চায়ন হবে। একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তন ও পরীক্ষণ থিয়েটার হল, মহিলা সমিতির ড. নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তন ও দনিয়ার স্টুডিও থিয়েটার হলে মঞ্চায়ন হবে নাটকগুলো। সন্ধ্যা ৬টায় শিল্পকলা একাডেমিতে যৌথভাবে এই নাট্যোৎসবের উদ্বোধন করবেন ত্রিপুরা রাজ্য বিধানসভার চিফ হুইপ কল্যাণী রায়, বাংলাদেশের রামেন্দু মজুমদার ও আতাউর রহমান। উদ্বোধন পর্ব শেষে জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে আয়োজক নাট্যদলের নাটক ‘শ্রাবণ ট্র্যাজেডি’, পরীক্ষণ থিয়েটার হলে নাট্যচক্রের ‘একা এক নারী’ এবং মহিলা সমিতি মিলনায়তনে মঞ্চায়ন হবে ব্যতিক্রম নাট্যগোষ্ঠীর নাটক ‘তক্ষক’।
উৎসবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়, দেশনাটক, প্রাচ্যনাট, থিয়েটার আর্ট ইউনিট, নাট্যচক্র, বুনন থিয়েটার, শব্দ নাট্যচর্চা কেন্দ্র, আরণ্যক নাট্যদল, মুন্সীগঞ্জের থিয়েটার সার্কেল, ঢাকা থিয়েটার, ব্যতিক্রম নাট্যগোষ্ঠী, নাট্যতীর্থ, নাট্যম রেপার্টরি, লোক নাট্যদল (বনানী), সময়, নাগরিক নাট্যাঙ্গন অনসাম্বল, বটতলা, অনুরাগ থিয়েটার, চন্দ্রকলা থিয়েটার, নবনাট, পদাতিক নাট্য সংসদ (টিএসসি), বাংলাদেশের পুতুলনাট্য গবেষণা কেন্দ্র, কথক, নাট্যযোদ্ধা ও বাঙলা নাট্যদল, ভারতের আসাম রাজ্যের ভাবিকাল থিয়েটার, পশ্চিমবঙ্গের ‘এবং আমরা থিয়েটার’ ও রঘুনাথগঞ্জ থিয়েটার গ্রুপ, ত্রিপুরার শুভম নাট্যচক্র ও লারনার্স থিয়েটার। উৎসব সহযোগিতায় রয়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড ও সবুজছায়া।
শিল্পকলা একাডেমির পাঁচ মঞ্চ ও মহিলা সমিতির মিলনায়তনসহ একযোগে ছয় মঞ্চে চলছে ১০ দিনের এই উৎসবটি। উৎসব পর্ষদের আহ্বায়ক গোলাম কুদ্দুছ জানান, শুক্রবার সবগুলো নাটকের প্রদর্শনীতে আসন পূর্ণ হয়েছিল। শুধু জাতীয় নাট্যশালায় ৯৮ হাজার টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছিল।
এমনকি সঙ্গীত ও নৃত্যকলা ভবন মিলনায়তনে সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় ১৪ হাজার টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে। এটি অভাবনীয়।
গতকালও ভালো সাড়া মিলেছে। শনিবার সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালায় নাট্যচক্র মঞ্চস্থ করে ভদ্দরনোক নাটকটি। পরীক্ষণ থিয়েটারে ভারতের বেলঘরিয়া রূপতাপস মঞ্চস্থ করে এলা এখন এবং স্টুডিও থিয়েটারে ছিল নাট্য রেপার্টরির ডিয়ার লায়ার। মহিলা সমিতি মিলনায়তনে ছিল শব্দ নাট্যচর্চা কেন্দ্রের তৃতীয় একজন।


আরো সংবাদ



premium cement