২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`


রবির হাত ধরে বাংলাদেশে নতুন হ্যান্ডসেট আনল মোটোরোলা

-

প্রায় ১০ বছর পর আবারো বাংলাদেশের বাজারে এলো বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ হ্যান্ডসেট নির্মাতা কোম্পানি মোটোরোলা। এবার দেশের অন্যতম শীর্ষ মোবাইল অপারেটর রবির সাথে সহযোগিতার ভিত্তিতে বাজারে নতুন মটো ই-ফোর প্লাস, মটো ই-ফাইভ ও মটো ই-ফাইভ প্লাস হ্যান্ডসেট আনল কোম্পানিটি।
গতকাল সোমবার রাজধানীর এক অভিজাত হোটেলে কোম্পানিটির সর্বশেষ এই হ্যান্ডসেটগুলোর উদ্বোধন করা হয়।
আকর্ষণীয় এই হ্যান্ডসেটগুলো রবির ই-কমার্স সাইট রবিশপে পাওয়া যাবে। মোটো ডিভাইসের জাতীয় পরিবেশক হিসেবে দেশের বাজারে মোটোরোলা ব্র্যান্ডটি আনল স্মার্ট টেকনোলজিস বিডি লিমিটেড।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) স্পেকট্রাম ম্যানেজমেন্টের ডিরেক্টর জেনারেল ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো: নাসিম পারভেজ। এ সময় রবির ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, চিফ ডিজিটাল সার্ভিসেস অফিসার শিহাব আহমেদ এবং স্মার্ট টেকনোলজিস বিডি লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম, গ্রুপ ডিরেক্টর এমডি জাফর আহমেদ ও ডিরেক্টর শাকিব আরাফাত উপস্থিত ছিলেন।
মটো ই-ফোর প্লাস, মটো ই-ফাইভ ও মটো ই-ফাইভ প্লাস হ্যান্ডসেটগুলোর দাম যথাক্রমে ১১ হাজার ৯৯০, ১৪ হাজার ৯৯০ ও ১৯ হাজার ৯৯০ টাকা। এই হ্যান্ডসেটগুলোতে বড় স্ক্রিনের সুবিধাসহ রয়েছে কম আলোয় ঝকঝকে ছবি তোলার নিশ্চয়তা।
এ ছাড়া ব্যাটারি সক্ষমতা, দ্রুততার সাথে কাজ করতে সক্ষম, আকর্ষণীয় লাউড স্পিকার ও মনোরম ডিজাইনের এই হ্যান্ডসেটগুলো মোবাইলে বিনোদনের ক্ষেত্রে এক নতুন মাত্রা যোগ করবে। সবগুলো হ্যান্ডসেটের সাথে থাকছে আকর্ষণীয় উপহার (মোটোরোলা ব্যাগ/ক্যাপ/টি-শার্ট/ ব্লুটুথ স্পিকার), ১৫ মাসের ওয়ারেন্টি, ছয় মাসের শূন্য শতাংশ ইএমআই সুবিধা এবং ৩০ দিনমেয়াদি ৪ জিবি ফ্রি ডাটা (২ জিবি রেগুলার ও ২ জিবি ৪.৫জি)।
এ ছাড়া এই হ্যান্ডসেটগুলোর যেকোনো একটি কেনার ৯ মাসের মধ্যে ১০০ টাকার বেশি ডাটা প্যাক কিনলে ১০০ শতাংশ বোনাস ডাটা উপভোগ করতে পারবেন গ্রাহকেরা।
অনুষ্ঠানে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, মোবাইল ফোন যারা আবিষ্কার করেছে সেই কোম্পানি মোটোরোলা বাংলাদেশে নতুনভাবে যাত্রা শুরু করল। এটা আমাদের জন্য খুবই ভালো সংবাদ। মোটোরোলা বাংলাদেশের মোবাইল ফোনের বাজারকে গুরুত্বসহকারে নিয়েছে।
রবির ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশজুড়ে ৭ হাজার ১ শ’টি ৪.৫জি নেটওয়ার্ক দিয়ে দেশের বৃহত্তম ৪.৫জি নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে রবি। এ প্রেক্ষিতে দেশে মোটোরোলার নতুন তিনটি হ্যান্ডসেট উদ্বোধনের ক্ষেত্রে তাদের সহযোগী হতে পেরে আমরা আনন্দিত।
স্মার্ট টেকনোলজিস বিডি লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম বলেন, স্মার্ট টেকনোলিজসের হাত ধরে মোটোরোলা বাংলাদেশে নতুন যাত্রা শুরু করল। এ যাত্রায় আমরা সঙ্গী হিসেবে পেয়েছি রবিকে। মোটোরোলাকে আর রবিকে নিয়ে আমরা আমাদের সফলতার ধারা অব্যাহত রাখতে চাই।  
পরোয়ানা ছাড়া নাগরিকদের গ্রেফতার করা হচ্ছে : সুলতানা কামাল
ষ নিজস্ব প্রতিবেদক
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল বলেছেন, আমরা আজকে উদ্বিগ্ন এই কারণে যে, যারা মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের নাম করে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছেন তারা সে দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না। আমাদের আরও বড় করে উদ্বেগটা প্রকাশ করতে হবে। তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের মতো একটি পবিত্র বিষয়কে পুঁজি করে, আমাদের সঙ্গে এই আচরণ তারা করতে পারেন না।’ তিনি প্রশ্ন করেন, আমরা কোথায় এসে দাঁড়িয়েছি? যখন তখন পরোয়ানা ছাড়া নাগরিকদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।
গতকাল রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে রাষ্ট্র-নাগরিক সম্পর্ক: দায়দায়িত্ব শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে উদ্বিগ্ন নাগরিক সমাজের ব্যানারে গোলটেবিল বৈঠকে সুলতানা কামাল এ কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, আমাদের বারবার মনে করিয়ে দিতে হবে তারা অঙ্গীকার করে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। আরেকটা বিষয় দেখতে পাচ্ছি যে শহিদুল আলমকে গ্রেফতার করার পর তার স্ত্রী এতেই সন্তুষ্ট যে তিনি কারাগারে আছেন। অন্যদিকে সন্তানদের ধরে নিয়ে আটকে রাখা হলো। অনেক দিন ধরে তাদের কোনও খবর নেই। অমানবিক, নিষ্ঠুর যন্ত্রণার মধ্যে অভিভাবকরা যখন দেখলেন ছেলেরা ডিবি অফিসে আছে, সেই অভিভাবকরা এতেই সন্তুষ্ট হয়ে বলছেন, তারা ডিবি অফিসে আছে, তাদের মেরে ফেলা হয়নি। একটা জাতি যখন শুধুমাত্র প্রাণে বেঁচে আছে, এটুকুতেই সন্তোষ প্রকাশ করে, সেই জাতির অবস্থান কোথায় গেছে? সেই জাতি কোথায় দাঁড়িয়েছে? এসব দেখলে আমার মুক্তিযুদ্ধের সময়ের কথা মনে পড়ে। সেই জায়গায় যদি মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি আমাদের নিয়ে যায়, তাহলে আমি তাদের ধিক্কার জানাই। মুক্তিযুদ্ধের মতো একটি পবিত্র বিষয়কে পুঁজি করে আমাদের সঙ্গে এই আচরণ তারা করতে পারেন না।
অধ্যাপক অজয় রায়ের সভাপতিত্বে মানবাধিকার কর্মী খুশি কবিরের সঞ্চালনায় এই নাগরিক সংলাপে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালযের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, শাহীন আনাম, হামিদা হোসেন, শহিদুল আলমের স্ত্রী ড. রেহনুমা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন, নারীপক্ষের শিরীন হক, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক ড. মেজবাহ কামাল, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার , শিক্ষাবার্তার সম্পাদক অধ্যাপক এ এন রাশেদাসহ বিভিন্ন পেশার বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, শহিদুলসহ সাম্প্রতিক সময়ে ৫৭ ধারায় যাদের আটক করা হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে তারা কেউ খুন, হানাহানি বা সংঘাতে অংশ নেননি। তারা শুধু সরকারের সমালোচনা করে লিখেছেন। সমালোচনার কোন মাফ নেই। অথচ খুনের আসামি রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে মাফ পেয়ে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ডিবির তুলে নিয়ে যাওয়া আরেক আতংকে পরিণত হয়েছে। যখন শহিদুলকে আদালতে হাজির করা হলো তখন আমরা হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম যে আর যাই হোক গুম হয়নি। সংবিধানের নানা ধারার কারণে সরকার এখন রাজার মতো ক্ষমতা ভোগ করছে। কোন প্রতিষ্ঠানই এখন আর কার্যকর না। দেশের বিদ্বৎসমাজের একটা বড় অংশের নীরব ও নিষ্ক্রিয় থাকাও এমন পরিস্থিতি তৈরি ও বজায় রাখতে ভূমিকা রাখছে।
শাহীন আনাম বলেন, গুজব ছড়ানোর অভিযোগে বিভিন্নজনকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। কিন্তু সত্যিকারের গুজবগুলো যারা ছড়িয়েছিল তাদের কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। সমাজে নাগরিকদের কথা বলার সকল জায়গাকে সংকুচিত ও দখল করা হয়েছে।
হামিদা হোসেন বলেন, পুলিশ হাইকোর্টের নির্দেশনা না মেনে কোন পরোয়ানা ছাড়া শহিদুলকে নিয়ে গেল। কেউ কিছু বলল না! রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠান ভেঙ্গে পড়েছে। শিরীন হক প্রশ্ন রাখেন, কতটা নিচে নামলে শহিদুল আলমের ডিভিশন বাতিলের আবেদন করা যায়?
শহিদুল আলমের স্ত্রী ড. রেহনুমা আহমেদ বলেন, আমাদের দেশে নাকি ইসরাইল থেকে থার্ড পার্টির মাধ্যমে সফটওয়্যার আমদানি করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে একটি সর্বগ্রাসী সার্ভিল্যান্স ব্যবস্থা চালু করা হবে।
গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার বলেন, আমাদের দেশে সাম্প্রতিক আইন এবং রাষ্ট্রের কার্যক্রম দেখে মনে হচ্ছে, রাষ্ট্র এবং নাগরিকবিরোধী একটা জিনিস তৈরি হয়ে গেছে।
অধ্যাপক ড. মেজবাহ কামাল বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার কথা বলছেন যারা, তারা চেতনাটিকে কতটুকু বুঝেছেন সেটা একটা প্রশ্নের বিষয়। যেখানে স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি নাই সেখানে কিসের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। রাষ্ট্রকে মানবিক হতে হবে, রাষ্ট্র দিন দিন ক্রমেই দানবে পরিণত হচ্ছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement