৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


১২৫ শতাংশ অন্তর্বর্তী লভ্যাংশ ঘোষণা জিপির

পুঁজিবাজার সূচকে মিশ্র প্রবণতা, লেনদেনের অবনতি

-

দুই দিন সূচকের টানা অবনতির পর ফের মিশ্র প্রবণতার শিকার হয়েছে পুঁজিবাজার। গতকাল সোমবার দেশের দুই পুঁজিবাজারেই সূচক ছিল মিশ্র। ঢাকা শেয়ারবাজারে প্রধান দু’টি সূচক নামমাত্র উন্নতি ধরে রাখলেও অবনতি হয় অন্যটির। অপর দিকে চট্টগ্রাম শেয়ারবাজারে প্রধান দু’টি সূচকের সামান্য অবনতি হলেও বিশেষায়িত দুই সূচকের নামমাত্র উন্নতি হয়।
সোমবার দুই পুঁজিবাজারই সূচকের উন্নতি দিয়ে দিন শুরু করলেও মাঝখানে বিক্রয়চাপে পড়ে। কিন্তু বিক্রয়চাপের পাশাপাশি ক্রয়াদেশও বজায় থাকায় লেনদেনের দুই ঘণ্টারও বেশি সূচকের উল্লেখযোগ্য উন্নতি ধরে রাখে বাজারগুলো। কিন্তু শেষ দিকে এসে বিক্রয়চাপের তীব্রতা বাড়লে সূচকের মিশ্র আচরণেই লেনদেন শেষ করে দুই পুঁজিবাজার।
প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গতকাল ৩ দশমিক ১৬ পয়েন্ট উন্নতি ধরে রাখে। ৫ হাজার ৩৩৬ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট থেকে যাত্রা করা সূচকটি প্রথম দিকে ৫ হাজার ৩৭৩ পয়েন্টে উঠলেও দিন শেষ করে ৫ হাজার ৩৩৯ পয়েন্টে। একই সময় ডিএসই-৩০ সূচক ২ দশমিক ০৮ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেলেও দশমিক ৫১ পয়েন্ট হারায় শরিয়াহ সূচক।
অপর দিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক ও সিএসসিএক্স সূচকের অবনতি হয় যথাক্রমে ৪ দশমিক ৯১ ও ৮ দশমিক ০২ পয়েন্ট। তবে সিএসই-৫০ ও সিএসই শরিয়াহ সূচক যথাক্রমে দশমিক ২৯ ও দশমিক ৩৮ পয়েন্ট উন্নতি ধরে রাখে।
সূচকের মতো দিনের শুরুতে পুঁজিবাজারগুলোতে লেনদেনের গতি থাকলেও বিক্রয়চাপে পড়ার পর গতি হারায়। দিনশেষে উভয় বাজারেই লেনদেনের অবনতি ঘটে। ডিএসই গতকাল ৮৭৩ কোটি টাকার লেনদেন নিষ্পত্তি করে, যা আগের দিন অপেক্ষা ৮২ কোটি টাকা কম। রোববার বাজারটির লেনদেন ছিল ৯৫৫ কোটি টাকা। সিএসইতে ৪৯ কোটি টাকা থেকে ৪৪ কোটিতে নামে লেনদেন।
এ দিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত টেলিকমিউনিকেশন খাতের বহুজাতিক কোম্পানি গ্রামীণফোন (জিপি) লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১২৫ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীন লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ৩০ জুন ২০১৮ সময়ের অর্ধবার্ষিকীর হিসাব পর্যালোচনা করে এ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। আগামী ৫ আগস্ট কোম্পানির রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে কোম্পানির দ্বিতীয় প্রান্তিকের (এপ্রিল-জুন ২০১৮) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জিপি। আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি আয় করেছে ৮ টাকা। আগের বছর একই সময় ছিল ৫ টাকা ৮৭ পয়সা। আর বছরের ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন ২০১৮) কোম্পানিটি আয় করেছে ১২ টাকা ৭৪ পয়সা। আগের বছর একই সময় ছিল ১০ টাকা ৭২ পয়সা। একই সময় কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি প্রকৃত সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ৩০ টাকা ৭৩ পয়সা। আগের বছর একই সময় সম্পদমূল্য ছিল ২৬ টাকা ৫৯ পয়সা।
গতকাল সূচকের উন্নতি দিয়েই দিন শুরু করে দুই পুঁজিবাজার। সূচকের মতো গতি ছিল লেনদেনেও। কিন্তু মাত্র আধ ঘণ্টায় এ গতি হারায় বাজারগুলো। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ডিএসইএক্স সূচকটি ৫ হাজার ৩৩৬ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট থেকে যাত্রা করে বেলা ১১টায় পৌঁছে যায় ৫ হাজার ৩৭৩ পয়েন্টে। সূচকের এ অবস্থান থেকেই শুরু হয় বিক্রয়চাপ। নিম্নমুখী হয়ে ওঠে বাজার সূচক। তবে একই সঙ্গে ক্রয়াদেশ কার্যকর থাকায় কিছুক্ষণের মধ্যে চাপ সামলে নেয় বাজারটি।
বেলা একটা পর্যন্ত ডিএসই সূচক ২২ পয়েন্টের মতো উন্নতি ধরে রাখে। এরপর নতুন করে চাপ শুরু হয়। দিনের শেষ দিকে সৃষ্টি হওয়া এ চাপ সামাল দিতে ব্যর্থ হওয়ায় দিনশেষে বৃদ্ধি পাওয়া সূচকের সামান্যই টিকে থাকে। দিনের শুরু ৩৬ পয়েন্টের বেশি উন্নতি ঘটা ডিএসইর প্রধান সূচকটি মাত্র ৩ দশমিক ১৬ পয়েন্ট উন্নতি ধরে রেখে লেনদেন শেষ করে।
গতকাল দুই পুঁজিবাজরের বেশির ভাগ খাতেই মিশ্র প্রবণতা দেখা যায়। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের কিছু কিছু কোম্পানি এ সময় আগের দিনগুলোর হারানোর দরের একটি অংশ ফিরে পায়। তবে বীমা ও মিউচুয়াল ফান্ড মূল্যবৃদ্ধির দিক থেকে বেশ এগিয়ে ছিল গতকাল। অন্যান্য খাতের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি ও পাট খাতেও দাম বাড়ে বেশির ভাগ কোম্পানির। ঢাকায় লেনদেন হওয়া ৩৪০টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১৪৪টির মূল্যবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারায় ১৩৯টি। অপরিবর্তিত ছিল ৫৭টির দর। অপর দিকে চট্টগ্রাম শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া ২৬১টি সিকিউরিটিজের মধ্যে ৯৫টির দাম বাড়ে, ১৪০টির কমে ও ২৬টির দাম অপরিবর্তিত থাকে।
ডিএসইতে গতকাল লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে কেডিএস এক্সেসরিজ। ৩৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকায় কোম্পানিটির ৩৫ লাখ ৭৪ হাজার শেয়ার হাতবদল হয় গতকাল। ৩০ কোটি ১৮ লাখ টাকায় ৪০ লাখ ৭৫ হাজার শেয়ার বেচাকেনা করে খুলনা পাওয়ার ছিল তালিকার দ্বিতীয় স্থানে। ডিএসইর লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানির অন্যগুলো ছিল যথাক্রমে গ্রামীণফোন, পেনিনসুলা চিটাগাং, বিবিএস ক্যাবলস, লিগেসি ফুটওয়্যার, ইউনাইটেড পাওয়ার, মুন্নু সিরামিকস, আরএসআরএম স্টিলস ও কনফিডেন্স সিমেন্ট।

 


আরো সংবাদ



premium cement