০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


শতভাগ বিদ্যুতায়িত ঘোষণার

২ বছর পরও সীতাকুণ্ডের সহস্রাধিক পরিবার অন্ধকারে

-

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতায়িত উপজেলা ঘোষণা দেয়ার দুই বছর অতিবাহিত হলেও এখানো সহস্রাধিক পরিবার বিদ্যুবিহীন। ২০১৭ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সীতাকুণ্ডকে শতভাগ বিদ্যুতায়িত উপজেলা ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অথচ ঘোষণার দুই বছর পার হলেও ত্রিপুরাপাড়া ও মুরাদপুর ইউনিয়নের সহস্রাধিক পরিবারের কাছে এখনো বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি।
উপজেলার দক্ষিণ সোনাইছড়ি, ছোট দারোগাহাট, পৌরসদর, বাঁশবাড়িয়া, সুলতানামন্দির, ছোটকুমিরা, মধ্য সোনাইছড়ি, মদনাহাট এলাকায় বসবাসরত অন্তত ৮০০ পরিবার এবং মুরাদপুর ইউনিয়নের পশ্চিম মুরাদপুর গ্রামের দুই শতাধিক পরিবারে এখনো বিদ্যুতের আলো পৌঁছায়নি।
এ দিকে বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ বলছে, যে সব জায়গায় বিদ্যুৎ পৌঁছেনি সেখানে সংযোগ দেয়ার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। পাহাড়ি এলাকাগুলোতে গ্রাহক থেকেও সিস্টেম খরচ বেশি হওয়ায় সেখানে বিদ্যুৎ দেয়া সম্ভয় হয় না। এ ছাড়া ত্রিপুরাদের নিজস্ব কোনো ভূমি নেই। কিন্তু বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ার অন্যতম শর্ত ভূমির মালিকানা থাকতে হবে। ভূমি জটিলতায় হয়তো তারা বিদ্যুৎ পায়নি।
সরেজমিন দেখা যায়, মধ্য সোনাইছড়ি গ্রামে বিদ্যুৎ আছে এমন যায়গা থেকে অন্তত ২০০ মিটার দূরে ত্রিপুরাপাড়ার অবস্থান। সেখানে পরিবার রয়েছে ৬৫টি। গ্রামটি দুর্গম এলাকায় না হলেও বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি। সীতাকুণ্ড পৌরসদরের ত্রিপুরাপাড়া ছাড়া বাকি সব ত্রিপুরাপাড়া সমতলভূমির কাছাকাছি। এ ছাড়া পশ্চিম মুরাদ গ্রামের শুরু থেকে সোলেমান মেম্বারের বাড়ি পর্যন্ত বিদ্যুতের খুঁটি রয়েছে। এর পর থেকে অন্তত ২৫০ মিটার খুঁটি ছাড়াই বিভিন্ন গাছের সাথে ঝুঁকিপূর্ণভাবে তার বেঁধে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পর থেকে সাগর উপকূল পর্যন্ত অন্তত দুই শত পরিবার বিদ্যুৎহীন রয়েছে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ইতোমধ্যে গুলিয়াখালী সৈকতটি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। অথচ সূর্য অস্ত যেতে না যেতে ঘুটঘুটে অন্ধকার হয়ে পড়ে সৈকত এলাকা। ফলে ছিনতাইয়ের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তা ছাড়া সব ত্রিপুরাপাড়া পাহাড়ের ধারে হওয়ায় রাতে চলাফেরা করতে বেশ অসুবিধা হয়।
ফৌজদারহাট বিদ্যুৎ বিতরণ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ সানাউল্ল্যাহ বলেন, মধ্য সোনাইছড়ি ত্রিপুরাপাড়ার আবেদনটি চলমান প্রকল্পে পাঠানো হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে হয়তো সংযোগ দেয়া সম্ভব হবে। অন্য দু’টি পাড়ার লোকজন আবেদন করলে কর্মকর্তারা পাড়াগুলো সার্ভে করবেন। সুযোগ থাকলে দ্রুত সংযোগ দেয়া হবে।
বাড়বকুণ্ড বিদ্যুৎ বিতরণ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ ফিরোজ কবীর বলেন, সীতাকুণ্ডের সমতল ভূমিতে কোনো গ্রাম বিদ্যুৎবিহীন থাকার কথা নয়। কিভাবে এতগুলো পরিবার বিদ্যুতের আওতার বাইরে রয়েছে তা খতিয়া দেখা হবে। তিনি স্থানীয়দের পুনরায় দরখাস্ত আহ্বানের পরামর্শ দিয়ে বলেন, একটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। আবেদন পেলে দ্রুত ওই গ্রামে বিদ্যুৎ দেয়া হবে। এ ছাড়া অন্য পাঁচটি ত্রিপুরা পাড়ায় বিদ্যুৎ দেয়া যাবে। তবে সংযোগ লাইন হবে ভূমির মালিকের নামে। ভূমির মালিক বিদ্যুতের আবেদন করলে তা যাচাই-বাছাই করে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement