২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নওগাঁয় মুখ থুবড়ে পড়ে আছে ‘ভ্রাম্যমাণ অ্যাম্বুলেন্স’

-

স্বাস্থ্যসেবা দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে নওগাঁয় ইউনিয়ন পর্যায়ে চালু করা হয়েছিল ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক ‘ভ্রাম্যমাণ অ্যাম্বুলেন্স’। যার সুবিধা ভোগ করতেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ। গ্রামের কাঁচা-পাকা মেঠো পথে সাইরেন বাজিয়ে ছুটে চলা সেই অ্যাম্বুলেন্সগুলো এখন অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বব্যাংকের অর্থসহায়তায় দ্বিতীয় লোকাল গভর্ন্যান্স সাপোর্ট প্রজেক্ট (এলজিএসপি-২) থেকে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে জেলার ১১টি উপজেলার ৯৯টি ইউনিয়নে ভ্রাম্যমাণ অ্যাম্বুলেন্স চালু করা হয়েছিল। দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা ব্যয়ে তৈরি করা অ্যাম্বুলেন্সের ছাদে ঘূর্ণায়মান লাল আলোর বিচ্ছুরণের জন্য লাগানো হয়েছিল সাইরেন হর্ন। আর ভেতরে ছিল দুই সিটের গদিআঁটা আসনে সাহায্যকারী ও প্রসূতি শুয়ে-বসে থাকার সুব্যবস্থা করে সৌন্দর্য দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে রূপ দেয়া হয়। ২৪ ঘণ্টা স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত অ্যাম্বুলেন্সের গায়ে জরুরি প্রয়োজনে ফোন নম্বর দেয়া হয়। ছাদে ঘূর্ণয়মান লাল আলোর বিচ্ছুরণ ঘটিয়ে সাইরেন বাজিয়ে গ্রামের কাঁচা-পাকা মেঠো পথে ছুটে চলত সেই অ্যাম্বুলেন্স। দিন-রাত যেকোনো সময় কল করে ঠিকানা জানিয়ে দিলেই বাড়ির দোরগোড়ায় গিয়ে হাজির হতো অ্যাম্বুলেন্সটি।
অ্যাম্বুলেন্সটি দেখভালের জন্য অনেকটা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছিল সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদের। বেতনভুক্ত নির্দিষ্ট কোনো চালক না থাকায় কখনো গ্রাম পুলিশ আবার কখনো স্থানীয়দের দিয়ে পরিচালনা করা হতো। অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিকে সহজেই রোগী আনানেয়া করা যেত। কিন্তু সেই অ্যাম্বুলেন্সগুলো এখন মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। ব্যাটারি না থাকায় এ অ্যাম্বুলেন্সটি দীর্ঘদিন থেকে খোলা আকাশের নিচে রোদ-বৃষ্টিতে পড়ে থেকে মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সচেতনদের দাবি অ্যাম্বুলেন্সগুলো পুনরায় চালু করা হোক।
তিলকপুর ইউনিয়নের অ্যাম্বুলেন্স চালক শাহিন বলেন, আমার আগে ওই অ্যাম্বুলেন্স কয়েকজন চালিয়েছিলেন। পরে আমি এক বছরে প্রায় ২০০-২৫০ জন রোগীকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। ভাড়া নিয়ে কোনো দরদাম করতাম না। যে টাকা পাওয়া যেত তা দিয়ে চলা সম্ভব ছিল না। এ ছাড়া নিজেও কিছু টাকা খরচ করে মেরামত করেছিলাম। প্রায় ৯ মাস থেকে ব্যাটারির অভাবে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। এলাকাবাসী সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
সদর উপজেলার তিলকপুর ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বলেন, প্রথম দিকে ভালোই চলছিল। ইঞ্জিন চালিত (ডিজেল বা গ্যাস) হলে ভালো চলত এবং জনগণ উপকৃত হতো। ৪৪ হাজার টাকা দিয়ে একবার ব্যাটারি পরিবর্তন করা হয়েছিল। বছর খানেক পর নষ্ট হয়ে গেছে। এখন মরিচা ধরেছে। ইউনিয়নে কোনো ফান্ড না থাকায় ব্যাটারি পরিবর্তন করা সম্ভব হচ্ছে না। রোগী ছাড়া কেউ উঠতেও চায় না। শ্রম দিয়ে দিনে যদি কোনো রোগী না পাই তাহলে তো তার পেট চলবে না।
বদলগাছী উপজেলার আধাইপুর ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন চৌধূরী বলেন, অ্যাম্বুলেন্সটি দিয়ে তেমন সুফল নিয়ে আসতে পারেনি। রোগীরা চায় দ্রুত যোগাযোগব্যবস্থা। আর এটা ব্যাটারির সাহায্যে চলে ধীর গতিতে। এ ছাড়া চালক সঙ্কট। ৩৫ হাজার টাকা দিয়ে একবার মেরামত করা হয়েছিল। বছরখানেক চলার পর আবার নষ্ট। গত আট মাস থেকে এখন পর্যন্ত পড়ে আছে।
নওগাঁ স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক গোলাম মো: শাহনেওয়াজ বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে দূরবর্তী বা প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের হাসপাতালে আনানেয়ার সুবিধার জন্য এমন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল। সামনে একটা মিটিং আছে। যেখানে উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা আসবেন। সেখানে অ্যাম্বুলেন্সের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
কুষ্টিয়াতে মসজিদ কমিটি নিয়ে সংঘর্ষে আহত ৫ চেয়ারম্যান তপন ও অজিত মেম্বারকে ধরিয়ে দিতে পারলে পুরস্কার ঘোষণা নারায়ণগঞ্জে ২৪ ঘণ্টায় ১৪ ডাকাত সদস্য গ্রেফতার রাজশাহীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি ছাড়াল যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশী শ্রমিকদের ভিসা সহজ করার আহ্বান প্রবাসী প্রতিমন্ত্রীর চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী না হয়ে অংশীদার হওয়া উচিত : শি জিনপিং ওকাব সভাপতি নজরুল ইসলাম, সম্পাদক জুলহাস আলম পাবনায় ১০ কোটি টাকার অনিয়মে ৩ ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে চুয়েট ১১ মে পর্যন্ত বন্ধ, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত নরসিংদীতে হিট স্ট্রোকে শিশুর মৃত্যু হিলিতে ভটভটি-মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ২

সকল