২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মুখে ভর দিয়ে পিইসি পরীক্ষা দিচ্ছে লিতুন

-

দুই হাত-পা ছাড়াই জন্ম নেয়া লিতুন জিরা মুখে ভর দিয়ে লিখেই এবার পিইসি পরীক্ষা দিচ্ছে। লিতুন জিরা যশোরের মণিরামপুর উপজেলার শেকপাড়া খানপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে। সে এবার উপজেলার খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিইসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।
পরনির্ভর হয়ে সমাজের বোঝা হতে চায় না লিতুন। লেখাপড়া শিখে মানুষের মতো মানুষ হয়ে আরো ১০ জন মানুষের মতো আত্মনির্ভশীল হতে চায় সে। মুখ দিয়ে লিখেই মেধার স্বাক্ষর রাখছে এই শিক্ষার্থী। কয়েক দিন আগে প্রিয় দাদু ভাই মারা যাওয়ায় মনে কষ্ট নিয়েই পরীক্ষা দিচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, লেখাপড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহী লিতুন প্রখর মেধাবী। হুইল চেয়ারেই বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করে। বর্তমানে হুইল চেয়ারটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তা চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়ে। তার বাবা উপজেলার এ আর মহিলা কলেজের প্রভাষক। তিনি গত ১৭ বছর ধরে ওই কলেজে চাকরি করলেও আজো কলেজটির এমপিও হয়নি। তার বাবাই সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার উপর বেতন না হওয়ায় হুইল চেয়ার কেনার জন্য বাবাকে বলতে পারছে না লিতুন। বছর সাতেক আগে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে হুইল চেয়ারটি দেয়া হয়। বর্তমানে তার একটি হুইল চেয়ার খুব দরকার।
লিতুন জিরার বাবা হাবিবুর রহমান ও মা জাহানারা বেগম জানান, জন্মের পর মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা চিন্তা তাদের পেয়ে বসত। এখন মেয়ের মেধা তাদের মনে আশার সঞ্চার করেছে। লিতুন জিরা আর ১০ জন শিশুর মতো স্বাভাবিকভাবেই খাওয়া-দাওয়া, গোসল সবকিছুই করতে পারে। মুখ দিয়েই লিখে সে। তার চমৎকার হাতের লেখা যে কারো দৃষ্টি কাড়বে।
লিতুন জিরার প্রধান শিক্ষক সাজেদা খাতুন বলেন,‘২৯ বছর শিক্ষকতা জীবনে লিতুন জিরার মতো মেধাবী শিক্ষার্থীর দেখা পাইনি। এক কথায় সে অসম্ভব মেধাবী। শুধু লেখাপড়ায় না, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও সে অন্যদের থেকে অনেক ভালো। সে মডেল টেস্টেও কেন্দ্রে প্রথম হয়েছে।’


আরো সংবাদ



premium cement