২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`
নয়া দিগন্তে সংবাদ প্রকাশ

বয়স্ক ভাতা পেলেন তেঁতুলিয়ার ভিখারিনী আলেহা

-

‘৭৫ বছর বয়সেও বয়স্ক ভাতার কার্ড পাননি তেঁতুলিয়ার ভিখারিনী আলেহা’ গত ২৭ এপ্রিল নয়া দিগন্তে সংবাদ প্রকাশের পর বয়স্ক ভাতার কার্ড ও প্রথম কিস্তির টাকা পেলেন আলেহা। তিনি ২ নম্বর তিরনইহাট ইউনিয়নের রওশনপুর গ্রামের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর শালবাহান বাজারে পল্লী চিকিৎসক আশরাফুল আলমের দোকানে দেখা হলে তিনি হাসিমুখে তার ভাতার কার্ড ও প্রথম কিস্তির ৬ হাজার টাকা পাওয়ার কথা জানান আলেহা। এর আগে ২০ এপ্রিল এখানে শরীরের ব্যথার চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন তিনি। তখন এই প্রতিবেদকের আলাপচারিতায় তিনি জানিয়েছিলেন তার সংগ্রামী জীবনের কথা। ‘আর কত বয়স হলে বয়স্ক ভাতা পাম। মোক একখান বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দাও।’ ৭৫ বছর বয়সী আলেহার এই আকুতি নয়া দিগন্ত পত্রিকায় ফলাও করে প্রকাশিত হয়। সংবাদটি তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বর্তমান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) দিনাজপুর সানিউল ফেরদৌসের দৃষ্টিগোচর হয়। তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমার হাতের সব সুযোগ শেষ। তার পরও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে বলেছি বয়স্ক ভাতার তালিকায় ওই বৃদ্ধার নাম দেয়ার জন্য।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার এমন উদ্যোগের পরিপ্রেক্ষিতে বয়স্ক ভাতার কার্ড ও ভাতা পেয়ে ভিখারিনী আলেহা খুব সন্তুষ্ট।
আলেহা বলেন, ‘তুই ছবি তুলে ছাপার পর মুই বস্কয় ভাতার কার্ডের প্রথমবার টাকা ৬ হাজার পাইছু। ওইঠে তুকে ১ হাজার টাকা মেম্বারক দিছু।’ কেনো টাকা দিলেন জানতে চাইলে আলেহা বলেন, ‘মেম্বারটা কহচে অন্যজনক কার্ড করে দিলে ২ হাজার টাকা দিলেহ; তুই মোক ১ হাজার টাকা দে। এ তানে টাকা দিছু।’ একই সাথে প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি ঘরের দাবিও করেন তিনি।
অনুসন্ধানে জানা যায় তেঁতুলিয়া উপজেলার বয়স্ক ভাতা ও বিধবা ভাতার কার্ডধারী উপকারভোগীদের কাছে কোনো কোনো ইউপি মেম্বার ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেন। কিন্তু কার্ড বাতিলের ভয়ে কোনো উপকারভোগী এ কথা প্রকাশ করেন না। সচেতন মহল ও ভুক্তভোগীরা এ বিষয়ে গোপনে তদন্তসাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট ইউপির ওয়ার্ড মেম্বারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন।
তবে স্থানীয় ইউপির ওয়ার্ড মেম্বার এই প্রতিবেদকের কাছে মুঠোফোনে টাকা নেবার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি ১৩ জনকে কার্ড করে দিয়েছি। তাদের মধ্যে তিন-চারজন আমাকে খুশি করে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা চা খাওয়ার জন্য দিয়েছেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement