৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


আদমদীঘিতে সিন্ডিকেটের কবলে কোরবানির চামড়া এতিম ও মিসকিনদের হক লুটে নিয়েছে মধ্যস্বত্বভোগীরা

-

বগুড়ার আদমদীঘিতে একশ্রেণীর মুনাফালোভী চামড়া ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে এলাকার মসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের পানির দামে কোরবানির পশুর চামড়া কিনতে দেখা গেছে। আবার অনেকে চামড়ার ন্যায্য দাম না পেয়ে মাটিতে পুঁতে ফেলেছে এমন অভিযোগও রয়েছে। এলাকার ক্ষুদ্র চামড়া ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন গ্রাম থেকে কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করে তা শহরের বড় বড় আড়তদারের কাছে বিক্রি করতে গিয়ে কেনা দাম না পাওয়ায় হতাশ হয়েছেন। আবার অনেক ব্যবসায়ী আশায় বুক বেঁধে কাঁচা চামড়া লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করে রেখেছেন ভালো দাম পাওয়ার আশায়। এলাকার মুনাফালোভী মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ীদের কারণে এবার চামড়া থেকে প্রাপ্ত অর্থের ভাগীদার হতদরিদ্র মানুষ, এতিম ও মিসকিনরা সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত হয়েছেন।
প্রতি বছর চামড়ার মোট চাহিদার বেশির ভাগের জোগান আসে কোরবানির ঈদে। একই সাথে দেশের হতদরিদ্র মানুষ, এতিম ও মিসকিনদের সারা বছরের অর্থের জোগানও আসে দান করা কোরবানির চামড়া থেকে। বিপুল মাদরাসাছাত্র কোরবানির চামড়ার টাকায় সারা বছর বিনা খরচে লেখাপড়া করে থাকে; কিন্তু সিন্ডিকেটের কারণে এসব মাদরাসাছাত্র, এতিম ও মিসকিনরা ন্যায্য হক থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
এ দিকে কোরবানির ঈদের দিন ঘুরে ঘুরে কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করে ভালো দাম না পেয়ে বিপাকে পড়েন মওসুমি ক্ষুদ্র চামড়া ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, গতবারের মতো এবারো চামড়া কিনে মাথায় হাত পড়েছে তাদের। যে দরে কিনেছেন, সেই দরেও বিক্রি করতে পারছেন না। এ পরিস্থিতির জন্য ট্যানারি মালিকদের দুষছেন ক্ষুদ্র চামড়া ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা। মূলত তারাই এবার সিন্ডিকেট করে চামড়া কিনবেন বলে দাম কমিয়ে দিয়েছেন। চামড়া ব্যবসায়ীরা আরো বলেন, লবণের মূল্যবৃদ্ধির কারণে প্রতি পিস চামড়ায় তাদের দ্বিগুণ ব্যয় বেড়েছে। তাই ব্যবসায়ীরাও চামড়া কিনে ভবিষ্যতে কতটা লাভের মুখ দেখবেন এ নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।
জানা গেছে, এবার সরকারিভাবে প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ষাঁড় গরু ৩৫ থেকে ৪০ টাকা ও খাসি ১৮ থেকে ২০ টাকা; কিন্তু সরকারের এই বেঁধে দেয়া দামে কেউ কাঁচা চামড়া কেনেনি। এলাকার ক্ষুদ্র মওসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের যে যার মতো করে চামড়া কিনতে দেখা গেছে। প্রতিটি ষাঁড় গরুর চামড়া ২০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা, প্রতিটি গাভীর চামড়া ১০০ থেকে ২০০ টাকা ও প্রতিটি খাসির চামড়া ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকায় কিনেছেন মওসুমি ক্ষুদ্র চামড়া ব্যবসায়ীরা। আবার অনেকে চামড়া ফেরত নিয়ে মাটিতে পুঁতে ফেলেছেন।
প্রতি বছর চামড়ার ব্যবসা করে থাকেন উপজেলার জিনইর গ্রামের বেলাল হোসেন। কমবেশি লাভ হওয়ায় এবারো তিনি প্রচুর পরিমাণে কাঁচা চামড়া কিনেছেন। ঈদের সারা দিন উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে এবং বিকেলে উপজেলা সদরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ক্ষুদ্র চামড়া ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চামড়া কিনেছেন; কিন্তু বিক্রি করতে গিয়ে তিনি দেখেন প্রতিটি চামড়ায় গড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা লোকসান গুনতে হবে। তাই তিনি বাধ্য হয়ে চামড়ায় লবণ দিয়ে সংরক্ষণের চেষ্টা করছেন বলে জানান।
উপজেলা সদরের গোশত ও চামড়া ব্যবসায়ী বেলাল হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, এবার চামড়ার বাজারের খুব খারাপ অবস্থা। তাই তিনি অনেক চিন্তাভাবনা করে কিছু চামড়া সংগ্রহ করেছেন। তিনি জানান, ষাঁড় গরুর চামড়া ২০০ থেকে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকায় কেনা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, কারণে-অকারণে আমাদের মত চামড়া ব্যবসায়ী ও মওসুমি ক্ষুদ্র চামড়া ব্যবসায়ীদের দোষ দেয়া হয়; কিন্তু সরকারিভাবে কেউ আমাদের পৃষ্ঠপোষকতা করে না। কোরবানির ঈদে যদি মওসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা চামড়া না কেনেন তাহলে ট্যানারি মালিক, আড়তদাররা এত চামড়া সংগ্রহ করবেন কিভাবে? তাই সরকার নির্ধারিত মূল্যে চামড়া ক্রয় ও বিক্রয় করতে পারলে ক্রেতা-বিক্রেতারা যেমন উপকৃত হবেন তেমনি এলাকার হতদরিদ্র এতিম ও মিসকিনরাও লাভবান হবেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement
দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ : পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেকর্ড বিদ্যুৎ উৎপাদন, তারপরও লোডশেডিং বড় চমক ছাড়াই প্রস্তুত বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দল দোয়ারাবাজারে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ করে হত্যা, আটক ১ বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের বাধাহীন প্রবেশের দাবি সম্পাদক পরিষদ ও নোয়াবের পেকুয়া উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন বিএনপির ২ প্রার্থী নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন ১৮৫ দিন : শিক্ষামন্ত্রী মঙ্গলবার ২ হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং, দুর্ভোগে মানুষ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা বাড়ল জ্বালানি তেলের দাম, কার্যকর বুধবার বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

সকল