২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইউএনওর মোবাইল নম্বর ক্লোন চৌগাছায় মাদরাসা সুপার থেকে ৭৮ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারকচক্র

-

যশোরের চৌগাছার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাহিদুল ইসলামের মোবাইল নম্বর ক্লোন করে বিভিন্ন ব্যক্তির সাথে প্রতারণা করে ৭৮ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র। প্রতারকরা ০১৭৮৫৪২৮৬২২ নম্বর থেকে এক মাদরাসার সুপারের কাছে কল করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পরিচয় দিয়ে প্রতিষ্ঠানে ল্যাপটপ দেয়া হবে বলে ৭৮ হাজার ৫৪০ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
উপজেলার দুর্গাপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার মাওলানা রবিউল ইসলাম জানান, চৌগাছা কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ আব্দুল লতিফ (তার চাচা) তার মোবাইলে কল করে ০১৭৮৫৪২৮৬২২ নম্বরটি দিয়ে বলেন, ‘এটি চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুল ইসলামের নম্বর। তিনি কথা বলতে চান।’ এরপর তিনি (রবিউল ইসলাম) ওই নম্বরটিতে কল করার সাথে সাথে অপর প্রান্ত থেকে বলা হয়, ‘আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুল ইসলাম বলছি। আপনার প্রতিষ্ঠানে ১১টি ল্যাপটপ দেয়া হবে। আপনি প্রতিটি ল্যাপটপের জন্য সাত হাজার করে টাকা এ নম্বরে বিকাশ করুন।’ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুল ইসলামের কথা বলায় তিনি দেরি না করে সলুয়া বাজারে গিয়ে একটি বিকাশের ঘর থেকে সাত হাজার ১৪০ টাকা বিকাশ করেন। পরে আবারো একই নম্বর থেকে কল করে বলা হয়, ‘আপনি দেরি করছেন কেন? বাকি ১০টার টাকা দেন।’ পরে তিনি চৌগাছা বাজারের হাসিব ইলেকট্রিক থেকে ৭১ হাজার ৪০০ টাকা বিকাশ করেন।
জানা যায়, গত ১১ জুন চৌগাছার বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঝিকরগাছা উপজেলা থেকে চৌগাছায় যোগদান করেন। গত শনিবার থেকে তার মোবাইল নম্বর (০১৭৮৫৪২৮৬২২) ক্লোন করে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের কাছে ফোন করা হয়। ফোন করে বলা হয়, ‘আমি ইউএনও জাহিদুল ইসলাম বলছি, আপনার প্রতিষ্ঠানে একটি ল্যাপটপ দেয়া হবে। আপনি ০১৮২২৭৩৭৯৩৩ নম্বরে দ্রুত সাত হাজার টাকা পাঠিয়ে দিন।’ এভাবে কারো কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা, কারো কাছ থেকে ছয় হাজার টাকা দাবি করা হচ্ছিল। বিষয়টি প্রতিষ্ঠান প্রধানরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানালে তিনি তাদের কাউকে এ ধরনের প্রতারণার ফাঁদে না পড়ার আহ্বান জানান।
এদিকে ঘটনাটির সত্যতা যাচাই করতে ইউএনওর সিএ মহিউদ্দিন নিজে ০১৭৮৫৪২৮৬২২ নম্বরে ফোন দিয়ে একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক পরিচয় দিয়ে ল্যাপটপ চাইলে তাকেও ০১৮২২৭৩৭৯৩৩ নম্বরটিতে দ্রুত সাত হাজার টাকা পাঠিয়ে দিতে বলা হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুল ইসলাম বলেন, একটি চক্র আমার নাম বলে তাদের মোবাইল নম্বর থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের কাছে টাকা দাবি করেছে। আমি তাদের সতর্ক করেছি এমন প্রতারণার ফাঁদে না পড়তে। তবে সুপার কিভাবে যে প্রতারণার ফাঁদে পা দিলেন বুঝলাম না। সোমবার আমি ওই সুপারকে বিকাশে ব্যবহৃত নম্বরগুলো নিয়ে আমার অফিসে আসতে বলেছি। এ ব্যাপারে চৌগাছা থানার ওসি রিফাত খান রাজীবকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জানিয়েছি।
উল্লেখ্য এর আগেও সম্প্রতি চৌগাছা থেকে বদলি হয়ে যাওয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মারুফুল আলম চৌগাছায় যোগদানের পরপরই তার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর ক্লোন করে একটি চক্র এভাবে বিভিন্নজনের কাছ থেকে প্রতারণা করে অনেক টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল।

 


আরো সংবাদ



premium cement