২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

থমকে গেছে গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা ধানের দাম কম, চিতলমারীতে জমেনি ঈদের বাজার

চিতলমারীর ঋতু ক্লথ স্টোরে ক্রেতা না থাকায় অলস সময় বসে আছেন মালিক ও কর্মচারী : নয়া দিগন্ত -

প্রতি বছর ঈদুল ফিতর কেন্দ্র করে চাঙ্গা হয় গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা। এই আমেজ থেকে বাদ পড়ে না বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা। কিন্তু এ বছর ধানের দাম না থাকায় রমজান শেষ হতে চললেও জমেনি ঈদের বাজার। সাধারণ পরিবারগুলোতে নেই আনন্দ। বোরো মওসুমের শুরুতে চাষিরা বিভিন্ন ব্যাংক, এনজিওর ঋণ ও মহাজনদের কাছ থেকে ধারকর্জ করে চাষাবাদ করেন। মওসুম শেষে ফসল বিক্রি তারা ধারকর্জ পরিশোধ করেন। কিন্তু এ বছর ধানের দাম কম থাকায় ও ফসলের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় খরচের টাকাও ঘরে তুলতে চাষিকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ফলে এলাকার চাষিদের মধ্যে নেমে এসেছে চরম হতাশা। এ বছর ধানের বাম্পার ফলন হলেও ফসলের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় চাষিদের ঈদের বাজারে নেই আগ্রহ। উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণীর পেশার মানুষ এসব তথ্য জানিয়েছেন।
কুরমনি গ্রামের কৃষক রেজাউল দাড়িয়া, আব্দুল মোমিন শেখ, ডুমুরিয়ার কাকন সর্দার, চৌদ্দহাজী গ্রামের আক্কেল আলী তালুকদার, পাটরপাড়া গ্রামের মুজিবর বিশ্বাস ও শ্যামপাড়া গ্রামের কালাম কাজীসহ অনেক চাষি চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, বর্তমানে প্রতি মণ ধান সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ঈদের বাজারের জন্য কয়েক মণ ধান বিক্রি করলেও তা দিয়ে তেমন কিছু কেনা যায় না। তাই পরিবারের সদস্যদের জন্য এখনো তারা নতুন কাপড় কেনেননি।
চিতলমারী গার্মেন্ট ব্যবসায়ী অরূপ সাহা, মফিজ মোল্লা, শংকর কর্মকার, কাপড় ব্যবসায়ী টিটন সাহা, কমলেশ সাহা, সিট কাপড় ব্যবসায়ী দিপক সাহা, সনজিত হাজরাসহ ব্যবসায়ীরা জানান, পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে তারা দেশী-বিদেশী পোশাকের পসরা সাজিয়ে বসে থাকলেও ক্রেতার দেখা মিলছে না। প্রতি বছর এমন সময় জমজমাট কেনাকাটা হলেও এ বছর ঈদের বাজার মোটেই জমেনি।
এ ব্যাপারে শেরে বাংলা ডিগ্রি কলেজে হিসাববিজ্ঞানের প্রভাষক প্রদীপ মণ্ডল জানান, বিগত বছরগুলোতে ঈদকে সামনে রেখে গ্রামীণ অর্থনীতি চাকা চাঙ্গা থাকলেও এ বছর কৃষি প্রধান চিতলমারীতে চাষিরা ফলসের দাম কম পাওয়ায় ঈদের বাজারে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
তবে চিতলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋতুরাজ সরকার জানান, এ বছর উপজেলার সাত ইউনিয়নের ২১টি ব্লকে ২৯ হাজার ৮১৫ একর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় ও কোনো ধরনের রোগবালাই না হওয়ায় এবার প্রায় ৯০ হাজার টন ধান উৎপাদন হয়েছে। এ উপজেলায় ৩০ হাজার কৃষক ধান চাষ করেছেন। উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য দাম পেলে তাদের কোনো অভাব-অনটন থাকার কথা নয়।


আরো সংবাদ



premium cement