২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

  সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সঙ্কট

  সেবা পাচ্ছে না রোগীরা
-

মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, নার্সিং সুপারভাইজার ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে প্রয়োজনীয় জনবল নেই। স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের রয়েছে নানা অভিযোগ।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপনের নিজ জেলা মানিকগঞ্জের সিংগাইরে চিকিৎসাসেবার এ হাল স্থানীয়দের ভাবিয়ে তুলেছে। উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে এ এলাকায় তিন লক্ষাধিক মানুষের বাস। উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আউটডোর ও জরুরি বিভাগে প্রতিদিন তিন শতাধিক রোগী এলেও চাহিদানুযায়ী চিকিৎসাসেবা পান না তারা। জানা গেছে, চিকিৎসক, নার্সিং সুপারভাইজারসহ প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে মূলত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। আবার যারা কর্মরত আছেন তারাও ঠিকমতো কর্মস্থলে আসেন না এবং চিকিৎসাসেবা দেন না। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে জুনিয়র কনসালট্যান্ট চর্ম ও যৌন, ইএনটিসহ ১১ জন চিকিৎসক, নার্সিং সুপারভাইজার ২টি, সিনিয়র স্টাফ নার্স ৪টি, প্রধান সহকারী ১টি, ক্যাশিয়ার ১টি, স্টোরকিপার ১টি, স্বাস্থ্য পরিদর্শকের ৩টি পদসহ তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর ৩৬টি পদ শূন্য রয়েছে। রয়েছে সুপেয় বিশুদ্ধ পানির অভাব। রোগীদের দেয়া হচ্ছে নিম্নমানের খাবার। জেনারেটরের ব্যবস্থা না থাকায় এ দাবদাহে বিদ্যুৎহীন সময়ে অসহনীয় ও ভুতুড়ে পরিবেশের সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে সিজারিয়ান অপারেশনের সময় বিদ্যুৎ চলে গেলে ডাক্তার ও রোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। হাসপাতালের টয়লেট দুর্গন্ধ ও ব্যবহার অনুপযোগী। পুরো কমপ্লেক্সে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও দুর্বল।
২০১১ সালে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়। গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোর মধ্যে আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার, জুনিয়র কনসালট্যান্ট চর্ম ও যৌন, ইএনটি ও গাইনিসহ ১১টি পদে চিকিৎসক কাগজে-কলমে থাকলেও বাস্তবে নেই। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তারা জেলা ও রাজধানী পর্যায়ে ডেপুটেশনে কর্মরত আছেন। যারা আছেন তাদের মধ্যে একমাত্র জুনিয়র কনসালট্যান্ট (মেডিসিন) ডা: মো: শফিকুল্লাহ আকবর, জুনিয়র কনসালট্যান্ট (গাইনি) জাহানে ফেরদৌস বিনতে রহমান সপ্তাহে ৩-৪ দিনের বেশি অফিস করেন না। ইনডোর মেডিক্যাল অফিসার (আইএমও) ডা: ক্ষিতিশ চন্দ্র তালুকদারের বাড়ি এ উপজেলায় হওয়ায় জরুরি বিভাগে মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্টদের দায়িত্ব দিয়ে তিনি ঘুমিয়ে সময় কাটান। এ দিকে ডা: জাহানে ফেরদৌসের বিরুদ্ধে জনৈক নার্স খারাপ ব্যবহারের অভিযোগ এনে টিএইচএ বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে বলেও জানা গেছে।
অভিযোগে রয়েছে, সরকারি কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত আবাসিক ভবনে কোনো চিকিৎসক থাকেন না। অযতœ ও অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে সরকারি কোয়ার্টার। তাদের সবাই থাকেন রাজধানী ঢাকা বা সাভারে। তবে টিএইচএ ডা: সেকেন্দার আলী মোল্লাকে সময়মতো অফিস করার পাশাপাশি বহির্বিভাগের রোগী দেখে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে।
ডা: শফিকুল্লাহ আকবর, ডা: জাহানে ফেরদৌস ও ডা: ক্ষিতিশ চন্দ্র তালুকদারের সাথে যোগাযোগ করলে তারা যার যার অবস্থানে থেকে কর্মস্থলে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের কথা দাবি করেন।
সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: সেকেন্দার আলী মোল্লা বলেন, আরএমও পদ শূন্য থাকলেও হাসপাতালে যেসব ডাক্তার আছেন তাদের দিয়ে স্বাস্থ্যসেবা দেয়া যথেষ্ট সম্ভব হচ্ছে। ব্যক্তিগত অসুবিধার কারণে অনুমতি নিয়েই ডাক্তাররা দু-এক দিন অনুপস্থিত থাকেন।
এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা: আনোয়ারুল আমীন আখন্দ বলেন, হাসপাতালের জনবল সঙ্কটসহ অন্যান্য বিষয় আমি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।


আরো সংবাদ



premium cement