২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


নিউজিল্যান্ডের মসজিদে হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়েছে

- ছবি : সংগৃহীত

ক্রাইস্টচার্চে দুই মসজিদে অস্ত্রধারীর জঙ্গি হামলার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫০ হয়েছে। যদিও এখনো কর্তৃপক্ষ কোনো তালিকা প্রকাশ করেনি, তবে নিহতের স্বজনদের খবর জানানো হয়েছে।

রোববার সকালে নিউজিল্যান্ডের পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবারের ঐ হামলায় নিহতের সংখ্যা ৪৯ থেকে ৫০ হয়েছে।
দেশটির পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন যে, আল-নূর মসজিদে লাশগুলো সরিয়ে নেবার সময় বাড়তি লাশটি পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে এখানে ৪২টি লাশ পাওয়া গেছে। এছাড়া লিনউড মসজিদে আরো সাতজন এবং ক্রাইস্টচার্চ হাসপাতালে নেয়ার পর একজনের মারা যান।

এখনো ৩৬ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন, যাদের মধ্যে ২ থেকে ৪ বছর বয়সি শিশুরাও আছে।
কর্তৃপক্ষ এরইমধ্যে নিহতের তালিকা প্রস্তুত করেছে। তবে এখনো তা জনসম্মুখে প্রকাশ করেনি। নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডার্ন বলেছেন যে, রোববার স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তরের পর বুধবারের মধ্যে ময়নাতদন্ত শেষে বাকি সবকিছু ফেরত দেয়া হবে।

মুসলিম ঐতিহ্য অনুযায়ী, ২৪ ঘন্টার মধ্যে লাশ দাফনের নিয়ম রয়েছে। ক্রাইস্টচার্চের মেয়র লিয়ানে ডালজিয়েল বলেন যে, দাফনের জন্য জায়গা প্রস্তুত করা হয়েছে যেন দ্রুততম সময়ে লাশ কবর দেয়া যায়।

হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ব্রেন্টন ছাড়াও আরো কতজন জড়িত তা খুঁজে দেখা হচ্ছে বলে জানান পুলিশ কমিশনার বুশ।

তিনি বলেন, ‘‘কতজন এতে জড়িত ছিলেন সে বিষয়ে আমি এখনই কোনো সিদ্ধান্তে উপনীত হতে চাই ন। তবে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে কিছু একটা জানাতে পারব বলে আশা করি।''

তিনি বলেন যে, টেরান্ট একাই গুলি করেছে। আরো দু'জনকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হলেও তারা হত্যাকাণ্ডে অংশ নেননি। একজনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে এবং আরেকজনকে আগ্নেয়াস্ত্র রাখার মামলায় আটক দেখানো হয়েছে।

তৃতীয় আরো একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতার অভিযোগ আনা হবে বলে জানিয়েছেন বুশ।

এদিকে, শনিবার আহত ও নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা। এদের বেশিরভাগই সৌদি আরব, পাকিস্তান, ভারত, বাংলাদেশ, মালয়শিয়া, ইন্দোনেশিযা, তুরস্ক, সোমালিয়া ও আফগানিস্তানের শরণার্থী ও অভিবাসী।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় জানান যে, তুরস্ক, বাংলাদেশ ও মালয়শিয়ার দূতাবাস নিজ নিজ দেশের হতাহতদের পরিবার ও বেঁচে যাওয়াদের সহযোগিতা দিচ্ছে।

নিউজিল্যান্ডে ধর্ম পালনের স্বাধীনতা যেন অটুট থাকে তা নিশ্চিত করবেন বলে জানান জেসিন্ডা। তিনি আরো বলেন যে, সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে অস্ত্র আইনে পরিবর্তন আনার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন। বলেন যে, টেরান্ট নিজের নামে পাঁচটি বন্দুক কিনে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করেছেন।

‘‘আগ্নেয়াস্ত্র আইনে পরিবর্তন আনতেই হবে,'' বলেন তিনি।
নিউজিল্যান্ডের আড়াই লাখ মানুষের কাছে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স আছে এবং সামরিক ধরনের সেমি-অটোমেটিক বন্দুকগুলোই কেবল নিবন্ধন করতে হয়।

বিশ্লেষকরা বলেন, নিউজিল্যান্ডে প্রায় ১৫ লাখ আগ্নেয়াস্ত্র মানুষের কাছে রয়েছে। তবে সেগুলো ঠিক কোথায়, কার কাছে আছে, তার কোনো তথ্য নেই।


আরো সংবাদ



premium cement