০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`


‘নিসর্গের পাতা শূন্য’

চ্যাড’স উইল হিথ। - ছবি : সংগৃহীত

সূর্যের সাথে দিবারাত্রির সম্পর্ক। সূর্য যে দিকে অস্ত যায় বিমান সে দিকে গেলে সময় দীর্ঘ হয়। ১১ এপ্রিল ভোর ৭টার (বাংলাদেশ সময়) দিকে কোমরে সিটবেল্ট বাঁধার নির্দেশ থেকেই বুঝতে পারি আমরা এখন তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুল। ইস্তাম্বুলে তখনো বেশ রাত। ইস্তাম্বুল থেকে ১৯৭৯ নং বিমানে হিথ্রো। সংসার বিষয়ে উদাসীনতাসহ ভ্রমণ বিষয়েও ছিলাম পরনির্ভরশীল। ১৯৭৯ বিমানে ওঠার পূর্বক্ষণ পর্যন্তও ছিলাম আরফুমান চৌধুরীনির্ভর। আরফুমান চৌধুরী বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল ১৯৭৯ বিমানে ওঠার আগেই। হিথ্রো বন্দরের অনেক ধকল ও চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে লন্ডনের যে এলাকার প্রবেশ করি সে এলাকার নাম চ্যাড’স উইল হিথ (Chad's well Heath)। এখানে বড় মেয়ে হেনার বাসা। সময় দীর্ঘ হলো ৫ ঘণ্টা।

১২ এপ্রিল ভোরবেলা ঘুম ভাঙতেই চোখে পড়ে একজোড়া বিড়াল। ঘাড় বাঁকিয়ে তাকিয়ে রয়েছে নতুন অতিথির দিকে। রাতভর সবার খোঁজ-খবর নেয়া হলেও বিড়ালের খোঁজ নেয়া হয়নি। বিড়াল-কুকুর ইউরোপিয়ানদের পরিবারেরই সদস্য। কুকুর-বিড়ালের স্বর্গ বলে যদি কোনো স্থান থেকে থাকে তবে সে স্থানের নাম ইউরোপ। দেশে থাকাকালে ভিডিও কলের সময় মাঝে মাঝে বিড়ালটা চোখে পড়ত। চোখে পড়ত এদের থাকার ঘরও। মা বিড়ালটি যখন বাচ্চা দিয়েছিল তখন কী যত্ন! ছোট্ট একটি ঘর, ঠাণ্ডা থেকে রক্ষার জন্য ঘরের ভেতর তাপের ব্যবস্থা। চারতলাবিশিষ্ট এক জলটঙ্গি ঘরের দুই খোপে দু’টি শুয়েছিল। দুটি বিড়াল প্রায় একই রকম দেখতে হলেও একটা নাদুসনুদুস। জানতে চাই,
- বাচ্চাটা কোথায়?
- নাদুসনুদুস-টাই বাচ্চা, নাম ‘লিও’, মায়ের নাম ‘নালা’।
- জলটঙ্গি ঘরটা পেয়েছো কোথায়?
- এটা জলটঙ্গি নয়, এটার নাম ক্যাট ট্রি। কিনতে পাওয়া যায়। আরো বড়ও আছে। মা-ছেলে সারা দিন এই গাছে শুয়ে বসে আরাম করে। আমাদের ট্রি টা মাঝারি, মূল্য ৯০ পাউন্ড।
- (বিস্মিত হয়ে) নব্বই পাউন্ড! বিড়ালের আরাম করার গাছের দাম দশ হাজার টাকা!
- আব্বা কি যে বলেন, এ দেশে মানুষের চেয়েও বেশি কদর বিড়াল-কুকুরের। শুধু তাই নয়, প্রতিটি শপিং কমপ্লেক্সে বিড়াল-কুকুরের জন্য রয়েছে আলাদা তাক। এদের খেলনা, সরঞ্জাম, পরিচ্ছদসহ রয়েছে শত প্রকারের খাবার-দাবার। ব্রিটিশরা নিজের খাবার কেনার আগে পোষা প্রাণীর খাবার কিনে। মা-ছেলে (নালা-লিও)-এর পেছনে কত খরচ জানেন? বহন করার জন্য এই বাস্কেটটির দাম ১০ পাউন্ড, ক্যাট হাউজ মূল্য ২০ পাউন্ড, প্রতি মাসে ফুড Whiskas and Flakes মূল্য ১৫ পাউন্ড, চিকিৎসক Veterian per visi ৩০ থেকে ৪০ পাউন্ড, Litter box price varies, Cat litter ৩ মূল্য ৭ পাউন্ড ধারণক্ষমতা ১০ লিটার। এদের জন্য রয়েছে আলাদা টয়লেট। এরা ভুলেও টয়লেট ছাড়া টয়লেট করে না।

- ১৯২ পাউন্ড প্রায় ২৫ হাজার টাকা। আমি একটি হাউজিং কোম্পানির আইন উপদেষ্টা। আমার মাসিক ভাতাও ২৫ হাজার টাকা। ৫০ হাজার টাকা ছিল। করোনাকালে ২৫ হাজার করা হয়। সেই থেকেই ২৫ হাজার। একজন সিনিয়র আইনজীবীর এক মাসের ভাতার সমান তোমাদের বিড়ালজোড়ার। তুলনা করতেই মনে পড়ে, সুরসিক লেখক সৈয়দ মুজতবা আলীর ‘পাদটীকা’ গল্প। সৈয়দ মুজতবা আলী ‘পাদটীকা’ শিরোনামে ব্রিটিশ আমলের শিক্ষকদের বেতন প্রসঙ্গে একটি রম্যগল্প লিখেছিলেন। আসামের ইংরেজ লাট সাহেব তার তিন ঠ্যাঙওয়ালা কুকুর নিয়ে স্কুল পরিদর্শনে আসেন। স্কুলের পণ্ডিত মশাই সচরাচর পৈতা পরে খালি গায়ে ক্লাস করেন। পরিদর্শনের দিন অনেক কষ্টে গেঞ্জি পরায় অস্বস্তি বোধ করছিলেন। পণ্ডিত মশাইয়ের পরিবারে ‘ব্রাহ্মণী, বৃদ্ধ মাতা, তিন কন্যা, বিধবা পিসি, দাসীসহ আট সদস্য। মাসিক বেতন ২৫ টাকা। সে দিন সবার আলোচনার বিষয় ছিল লাট সাহেবের তিন ঠ্যাঙওয়ালা কুকুর।

জানতে পারেন, কুকুরটির মাসিক ব্যয় ৭৫ টাকা। লাট সাহেব চলে যাওয়ার পর পণ্ডিত মশাই শিক্ষার্থীদের এ মর্মে অঙ্ক কষতে দিয়েছিলেন, ‘তিন পাওয়ালা কুকুরের পেছনে লাট সাহেবের মাসিক ব্যয় ৭৫ টাকা। ব্রাহ্মণ পরিবারের আট সদস্য কুকুরের কয় পায়ের সমান?’ এলাকার নাম চ্যাড’স উইল হিথ St. Chad's Catholic Church-এর নাম অনুসারে হয়েছে। চ্যাড’স উইল হিথ ইস্ট লন্ডনের সুপরিচিত এলাকা। Chadwell Heath is an area in East London. It is situated on the boundary of the London Borough of Redbridge, around 2 miles west of Romford ২৪ হাজারের বেশি জনসংখ্যা অধ্যুষিত এলাকা; গুরুত্বপূর্ণ স্থানসহ কাছাকাছি দর্শনীয় স্থান সেন্ট চ্যাডস পার্ক, ফেয়ারলপ ওয়াটার কান্ট্রি পার্ক, সাউথ অ্যান্ড সি সমুদ্র সৈকত, হায়নাউল কান্ট্রি পার্ক (Hainaul Country park) এবং চ্যাফর্ড জর্জ ন্যাচার ডিসকভারি পার্ক (Chaffrd Gorges Nature Discovery park).

দিন দশেক লন্ডন থেকে ২১ এপ্রিল সুইডেন যাওয়ার জন্য টিকিট করা হয়ে গিয়েছিল। ছোট মেয়ে মণি থাকে সুইডেন। মণি তিন গুণ টাকা বাড়িয়ে দিয়ে টিকিটের তারিখ এগিয়ে এনেছে ১৭ এপ্রিল। আন্তর্জাতিক বিষয়ের মধ্যে বিমানের টিকিটের বাজার মাছের বাজারের চেয়েও খারাপ। আমি সুইডেনের ভ্যাক্সজো এলাকায় যাব। বিমানের নতুন বন্দর ভ্যাক্সজো। কয়েক বছর আগেও ট্রেনে ডেনমার্কের ওপর দিয়ে আসা-যাওয়া করতে হতো। ১৭ এপ্রিল থেকে ২৫ দিন সুইডেন, কোপেনহেগেন হয়ে ১২ মে ফ্রান্স। ফ্রান্স ঘুরে পুনরায় লন্ডন। ১৪ মে লন্ডন রিচমন্ড পার্ক। পরিশেষে ভিন্ন প্রদেশ ও শহর Shakespeare-এর জন্মস্থান Stratford-Upon-Avon-এ সারা দিন। ডিজিটাল পাঠকরা এত সময় লেখকের সাথে থাকতে পারবেন? পারবেন না। সুইডেন অবস্থানকালে অবশ্যই পাশে থাকবেন, কারণ আরব্য রজনীর মতো সুখী দেশের সুখের কাহিনী শুনতে শুনতে সুখী হয়ে উঠতে পারেন আপনিও।
বাসার পাশেই সেন্ট চ্যাড’স পার্ক। বাসা থেকে বের হয়ে দুই মিনিটেই পৌঁছে যাই St. Chad's Park-এ।

পার্কের প্রবেশধারেই তিনটি ফুল গাছ। চেরি ফুল। সাদা, খয়েরি ও হলুদ। তিনটি গাছই প্রকাণ্ড। খয়েরি ফুল ফুটতে শুরু করেছে। পেছনেই একই রকম গাছে সাদা চেরি। সাদা চেরি ফুটে শেষ দিকে। পাতা নেই। ফুলে ফুলে ঢেকে রয়েছে ডালপালা। ইউরোপ বসন্তের অগ্রদূত চেরি। গতকাল বিমানবন্দর থেকে আসার পথেই অসংখ্য চেরিগাছ চোখে পড়েছিল। ফেরিওয়ালাদের হাওয়াই মিঠাইর মতো গাছের ডালপালা ঢেকে রয়েছে দলা দলা ফুলে। গাছের তলায় তুলার মতো বিছিয়ে রয়েছে ফুল। মখমলের মতো কোমল ফুল মাড়িয়ে সামনে বাড়তেই দেখি, এক স্বর্ণকেশী। নীল কোট ও প্যান্ট পরিহিতা এক স্বর্ণকেশী লম্বা পা ফেলে হাঁটছে, সাথে কুকুর। কুকুরের গলায় ফিতা। ফিতার এক প্রান্ত মহিলার হাতে। মহিলার হাঁটার তালে হাঁটছে কুকুরটিও। পার্কের পাশে আরো একটি কুকুর। প্রকাণ্ড আকারের কুকুরটির মালিক হাতের বল ছুড়ে মারে দূরে। মাটিতে পড়ার সাথে সাথে, কখনো কখনো মাটিতে পড়ার আগেই বলটি মুখে তুলে নেয়। দৌড়ে নিয়ে আসে মালিকের কাছে। ইউরোপের আবালবৃদ্ধবনিতা সবার প্রিয় সাথী ও প্রধান বিনোদন কুকুর-বিড়াল।

একস্থানে পার্কের নামও St. Chad's Park `That Victorian style park is the oldest park in the borough and the first part of it dates from 1830. It covers 15 hectares (35 acres). ভিক্টোরিয়ান স্টাইলে তৈরি প্রায় ২০০ বছরের পুরনো পার্কের উত্তর-পূর্ব এবং দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে বেশ বড় দু’টি খেলার মাঠ। বড় এলাকাজুড়ে Woodland. Woodland এলাকা থেকে ভেসে আসছে নানা সুরের পাখির কূজন। মাঝে মাঝে সবুজ ঘাসের মাঠ, টেনিস কোর্ট, ক্রিকেট পিচ্ এবং বাস্কেট বল এরিয়া। পার্কে চারটি প্রবেশদ্বার। ফ্রি প্রবেশাধিকারসহ রয়েছে ফ্রি টেনিস খেলার ব্যবস্থাও। পার্কের ভেতরে চলাচল পথের দু’দিকের গাছ ছেঁটে উপরের অংশ সমতল করে রাখা হয়েছে। এখানে রয়েছে নতুন শিশুদের জন্য খেলার মাঠ এবং একটি গল্ফ কোর্স। ১৯৫৫ সালে যোগ করা হয়েছে একটি নতুন বোলিং গ্রিন। পার্কের পূর্বদিকে একটি উন্মুক্ত ব্যায়ামাগার।

এই পার্ক চ্যাড’স উইল হিথের তথা উত্তর লন্ডনের মধ্যে সর্ববৃহত্তম উন্মুক্ত বিনোদন স্পট। চ্যাডউইলস্থিত পার্কে শিশু-কিশোরদের বিভিন্ন রাইডসহ রয়েছে ব্যায়ামের সরঞ্জামও।

এক জায়গায় লেখা নির্দেশিকায় উল্লেখ রয়েছে, Cmmunity Edible Woodland, A tasty harvest for everyone, Woodland wildlife and spectacular stag beetles-এ বর্ণনার একাংশে উল্লেখ আছে, ‘Watch out of insects such as bees and butterflies. They help to pollinate many of the tree species planted here, ensuring our woodland is healthy and productive' আমাদের প্রকৃতি থেকে মৌমাছি, প্রজাপতি ইত্যাদি উপকারী পতঙ্গ হারিয়ে গেছে। Wildlife যার অর্থ বন্যজীবন। নাগরিক সভ্যতা মানুষকে অনেক কিছু দিয়েছে, আবার কেড়ে নিয়েছে অনেক কিছুই। এই দেয়া-নেয়ার হিসাবের খাতায় নিসর্গের পাতা শূন্য দেখে চমকে উঠছে মানুষ। চিৎকার করে বলছে, ‘দাও ফিরে সেই অরণ্য, লও এ নগর।’ নগর সভ্যতা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে মানুষ। মানুষ আবার ফিরে পেতে চায় সেই অরণ্য। তাই নগর জীবনের কোলাহলের মাঝেই বন্যজীবন বা wildlife কাটানোর জন্য এ দেশে রয়েছে অনেক Natural park।

কাছেই চ্যাডউইলস্থিত আন্ডার গ্রাউন্ড রেলওয়ে। Chadwell Heath Rail Station (zone 5). Fast and last services, timetables and route details. Station facilities Lines at this station. রেলস্টেশন থেকে বের হয়ে সামনের রোড ধরে বামদিকে মিনিট দশেক হাঁটলেই St. Chad's Park দক্ষিণ-পশ্চিম কোনে খেলার মাঠের পর ওয়েস্ট রোড। ওয়েস্ট রোড পার হয়ে আরো একটি পার্ক। নাম চ্যাডউইলহিথ পার্ক। ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে চ্যাডউইলহিথ পার্কে এসেছিলাম। এক জায়গায় টিলার ওপর কাশফুল ছাড়া আর কোনো ফুল ছোখে পড়েনি। বাংলাদেশের কাশফুল লন্ডনে শীতকালের ফুল। এই পার্ক ছাড়াও রাস্তায় চলতে গিয়েও রাস্তার মাঝের আইল্যান্ডসহ আশপাশেও কাশফুল ফুটে থাকতে দেখেছি। শীতে ঘুমিয়ে থাকা পার্ক জেগে উঠছে বসন্তের শুরুতে। নিভৃতে ও পথের পাশে মাঝে মাঝে বসার স্থান।

আমাকে এক এক জায়গায় বসতে দেখে হেনা,
- আব্বা, ঘরের পাশেই এই পার্ক। এখানে একা এলেও হারিয়ে যাওয়ার ভয় নেই। বাসায় বোর লাগলে এখানে চলে আসবেন। আমাকে এখনই যেতে হবে বাঙালি শপে। বাঙালি শপের বাঙাল কাঁচাবাজার ছাড়া আপনার চলে না।

কাছেই বাঙালি শপ। আমাকেসহ FOOD BAZAR নামে একটি SUPERSTORE-এ প্রবেশ করে। এখানে প্রতিটি সুপার মার্কেটে গাড়ি পার্কিংয়ের স্থানসহ প্রয়োজনীয় সব কিছু পাওয়া যায়। প্রতিটি দ্রব্যের মূল্য উল্লেখসহ ব্যবহারের সময়কালও উল্লেখ থাকে। ক্রেতা খুঁজে খুঁজে প্রার্থিত সবজি, ফল-মূল ও মাছ ঝুড়ি ভর্তি করে মূল্য পরিশোধের জন্য কাউন্টারে গিয়ে লাইন ধরে। এখানে সব ধরনের সব্জি সারা বছরই পাওয়া যায়। বাঙালি শপে বাংলাদেশের পদ্মা-মেঘনার মাছই বেশি। আমার কাছে দাম বেশি মনে হয়েছে সাদা মুলা প্রতিটি ১.২৫ পাউন্ড, কাঁঠালের কোষ প্রতি ৬টির প্যাকেট ২.৯৯ পাউন্ড, কাঁঠালের বীচি প্রতি কেজি ৯.৯৯ পাউন্ড, কচুরমুখি প্রতি কেজি ৫.৯৯ পাউন্ড, পটোল প্রতি কেজি ৬.৯৯ পাউন্ড। দাম কম মনে হয়েছে আপেল প্রতি কেজি ১ পাউন্ড, টমেটো প্রতি কেজি ১.৫০ পাইন্ড, আম প্রতি পিছ (বড়) ৮৯ পেন্স। মধুর মতো মিষ্টি সিঁদুরের মতো লাল প্রতি কেজি আপেল এক পাউন্ড আর কাঁঠাল বীচি প্রতি কেজি প্রায় ১০ পাউন্ড! আমরা ২০১৩ সালে লাগেজে করে আপেলও এনেছিলাম। আবার আসার সময় লাগেজ ভরে কাঁঠাল বিচি নিয়ে আসব, আসা-যাওয়ার খরচটা পুষিয়ে যাবে। রাতে খেতে বসে বাংলাদেশী শাক-সবজি দিয়ে রান্না করা মেঘনার বোয়াল মাছ মুখে দিয়েই মনে হলো, মায়ের হাতের রন্ধনশিল্প এখন মেয়ের হাতে। এই শৈল্পিক রান্নার স্বাদ ভুলতেই বসেছিলাম। ভাতের লোকমা মুখে তুলে,
চাচি বল, জেঠি বল, মায়ের মতো নয়,
অচেনা ফুড কখনো ভাতের মতো হয়?
জগৎ ঘুরে পাইনে গাঁ নিজ গাঁয়ের মতো
সাধন করে পাইবে মা নিজ মায়ের মতো।
বলার পর মুখ তুলে হেনার দিকে তাকাতেই দেখি, চোখের কোণে অশ্রু চিকচিক করছে। বাবার সামনে অশ্রু গোপন করতেই ওড়নায় মুখ ঢেকে চলে যায় কিচেনের দিকে।

লেখক : আইনজীবী ও কথাসাহিত্যিক
E-mail: adv.zainulabedin@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement