২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সাকিবকে ছুটি দিয়েই দিলো বিসিবি

-

অনেক নাটকীয়তা আর আলোচনা-সমালোচনার পর নিউজিল্যান্ড সফর থেকে ছুটি পেয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। আটকানো গেল না তাকে। তিনি চাইলেই যে হয়, সেটি আবারো প্রমাণিত। নিউজিল্যান্ড সফর থেকে ছুটি চেয়েছিলেন। অবশেষে সাকিবকে ছুটি দিয়েই দিলো বিসিবি।
রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে বাংলাদেশ মহিলা দলের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন পাপন। তবে পুরো বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা হওয়ায় খানিক অসন্তোষও দেখা গেছে বিসিবি সভাপতির কণ্ঠে। কোনো খেলোয়াড় ছুটি চাইলে তাতে বোর্ডের আপত্তি নেই তবে ছুটির বিষয়টি আগে জানাতে বলেছেন পাপন; যাতে বিকল্প খেলোয়াড় খুঁজতে পারে টিম ম্যানেজমেন্ট। নতুন বছর ছুটির বিষয়ে নতুন নিয়ম প্রবর্তনের ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, ‘আগামী জানুয়ারি থেকে নতুন নিয়মে কারো যদি বিশ্রাম-বিরতি লাগে তা হলে আগে থেকে জানাতে হবে। তা হলে অন্য কাউকে প্রস্তুত করা যাবে।’ তিনি যোগ করেন, ‘যার বিশ্রাম দরকার তাকে বিশ্রাম দিতেই হবে। গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হোক বা না হোক। সাকিবের বিষয়টি ভিন্ন। ও তো আর ইনজুরিতে না, বিশ্রামও চায়নি। ও বিরতি চেয়েছে, পারিবারিক কারণে। কাজেই জিনিসটি কিন্তু এক নয়।’
নিউজিল্যান্ড সফরে না যাওয়ার জন্য আগে থেকেই মৌখিকভাবে ছুটি চেয়েছিলেন সাকিব। কিন্তু লিখিতভাবে ছুটি চাননি বলে সাকিবকে রেখেই নিউজিল্যান্ড সফরের দল ঘোষণা করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। দল ঘোষণার এক ঘণ্টা পর অবশ্য লিখিতভাবে ছুটির আবেদন করেন সাকিব। এবার চোট কিংবা বিশ্রাম নয়, পারিবারিক কারণে সাকিব নিউজিল্যান্ড সফরে যেতে চান না।
সাকিবের জন্য অবশ্য বিষয়টি নতুন নয়। চোট ও বিশ্রামে টেস্ট ক্রিকেট যেন খেলাই হচ্ছে না সাকিবের। গত চার বছরের পরিসংখ্যান বলছে, সাদা জার্সিতে সাকিবকে দেখা যায় কালেভদ্রে। অনেকটা অতিথির মতো। ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়া সিরিজের পর সাকিব টেস্ট খেলেছেন মাত্র ৮টি। অথচ এ সময়ে বাংলাদেশ দল টেস্ট খেলেছে ২৬টি। ক্যারিয়ারের প্রথম ১০ বছরে সাকিব মিস করেছেন ৭টি টেস্ট ম্যাচ। শেষ পাঁচ বছর তিনি ১৬টি টেস্ট মিস করেন। দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি টেস্ট খেলেছেন মুশফিকুর রহীম (৭৭), তামিম ইকবাল (৬৪) ও সাকিব আল হাসান (৫৯)।
টেস্ট ক্রিকেট থেকে সাকিবের ছুটি নেয়ার শুরুটা হয় ২০১৭ সালের দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকে। সেবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে ছয় মাস ছুটি নিয়েছেন মানসিক ও শারীরিকভাবে চাঙ্গা হয়ে ক্রিকেটে ফেরার জন্য। চোট, আইসিসির নিষেধাজ্ঞায় এরপর বেশ কিছু টেস্ট ম্যাচ খেলা হয়নি সাকিবের।
এরপর এ বছরের মার্চে সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর পাশে থাকতে নিউজিল্যান্ড সফরে যাননি সাকিব। মার্চের সফরে অবশ্য টেস্ট ম্যাচ ছিল না। বাংলাদেশ গত মার্চে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-২০ খেলেছে। এরপর মে মাসে শ্রীলঙ্কা সফরে যাননি সাকিব। টি-২০ বিশ্বকাপের প্রস্তুতির জন্য টেস্ট ক্রিকেট না খেলে ওই সময় আইপিএল খেলেছেন সাকিব। বাংলাদেশ দল শ্রীলঙ্কা সফরে দু’টি টেস্ট খেলেছে।
টি-২০ বিশ্বকাপের মাঝপথে হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে ছিটকে পড়েন সাকিব। এরপর ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-২০ সিরিজ খেলতে পারেননি এই বাঁ হাতি অলরাউন্ডার। আশা ছিল, পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ দিয়ে ক্রিকেটে ফিরবেন সাকিব। কিন্তু পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় দেরি হওয়ায় চট্টগ্রামে সিরিজের প্রথম টেস্টে সাকিবকে পায়নি বাংলাদেশ। ঢাকা টেস্ট দিয়ে লাল বলের খেলায় ফিরলেও সাকিবকে পরের টেস্টেই পাচ্ছে না বাংলাদেশ দল।
সব ঠিক থাকলে ৯ ডিসেম্বর দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে নিউজিল্যান্ড সফরে যাবে মুমিনুল বাহিনী। সেখানে এক সপ্তাহ কোয়ারেন্টিন শেষে দু’টি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ দল। মাউন্ট মঙ্গানুইতে প্রথম টেস্টটি শুরু হবে নতুন বছরের প্রথম দিনে। ঐতিহাসিক ক্রাইস্টচার্চে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হবে ৯ জানুয়ারি।


আরো সংবাদ



premium cement