২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পাখির প্রতি আনুর মায়া

পাখির প্রতি আনুর মায়া -

আনু স্কুলে আসার সময় বাগানের পথ ধরে হেঁটে আসছিলো। সড়কে উঠতে বাঁ পাশে ছোট একটা আমগাছ। আমগাছের ডালে বসে দুটি বুলবুলি পাখি কিচির মিচির করে ডাকছে। আনু তাকালো পাখির দিকে। আনুকে দেখে উচ্চস্বরে ডাকতে শুরু করলো পাখি দু’টি।
আনু বুঝতে পারলো পাখি দু’টির নিশ্চয় কোন বিপদ ঘটেছে। আনু মনে করলো পাখি দুটি সাহায্য চায়। শুধু বারবার আনুর মাথার উপর দিয়ে উড়ছে কেন?
আনু চারদিক তাকালো। দেখলো একটা বাচ্চা পাখি মাটিতে পড়ে আছে। বাচ্চাটি চিঁ চিঁ করে ডাকছে। আনু গাছের ডালের দিকে তাকালো। তিনটি ডালের ফাঁকে একটি পাখির বাসা। বাসার অন্য বাচ্চাগুলো চিঁ চিঁ করে ডাকছে। বুলবুলি পাখি দু’টি আনুর মাথার উপর দিয়ে উড়ে বাসার কাছে বসলো।
আনু বাচ্চা পাখিটির কাছে গেলো। সে বাচ্চা পাখিটি ধরে বাসায় উঠিয়ে রাখবে। কিন্তু স্কুলে যাবার পথে গাছে উঠা ঠিক হবে না। বাচ্চাটিকে বাসায় উঠিয়ে না রাখলে গুই সাপে কিংবা কুকুর, বিড়ালে খেয়ে ফেলবে।
আনু বাচ্চা পাখিটি ধরে মাটি থেকে দাঁড়িয়ে একটা গাছের ডালে বসিয়ে রাখলো। বুলবুলি পাখি এসে ঠোঁট দিয়ে ধরে তার ছানাটি বাসায় উঠিয়ে রাখলো। পাখিগুলো আর ডাকলো না। আনু মনে করলো পাখি দু’টি তার বাচ্চাকে ফিরে পেয়ে নিশ্চিন্তে শান্ত হয়ে বসে আছে। এমন সময় নাদিম ও উজ্জ্বল সেই পথ দিয়ে স্কুলে যাচ্ছিলো।
- কিরে আনু স্কুলে যাবি না? ওখানে কী করিস? উজ্জ্বল জিজ্ঞেস করলো।
আনু, উজ্জ্বল, নাদিম ওরা তিনজনই সহপাঠী। উজ্জ্বলের চেয়ে নাদিম খুব দুষ্ট। আনু ওখানে কী করেছে তা শোনতে চাইছিলো নাদিম। আনু উত্তর দিলে হয়তো মায়ের কোল খালি করে বাসা থেকে পাখির বাচ্চাগুলো নিয়ে যাবে নাদিম।
আনু বললো, না। আমি কিছু করছি না।
- আয় স্কুলে যাই।
- চল।
সবাই একসাথে স্কুলের পথে হাঁটতে থাকে। পাখির বিপদে আনু এগিয়ে এলো। যে কোনো প্রাণীর বিপদে সাহায্যে করা মানুষের কর্তব্য। দুষ্ট লোকেরা বিপদগ্রস্তদেরকে আরো বিপদে ফেলতে চায়, তাই দুষ্ট লোকের কাছে বিপদগ্রস্তদের সংবাদ দেয়া ঠিক না। মিথ্যা কথা বলা পাপ। কিন্তু অন্যের প্রাণ রক্ষার্থে দুষ্ট লোকের কাছে মিথ্যাও বলা যায়। আনুর মায়ায় পাখির বাচ্চাগুলো বেঁচে গেলো।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement