২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


সবাই কেন্দ্রে থাকব, জণগণের ভোটাধিকার রক্ষা করেই ঘরে ফিরব : জাহাঙ্গীর

- ছবি -নয়া দিগন্ত

ধানের শীষের গণজোয়ারে ভীত হয়ে আওয়ামী লীগ, নির্বাচন কমিশন ও লোকাল প্রশাসন মিলে আগামী ১২ নভেম্বর ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনে ভোটারবিহীন নির্বাচন করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি প্রার্থী এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন।

তিনি ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, আমরা এটা হতে দেব না। জণগণের ভোটাধিকার রক্ষা করেই ঘরে ফিরব। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ থেকে কেন্দ্র থাকব।

গণসংযোগ শুরুর আগে ৯ নম্বর সেক্টরের হোয়াইট প্লাজ হোটের সামনে সংক্ষিপ্ত পথসভায় ধানের শীষের এই প্রার্থী আরো বলেন, গত ২৪ অক্টোবর থেকে এই আসনের নির্বাচনী প্রচার শুরু হয়েছে। এরপর থেকে পুলিশের অনুমতি নিয়ে যেখানেই কর্মসূচি দেই, সেখানেই সঙ্ঘাত বাধাতে আওয়ামী লীগ পাল্টা কর্মসূচি দেয়। ধানের শীষের গণজোয়ার দেখে আমাদের মিছিলে হামলা করেছে, মামলা করেছে। এমনকি আমাদের মহিলা কর্মীরা প্রচারে গেলেও তাদের বাধা দেয়া হয়। আপনারা জানেন, এই ঢাকা-১৮ আসনে জনগণ দীর্ঘদিন গণসংযোগ থেকে উপেক্ষিত, ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। আমরা বিশ্বাস করি আগামী ১২ নভেম্বর ঢাকা-১৮ আসনের সকল ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে যাবেন এবং ধানের শীষ মার্কায় ভোট দিবেন।

তিনি বলেন, এখানে যত অনিয়ম হচ্ছে, সন্ত্রাস হচ্ছে প্রশাসন কোনো সহযোগিতা করছে না। নির্বাচন কমিশনও কোনো সহযোগিতা করছে না। আমরা বার বার নির্বাচন কমিশনের জানিয়েছি। আমরা যখন থানায় যোগাযোগ করি তখন তারা উপরের কথা বলে। আমরা উপর বলতে তো নির্বাচন কমিশনকে বুঝি। নির্বাচনের সময় সব কিছুই তো নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকে। সিইসি ও লোকাল প্রশাসন একত্রিত হয়ে ওই আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের সহযোগিতা করছে। তারা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো ভোটারবিহীন নির্বাচন করার পাঁয়তারা করছে। যেভাবে ২০১৮ সালে আমাদের সবার নামে নজিরবিহীনভাবে গায়েবি মামলা দিয়েছে ঠিক সেভাবে গায়েবি মামলা দেয়া হচ্ছে। গতকাল আমাদের ২৩৫ জনের বিরুদ্ধে এ ধরণের একটা মামলা করেছে। আমাদের সাতটি থানার সমস্ত নেতাদের আসামি করা হয়েছে। তারা আমাদের নেতাকর্মীদের এলাকা ছাড়া করতে চায় এবং ঘর ছাড়া করতে চায়। পুলিশ ও আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে ভোটের দিন পর্যন্ত এলাকায় থাকা যাবে না। আমরা বিশ্বাস করি, এসব হুমকি-ধমকি উপেক্ষা করে ভোটাদের যে ভোট দেয়ার যে আকাঙ্ক্ষা, সেখান থেকে তারা আওয়ামী লীগের সব অন্যায়, অত্যাচার, দুর্নীতি দুঃশানের বিরুদ্ধে গিয়ে ধানের শীষে ভোট দিয়ে গণতন্ত্রেও প্রতীক ধানের শীষে ভোট দেবে।

ঢাকা-১৮ আসনে এখানো নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই উল্লেখ করে এস এম জাহাঙ্গীর বলেন, এখনো নির্বাচন কমিশন এখানে নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারেনি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সন্ত্রাস করার কারণ হচ্ছে যাতে জনগণ ভোট কেন্দ্রে না যায়। তারা কোনোভাবেই চাচ্ছেন না আমাদের নেতাকর্মীরা মাঠে থাক এবং ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে যাক। ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে গেলে তারা ধানের শীষে ভোট দেবে-এ কারণেই আওয়ামী লীগ সন্ত্রাস করছে। আমরা সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করছি। আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট আমাদের নেতাকর্মীরা ভোট কেন্দ্রে যাবে, ভোটারও যাবেন। তারা ধানের শীষের গণজোয়ার দেখে ভীত হয়ে অতীতে যেমন গায়েবি মামলা দিয়েছে, একই রকমভাবে গতকাল শুরু করেছে। পুলিশ প্রশাসন বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে এবং থ্রেট করতেছে।

তিনি বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশনে গিয়েছি, পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়েছি। তারা একজন আরেকজনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আমরা ভোটাদের আশ্বস্ত করেছি, যতই রক্তচক্ষু দেখাক, আপনারা ভোট কেন্দ্রে আসবেন, যাকে পছন্দ তাকে ভোট দিবেন, আমাদের নেতাকর্মীরা মাঠে থাকবে। আপনারা ভোট দিয়ে আপনাদের প্রিয় মার্কা ধানের শীষ ভোট দিয়ে বিজয় করবেন।

আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা কেন সন্ত্রাস করছেন? এই নির্বাচনে হেরে গেলে তো আপনাদের ক্ষমতা হারাতে হচ্ছে না। বরং ভোটাদের সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট দিতে দিলে আপনাদেরই লাভ।

বক্তব্য শেষ করে উত্তরা ৯ নম্বর সেক্টরের বিভিন্ন সড়ক ও ৫০ নম্বর ওয়ার্ড, এয়ারপোর্ট, জসীমউদ্দিন এলাকায় গণসংযোগ করেন ধানের শীষের প্রার্থী। বেলা ৩টায় গণসংযোগ শুরুর আগে ধানের শীষের নির্বাচনী কার্যালয়সহ আশপাশে ধানের শীষের পক্ষে জনস্রোত নামে।

এসময় এস এম জাহাঙ্গীরের সাথে ছিলেন আরো ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, স্বনির্ভর বিষয় সম্পাদক শিরীন সুলতানা, ঢাকা মহানগর উত্তরের বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল সহ কয়েক শ’ নেতাকর্মী।


আরো সংবাদ



premium cement