মধ্যপ্রাচ্যসহ আসিয়ান ও ইউরোপের দেশগুলোতে বাংলাদেশী শ্রমিকদের চাহিদা বাড়ছে। ফিরছে গতিও। যেই ওমানে এক বছরে শ্রমিক গিয়েছিল অর্ধলক্ষাধিক, সেই দেশটিতেই ২০২২ সালে গিয়েছে এর তিনগুণের বেশি। শুধু ওমান নয়, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, জর্দান, মালদ্বীপ, ইতালি, রোমানিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই কর্মী যাওয়ার হার প্রতিনিয়ত বাড়ছে।
অভিবাসন বিশ্লেষকরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যের গুরুত্বপূর্ণ দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিশ্বের শ্রমবান্ধব দেশগুলোতে শ্রমিক যাওয়ার হার বাড়াতে পারলে ২০২২ সালের চেয়ে চলতি বছর আরো ৪-৫ লাখ শ্রমিক বেশি যেতে পারবে। এ ক্ষেত্রে নিরাপদ অভিবাসনের পাশাপাশি বিদেশগামী শ্রমিকদের অভিবাসন খরচ কমিয়ে আনা এবং বিদেশে থাকা বাংলাদেশ মিশনগুলোকে আরো সক্রিয় করতে পারলে বৈদেশিক কর্মসংস্থান সেক্টর আরো চাঙ্গা হতে থাকবে বলে মনে করছেন অভিবাসন সংশ্লিষ্টরা।
যদিও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, চলতি বছর ১৫ লাখ কর্মী বিদেশে কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে পাঠানোর টার্গেট নিয়ে তার মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট দফতর কাজ শুরু করেছে।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখা যায়, ২০২২ সালে ১১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৭৩ জন কর্মী বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি শ্রমিক কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছে সৌদি আরবে। অর্থাৎ এই দেশটিতে কর্মী গেছে ৬ লাখ ১২ হাজার ৪১৮ জন। এরপরেই দ্বিতীয় অবস্থানে আছে মধ্যপ্রাচ্যের আরেক দেশ ওমান। দেশটিতে জানু-ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত কর্মী গেছে এক লাখ ৭৯ হাজার ৬১২ জন। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ১৯ হাজার লোক গেছে ডিসেম্বরে মাসে। অথচ ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশটিতে কর্মী গিয়েছিল ৫৫ হাজার ৯ জন, যা ২০২১ সালের চেয়ে ২০২২ সালে কর্মী যাওয়ার হার তিন গুণেরও বেশি। শুধু সৌদি আরব আর ওমান নয়, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, জর্দান, ইউএই, ইরাক, কুয়েত, কাতার, ইউরোপ আমেরিকাসহ প্রায় প্রতিটি দেশেই শ্রমিক যাওয়ার হার বেড়েছে।
গতকাল বিকেলে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক শহিদুল আলম এনডিসির সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি টেলিফোন ধরেননি।
অবশ্য জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর পরিচালক (বহির্গমন) উপসচিব কাইজার মোহাম্মদ ফারাবি নয়া দিগন্তকে এ প্রসঙ্গে বলেন, এখন প্রতিদিন গড়ে ৪-৫ হাজার বিদেশগামী কর্মীর নামে বহির্গমন ছাড়পত্র ইস্যু করা হচ্ছে। এটা অবশ্যই পজিটিভ দিক। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এ বছর নতুন নতুন মার্কেট ওপেন হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে। যদি লিবিয়ার মার্কেটটি পুরোদমে খুলে যায় তাহলে দেশটিতে কমপক্ষে দুই থেকে তিন লাখ শ্রমিক যেতে পারবে বলে আশা করছি। একই সাথে মালয়েশিয়ার মার্কেটে যে পরিমাণ চাহিদা রয়েছে সেগুলো ঠিক থাকলে আশা করা যাচ্ছে গত বছরের চেয়ে এ বছর টার্গেট মতো কর্মী যেতে পারবে। তিনি বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ৮০-৯০ হাজার শ্রমিক বিদেশে গেছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি, ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাত ছাড়াও ইউরোপের দেশ ইতালি, পোল্যান্ড, বুলগেরিয়া, গ্রিস, রোমানিয়া নিউজিল্যান্ডসহ অনেক দেশেই কর্মী যাওয়ার হার প্রতিনিয়ত বাড়ছে বলে জানান তিনি।
এর আগে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর উপপরিচালক পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা নয়া দিগন্তকে বলেন, বিশ্বের ১৬৮টি দেশে বাংলাদেশ থেকে কর্মী যাচ্ছে বলা হলেও আসলে হাতেগোনা ৩০টি দেশেই ঘুরেফিরে কর্মী যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বিদেশে থাকা প্রতিটি মিশনকে যদি টার্গেট বেঁধে দেয়া হয় তাহলে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের আরো অনেক দেশেই কর্মী পাঠানোর সুযোগ তৈরি হবে। এটা নিয়ে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এখনই ভাবতে হবে বলে তিনি মনে করেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা