দেশের বিভিন্ন জেলায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুলছাত্রসহ পাঁচজন নিহত হয়েছে। মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া, ঈশ্বরদী, নেত্রকোনা, নাটোরের বড়াইগ্রাম ও গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে এসব দুর্ঘটনা ঘটে।
মুন্সীগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া অংশের ভাটেরচর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মিনি কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় কার্তিক দাস (৫০) নামে এক পথচারী নিহত হয়েছেন। তিনি স্থানীয় আফিল পেপার মিলের সাবেক শ্রমিক।
গজারিয়া ভবেরচর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো: কামাল উদ্দিন জানান, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে মহাসড়কের ভাটেরচর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় রাস্তা পারাপারের সময় ঢাকামুখী একটি মিনি কাভার্ডভ্যান কার্তিককে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। কাভার্ডভ্যানটি তাকে ধাক্কা দেয়ার পর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ভাটেরচর সেতুতে আঘাত করে। কাভার্ডভ্যানটি রেখে চালক পালিয়ে যায়।
ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতা জানান, ঈশ্বরদীতে সড়ক দুর্ঘটনায় খড়ি বোঝাই এক পাওয়ার ট্রলি উল্টে ওই গাড়ির হেলপারের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ভোরে ঈশ্বরদী শহরের আলহাজ মোড় এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ভোরে রাজশাহীর বাঘা থেকে ছেড়ে আসা পাবনাগামী খড়ি বোঝাই একটি পাওয়ার ট্রলি ঈশ্বরদী-পাবনা মহাসড়কের ঈশ্বরদী পৌর এলাকার আলহাজ মোড়ে এলে অসমতল রাস্তায় পাওয়ার ট্রলিটি উল্টে যায়। গাড়িতে থাকা খড়ির চাপায় পাওয়ার ট্রলির হেলপার নিয়াত আলী ঘটনাস্থলেই মারা যান। তিনি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার হিজল পল্লী গ্রামের ইয়াছিন আলীর ছেলে। ঈশ্বরদী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রাজ্জাক ঘটনার খবর নিশ্চিত করেছেন।
নেত্রকোনা সংবাদদাতা জানান, নেত্রকোনার শ্যামগঞ্জ-বিরিশিরি সীমান্ত সড়কে দুর্ঘটনায় পতিত হয়ে হাবিবা আক্তার (৭) নামে এক শিশু নিহত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ওই সড়ক পথের শান্তিপুর নামক স্থানে এই দুর্ঘটনা ঘটে। হাবিবা উপজেলার কাকৈরগড়া ইউনিয়নের শংকরপুর গ্রামের নুর উদ্দিনের মেয়ে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জেলার সুসং দুর্গাপুরের শংকরপুর গ্রামের হাবিবা আক্তার তার বাবা-মায়ের সাথে এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়ানো শেষে মঙ্গলবার দুপুরে বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। শ্যামগঞ্জ-বিরিশিরি সড়কে উপজেলার শান্তিপুর নামক স্থানে হাবিবা আক্তার অটোরিকশায় উঠতে গেলে শ্যামগঞ্জগামী বালুবাহী একটি বেপরোয়াগামী ট্রাক তাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই সে নিহত হয়।
দুর্গাপুর থানার ওসি শাহনুর এ আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ঘাতক ট্রাকটি আটক করা সম্ভব হলেও চালক পালিয়ে গেছে।
বড়াইগ্রাম (নাটোর) সংবাদদাতা জানান, নাটোরের বড়াইগ্রামে মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণহীন ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে জীবন দিলেন নুরজাহান বেগম (৩২) নামে এক নারী। নিহতের স্বামী ও ছেলের চোখের সামনেই গতকাল মঙ্গলবার নাটোর-পাবনা মহাসড়কে উপজেলার গড়মাটি মুচিপাড়া এলাকায় এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত নুরজাহান ওই গ্রামের মিলন হোসেনের স্ত্রী।
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার নুরজাহান বেগম তার স্বামী ও দুই সন্তানকে নিয়ে জমি থেকে ঢেঁড়স তুলতে যাচ্ছিলেন। পথে তার স্বামী ও ছেলে মুহিন (১৪) মহাসড়ক পার হয়ে গেলেও চলমান গাড়ির ভিড়ের কারণে নুরজাহান ও তার মেয়ে জান্নাতুল খাতুন (৪) রাস্তার পাশে দাঁড়িয়েছিল। এ সময় একটি আলু বোঝাই দ্রুতগামী ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাদের দিকে ছুটে আসছিল। বিষয়টি দেখতে পেয়ে মা নুরজাহান তার মেয়ে জান্নাতুলকে দু’হাতে ধরে দূরে ফেলে দিলেও নিজে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হন। এতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান।
বনপাড়া হাইওয়ে থানার ওসি খন্দকার শফিকুল ইসলাম বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, দুর্ঘটনার পর চালক-হেলপার পালিয়ে গেলেও ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে।
গাইবান্ধা সংবাদদাতা জানান, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ-নাকাইহাট সড়কের বড়দহ নতুন বাজার এলাকায় মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বালুবাহী ট্রাক্টরের চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী রাকিবুল হাসান (১৪) নামে এক স্কুলছাত্র নিহত ও তার এক বন্ধু গুরুতর আহত হয়েছে। নিহত রাকিবুল গাইবান্ধা পৌরসভার গোরস্থানপাড়ার হারুন অর রশিদের ছেলে। সে স্থানীয় একটি স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্র।
স্থানীয় লোকজন জানায়, মোটরসাইকেল আরোহী দুই কিশোর গাইবান্ধা থেকে গোবিন্দগঞ্জের দিকে যাচ্ছিল। পথে গোবিন্দগঞ্জ-নাকাই সড়কের নতুন বাজার এলাকায় বালুবাহী একটি ট্রাক্টর মোটরসাইকেলটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই রাকিবুল হাসানের মৃত্যু হয় এবং তার সাথে থাকা অপর ছাত্রকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা