৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


কুকুর কিন্তু সমাজের বাইরে নয় : জয়া

কুকুর কিন্তু সমাজের বাইরে নয় : জয়া -

রাজধানী থেকে বেওয়ারিশ কুকুর অপসারণের জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার জনস্বার্থে অভিনেত্রী জয়া আহসান এবং দুটি প্রাণিকল্যাণ সংগঠন অভয়ারণ্য ও পিপলস ফর অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার যৌথভাবে এ রিট দায়ের করেন। আগামী সপ্তাহে এ রিটের ওপর শুনানি হতে পারে বলে জানা গেছে।
জয়া আহসান কুকুরদের খাবার দেন নিয়মিত। রিট আবেদনে কুকুর স্থানান্তর ও ডাম্প করার বিষয়ে ডিএসসিসির কার্যক্রমের বৈধতার প্রশ্নে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে। রিটে ডিএসসিসিসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদি করা হয়েছে।
রিট আবেদনে বলা হয়, প্রাণিকল্যাণ আইন-২০১৯-এর ধারা-৭ অনুযায়ী বেওয়ারিশ কুকুরসহ কোনো প্রাণীকে অপসারণ, স্থানান্তরিত ও ফেলে দেয়া যাবে না। অথচ অভিযোগ রয়েছে ডিএসসিসির মৌখিক আদেশে টিএসসি ও ধানমন্ডি থেকে বেওয়ারিশ কুকুর তুলে নিয়ে মাতুয়াইলে ফেলে দেয়া হয়েছে। এ জন্য কুকুর স্থানান্তরের বিষয়ে ডিএসসিসির সিদ্ধান্ত ও কার্যক্রমের বৈধতা রিট আবেদনে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার জয়া আহসানের সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, ২০১৯ সালে আমাদের দেশে একটি আইন হয়েছে। সেখানে স্পষ্ট বলা আছে, কুকুর নিধন এবং অপসরণ দুটিই দণ্ডণীয় অপরাধ। সরকার এই আইন করেছে; এখন যদি সরকারই এটা না মানে তাহলে দুঃখজনক। কোভিডের সময় কুকুরগুলো খাবারের অভাবে কিছুটা বেপরোয়া হয়তো হয়েছে, এ জন্য এদের শহরের বাইরে ফেলে আসতে হবে এমনটা হতে পারে না।
তিনি বলেন, ঢাকা শহরে কুকুরের সংখ্যা একটু বেড়ে গেছে। টিকা দিয়ে ওদের প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট করে দিলেই কিন্তু সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। সিটি করপোরেশন আগে সেটা করেনি। না করার কারণেই এমনটা হয়েছে। এখন কুকুরগুলো অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার কথা বলা হচ্ছে। তারা হয়তো জানে না এক এড়িয়ার কুকুর অন্য এড়িয়ায় গিয়ে বাঁচতে পারে না। কুকুর সময় সময় মানুষের সাহচর্য চায়। আর কুকুরকে নিজে থেকে বিরক্ত না করলে কুকুর আগ বাড়িয়ে বিরক্ত করে না।
বাংলা সিনেমার বর্তমান সময়ের সবচেয়ে সফল এই অভিনেত্রী বলেন, আমরা যদি কুকুর সরিয়ে দেই সেটা বোকামির চূড়ান্ত হবে। এখন শতবর্ষী গাছ কেটে ফেলছে। সে দিন দেখলাম কুমিল্লা টাউন হল; ওটা ভেঙে ফেলবে। ওখানে আধুনিক বিল্ডিং হবে। এটা হতে পারে না। সংরক্ষণ করা জানতে হবে আমাদের।
আমাদের কুকুর কেন প্রয়োজনÑ আমাদের কুকুরগুলোকে যদি সরিয়ে নেয়া হয় ঢাকা শহরে যে ম্যানহোল আছে ওগুলো আরো নোংরা হবে। সব কিছুকে ব্যালেন্স করতে হবে। আমাদের একটু সাইন্টিফিকলি চিন্তা করতে হবে। আমাদের দেশে এখন ব্যাঙ কমে গেছে। এর ফলে ফসলের মাঠে পোকামাকড় বেড়ে গেছে। ব্যবহার করতে হচ্ছে কীটনাশক। এর থেকে অনেক রোগ ছাড়াচ্ছে। আমাদের এগুলো বোঝাতে হবে। সাময়িক সুবিধার জন্য একটা ডিসিশন নিয়ে নিলাম। এতে আসলে সমস্যার সমাধান হয় না।
মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলোতেও প্রাণীদের সংরক্ষণের জন্য নানারকম পদক্ষেপ নেয়া হয়। তুরস্কে প্রাণীদের জন্য গরমকালে আলাদা পানির ব্যবস্থা করা হয়। এটা আমাদের বুঝতে হবে যে, মানুষের একার কষ্ট হয় না। আর আমাদের কোনো রাইট নেই যে শুধু আমরা ডমিনেট করব। আমরাই সব কিছুর সুবিধা নেবো। প্রকৃতির প্রত্যেকটা সন্তান, গাছ, প্রাণী সবার প্রয়োজন আছে। আমরা সবাই সব কিছুর ওপর নির্ভর এটা মনে রাখতে হবে।
কুকুরে প্রতি জয়ার ভালোবাসা নিয়ে ইতিবাচক নেতিবাচক দুই ধরনের মন্তব্যই শোনা যায়। জয়ার নেটওয়ার্কের মানুষগুলো সেটা কিভাবে নিচ্ছেন? হেসে জাবাব দিলেন, এখন সচেতন মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। সবাই সবার জায়গা থেকে চেষ্টা করে। তারা আমার জন্য আছে। খুব আমিত্ব ভাবেন তারা অসচেতন তাদেরকে বলব। এমনিতে আমার অনেক দুর্বল জায়গা হচ্ছে নেচার। পশুপাখি বলুন বা সবার প্রতি আমার মমত্ববোধ আছে। সবার ভেতরই আছে এটা। এটাকে শুধু জাগিয়ে তুলতে হবে। আর এটা করতে পারলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুন্দর শিক্ষা, সুন্দর সমাজ উপহার দিতে পারব। আমরা সবাই মিলে সমাজ। কুকুর কিন্তু সমাজের বাইরে নয়।
জয়া বলেন, উন্নত দেশগুলোতে যেকোনো পরিকল্পনার প্রথমেই ভাবে কিভাবে সবুজ বাঁচিয়ে রেখে আধুনিকায়ন করা যায়। পশু-পাখিকে বাঁচিয়ে রাখতে জঙ্গল বা ফরেস্ট ওয়াটার বডি রেখে কিভাবে আগানো যায়। আমাদেরও এটা করতে হবে। তা না হলে বিপদে পড়ব আমরা।
এখন মানুষ অনেক বেশি সচেতন। আমাদের কোভিড যে শিক্ষাটা দিয়ে গেছে। আমার মনে হয় আমাদের পরে যে জেনারেশন আসবে তারা কিন্তু অনেক কমিটেড থাকবে না, তারা কিন্তু অনেক সম্পত্তিতে বিশ্বাস করবে না, তারা কিন্তু অনেক বেশি আমি আমি করবে না। এই এক্সপেরিয়েন্স থেকেই তারা সব কিছু ছোট করে নিয়ে আসবে। আমার মনে হয় সুখে থাকতে হলে নিজের সম্পত্তি এগুলো থেকে একটু ডিটাচ থাকা ভালো।
পরিকল্পনার অভাবে আমাদের ঢাকা শহরের ক্যারেক্টার কিন্তু চেঞ্জ হয়ে গেছে। যেখানে ইচ্ছা মানুষ বিশাল বিশাল ভবন তৈরি করে আধুনিক সাজার চেষ্টা করছে। কিন্তু আদতে আমরা কিন্তু পিছিয়ে যাচ্ছি। আমাদের সংসদ ভবন, জাদুঘর, চারুকলা বাদে ঢাকা শহরে আর কিছু আমি দেখতে পাই না। আমাদের ইকোব্যালেন্সটার দিকে নজর দিতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের আরবান প্লানিংটা নিয়ে একাডেমিকলি চিন্তা করা দরকার। শুধু ফিউচারের জন্য নয়। আমাদের বর্তমান অবস্থায় নিঃশ্বাস নিয়ে বাঁচার জন্য এটা প্রয়োজন। আমাদের ভাবতে হবে কালেকটিভলি।
দেশ-বিদেশ মিলে জয়ার অর্জনের ঝুড়ি বেশ ভারী। বিষয়টি নিয়ে জয়া বলেন, আমার বাড়িতে আমার কোনো ছবি রাখি না। দুই তিনটি অ্যাওয়ার্ড আমার মা রেখে দিয়েছেন। আমার স্বাভাবিক থাকতে ভালো লাগে। অর্জন নিয়ে শোআপ করতে ভালো লাগে না। আর অভিনয় সারা জীবন শেখার জিনিস। আমি সেই শিক্ষার মধ্যেই থাকতে চাই। মাঝে মধ্যে মনে হয় আমার সিনেমা টিকিট কেটে মানুষ কেন দেখে। অভিনয়টা তো করি মন থেকে কোনো পাওয়ার আশায় নয়।


আরো সংবাদ



premium cement
দোয়ারাবাজারে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ করে হত্যা, আটক ১ বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের বাধাহীন প্রবেশের দাবি সম্পাদক পরিষদ ও নোয়াবের পেকুয়া উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন বিএনপির ২ প্রার্থী নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন ১৮৫ দিন : শিক্ষামন্ত্রী মঙ্গলবার ২ হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং, দুর্ভোগে মানুষ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা বাড়ল জ্বালানি তেলের দাম, কার্যকর বুধবার বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী ‘ইসলামী সমাজ বিপ্লব ছাড়া মানুষের মুক্তি সম্ভব নয়’ ইসরাইলে জার্মানির অস্ত্র বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে আইসিজের অস্বীকৃতি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন শাহরাস্তি উপজেলা আ’লীগ সভাপতি

সকল