২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


রাজধানীতে সুলভমূল্যে মাছ গোশত

সামান্য হলেও স্বস্তি দেবে

-

পবিত্র মাহে রমজান শুরুর অনেক আগে থেকে বলা হচ্ছিল, এবার পণ্যমূল্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার সবরকম ব্যবস্থা নেয়া হবে। নিশ্চিত করা হবে যেন রোজার সময় বেশি চাহিদা থাকে এমন পণ্যের দাম না বাড়ে। পণ্যের বাজারে সিন্ডিকেট বা অন্য ধরনের কারসাজির বিষয়ে কঠোর হুঁশিয়ারিও দেন একাধিক মন্ত্রী। কিন্তু কিছুতে কিছু হয়নি। রোজার আগে প্রয়োজনীয় সব জিনিসের দাম বেড়েছে। বিশেষ করে খেজুর, ভোজ্যতেল, ছোলা, ডাল, মটর, পেঁয়াজ, মসলা, চিনি ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের চাহিদা বাড়ে অনেক বেশি। শুধু রোজার সময়ের পণ্য নয় সব পণ্যের দাম বাড়তির দিকে। সম্প্রতি চিনির দাম নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় হয়েছে। অনেকে বলছেন, রমজানের আগে দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়া সরকারের চরম ব্যর্থতার দৃষ্টান্ত।
অতিরিক্ত চাহিদার সুযোগে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ব্যবসায়ীদের একটি শ্রেণী ইচ্ছামতো পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু বাজার তদারকির উপর্যুপরি ঘোষণা থাকলেও রোজা শুরুর শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তার তেমন কোনো নমুনা দেখা যায়নি। গতকাল মন্ত্রীসহ সরকারি কর্মকর্তারা বাজার তদারকিতে নামেন। এ ধরনের তদারকির ফল কী হয় তা আমরা দেখেছি অতীতের অনেক অভিযানের ফল থেকে। অভিযানের কিছুক্ষণ পর সবকিছু আগের মতো হয়ে যায়।
চলতি বছরের রমজান মাসে নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে মাঠপ্রশাসনকে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে খাদ্যমজুদ পরিস্থিতি, বাজার মনিটরিং এবং টিসিবি পণ্য বিতরণ কার্যক্রম সুষ্ঠু করার ওপর গুরুত্ব দিতে বলা হয়।
তবে এক্ষেত্রে সামান্য স্বস্তিকর উদ্যোগ নিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। তারা রাজধানীর ২৫টি স্পটে গাড়িতে করে সুলভমূল্যে গরুর ও খাসির গোশত, ব্রয়লার মুরগি, ডিম ও দুধ বিক্রি শুরু করেছে। আগামী ২৮ রমজান পর্যন্ত চলবে এ কার্যক্রম। একইভাবে রাজধানীর আটটি স্পটে প্রথমবারের মতো ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে সুলভমূল্যে মাছ বিক্রি করা হচ্ছে।
এসব উদ্যোগ জনজীবনে কিছুটা স্বস্তি বয়ে আনবে হয়তো, কিন্তু এটি কোনো উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে না। কারণ, মূল্যস্ফীতির চাপ শুধু রাজধানীতে পড়েনি, সারা দেশের সব মানুষের জন্য তা দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। তাছাড়া রাজধানীরও কেবল মুষ্টিমেয় মানুষই এ সুবিধা পাবেন।
কিন্তু শুধু রাজধানীবাসীর নয়, পুরো দেশবাসীর স্বস্তি বিধানের দায় সরকারের। সেই কাজটি করতে হলে যেকোনো উপায়ে মূল্যস্ফীতি কমাতে হবে, বাজারে কার্যকর মনিটরিং করতে হবে এবং ব্যক্তি বা গোষ্ঠীস্বার্থ বাদ দিয়ে কেবল জনস্বার্থকে প্রাধান্য দিতে হবে।
সবশেষ নির্বাচনের পর নিয়োজিত নতুন মন্ত্রীরা ব্যক্তি বা গোষ্ঠীস্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে নতুন উদ্যমে শুধু মানুষের জন্য কাজ করবেন সাধারণ নাগরিকরা এমনটাই আশা করেন। কিন্তু আশা তো শূন্যের ওপর হয় না। কারো কথায় আস্থা রেখেও হয় না। মন্ত্রীরা বাস্তবে কতটা কার্যকর ভূমিকা পালন করছেন সেটা দেখে মানুষ আশাবাদী হন। সম্প্রতি মজুদদারির বিরুদ্ধে অনেক হুমকি ধমকি শোনা গেলেও কার্যত সুফল আসেনি। পুরো বিষয়টি উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর মতো বিরোধী দলের ওপর চাপানোর চেষ্টা দেখা গেছে।


আরো সংবাদ



premium cement