২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


লালমনি এক্সপ্রেসে ভোগান্তি

আর কত দিন চলবে?

-

দৈনিক নয়া দিগন্তের লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানান, ট্রেনের নাম লালমনি এক্সপ্রেস। চলে ঢাকা টু লালমনিরহাট। দেশের রেলপথের সর্বাধিক দূরত্বে ৪৪৫ কিলোমিটার চলাচলকারী ট্রেন শুরু থেকেই অবহেলিত। ট্রেনে যাত্রীর কমতি নেই।
সপ্তাহে ছয় দিন চলাচলকারী এই ট্রেনটির বেশির ভাগ বগিতেই জ্বলছে না বাতি। বিদঘুটে অন্ধকার। পাখাগুলো নষ্ট হওয়ায় তীব্র গরমে যাত্রীদের বসে থাকা দায়। দুর্গন্ধে থাকা কঠিন। অপরিচ্ছন্ন নোংরা পরিবেশে আসনগুলোর অবস্থাও বেহাল। কোনো কোনো আসন ছিঁড়ে বেরিয়ে গেছে ছোবড়া। দৈন্যদশার এই চিত্র লালমনিরহাট টু ঢাকা রুটে। সেবার মান এতই খারাপ যে, ‘যাত্রী ভোগান্তি লালমনি এক্সপ্রেস’ নামে পরিচিতি পেয়েছে। খাবারের মান অত্যন্ত নিম্ন। রান্নাঘর যেন ঘুমখানা। সেখানে গরম ও টাটকা খাবারের বালাই নেই। ট্রেনে রান্না করা হয় না। বাইরে রান্না করা খাবার এক্সপ্রেসে চালানো হয়। বেশির ভাগ সময় বেকারির খাদ্যদ্রব্য যাত্রীদের কাঁধে চাপানো হয়। পুষ্টিকর খাবার বলতে ২-৩ ধরনের ছাড়া আর কোনো পদ নেই। ২৪টি পদ খাবার তালিকাভুক্ত করা হলেও তা কাগজকলমে সীমাবদ্ধ। যাত্রীদের খাবার চাহিদা স্টেশনে নেমে মিটাতে হচ্ছে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ২০০৪ সালে ঢাকা থেকে চালু হয় আন্তঃনগর ট্রেন লালমনি এক্সপ্রেস। ঢাকা থেকে রেলপথে লালমনিরহাট ৪৪৫ কিলোমিটার। বিশাল দূরত্বের পথ পাড়ি দেয়ার জন্য লালমনি এক্সপ্রেসের যাত্রীসেবার মান কমেছে। এরপর আরেক দফা ভাড়া বাড়ানো হলেও সেবার মান আরো কমেছে। সপ্তাহের প্রথম দিনে নির্ধারিত সময়ে চলা শুরু করেও সঠিক সময়ে পৌঁছাতে পারে না।
নিয়মিত যাত্রীরা জানান, এই ট্্েরন সময় মেনে চলে না। প্রয়োজনীয় নিরাপত্তারক্ষী না থাকায় ছিনতাইকারী, মলম পার্টি ও অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা সহজেই অপরাধ করে নিরাপদে চলে যায়- এই ট্রেনে ধর্ষণের ঘটনাও ঘটেছে বলে অভিযোগ। যাত্রীদের ভাষ্য, বিকল্প না থাকায় নিরুপায় হয়েই এই ট্্েরনে ভ্রমণ করেন তারা।
শফিক নামে একজন যাত্রী বলেন, আমাদের ক্ষেত্রে যতটা ভাড়া বেড়েছে, ততটাই সেবার মান কমেছে। মহব্বত নামে একযাত্রী আক্ষেপ করে বলেন, ‘হামরা (আমরা) কত কথা। কাই শোনে বাহে। হামরাতো মফিজ। হামার টেরেনও (ট্রেন) মফিজ। একান নেট করনো, কি করলো না তাতে কারো কিচ্ছু যায় আইসে না।’
লালমনিরহাট ডিভিশনাল ট্রাফিক সুপারিনটেনডেন্ট (ডিটিএস) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সেবার মান বাড়াতে ডিভিশনাল ট্রাফিক বিভাগে কাজ করা হচ্ছে। প্রতিনিয়ত ট্রেনে যাত্রীসেবা, নিরাপত্তা জোরদারে পদক্ষেপ গ্রহণসহ বেশ তৎপর রয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এভাবে চলতে পারে না। তাই রেলের যাবতীয় অব্যবস্থাপনা দূর করা চাই। অন্যথায়, রেলওয়ে তার ঐতিহ্য ও সুনাম হারাবে।


আরো সংবাদ



premium cement