২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


দুর্নীতি দমনে দুদকের দুর্বল কার্যক্রম

জনবল-সুবিধা বৃদ্ধি অব্যাহত

-

বাংলাদেশ সবচেয়ে দুর্নীতিপ্রবণ দেশগুলোর একটি। এটি বুঝতে দুর্নীতির প্রকাশিত সূচকের প্রয়োজন নেই। যদিও দেশী-বিদেশী সব সূচকে এর উল্লেখ আছে। এদেশে দুর্নীতি এখন অঘোষিত নীতি। পরিণতিতে পিষ্ট হচ্ছে সাধারণ মানুষ। দুর্ভাগ্য হলো- দুর্নীতি দমন কমিশন বা দুদক নামে, কাগজকলমে একটি কমিশন রয়েছে। এর জন্য রয়েছে প্রয়োজনীয় জনবল। তাদের সুযোগ সুবিধা ক্রমাগত বাড়ছে। তবে দুর্নীতি দমনে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির ভূমিকা রাখা দূরের কথা; কিছু ক্ষেত্রে নিজেরা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছে। আর কিছু ক্ষেত্রে দুর্নীতিবাজদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দায়ের করা অভিযোগ নিয়ে দুদকের কার্যক্রম থেকে বোঝা যায়; প্রতিষ্ঠানটি কতটা গাফেল, নিষ্ক্রিয় আর অকার্যকর। ২০২৩ সালে দুদকে ১৫ হাজার ৪৩৭টি অভিযোগ জমা পড়ে। অনুসন্ধানে আমলে নেয়া হয় ৮৪৫টি। যা অভিযোগের সাড়ে ৫ শতাংশের কম। অনুসন্ধান শেষে মামলা হয়েছে ৪০৪টি। ২০২২ সালে অভিযোগ জমা পড়েছিল ১৯ হাজার ৩৩৮টি। অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয় ৯০১টি। যা অভিযোগের সাড়ে ৪ শতাংশের কিছু বেশি। তবে এর একটা অংশ তা-ও খুব সামান্য মন্ত্রণালয়, দফতর, অধিদফতরের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে পাঠানো হয়- ২০২৩ সালে ৯১৩টি ও ২০২২ সালে ৩ হাজার ১৫২টি। ২০২৩ সালে প্রতিষ্ঠানটির জনবল দ্বিগুণ বাড়িয়ে দুুই হাজার ৯৮ জন করা হয়। প্রাপ্ত তথ্য বলছে, দ্বিগুণ জনবল নিয়ে দুর্নীতিবিরোধী কর্মকাণ্ড আরো কমেছে।
বিপুল অভিযোগ এবং যথেষ্ট জনবল থাকার পর কেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুদক শক্ত অবস্থান নিতে পারছে না। বিষয়টি বিস্ময়কর। এসব ক্ষেত্রে দুদকের দায়িত্বশীলদের খোঁড়া যুক্তি, যারা অভিযোগ জমা দেন; তারা সংস্থাটির তফসিলভুক্ত অপরাধের ব্যাপারে সচেতন নন। অভিযোগ লেখার ক্ষেত্রে ভুল করেন।
দুর্নীতি জাতির জন্য অভিশাপ; যা আমাদের ভবিষ্যৎ বিনষ্ট করছে। একটি অপরাধ তফসিলভুক্ত না হলেও যদি গভীর ক্ষত তৈরি করে, এর প্রতিকার অত্যাবশ্যক। তাই দুদকের উদ্যোগী হয়ে তফসিলভুক্ত করা উচিত। সেটি না করে এড়িয়ে যাওয়াকে সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করছে। কেউ যদি অভিযোগ লিখতে ভুল করেন, দেখা গেল প্রকৃতপক্ষে দুর্নীতি হয়েছে। জনস্বার্থ বিঘিœত হয়েছে। তাহলে ভুলের অজুহাতে তা বাতিল করা ন্যায়সঙ্গত নয়। বিপুল অভিযোগ দায়ের এবং বিপরীতে নগণ্যসংখ্যক অনুসন্ধানের আওতায় আসায় অবহেলা ও এড়িয়ে যাওয়ার নীতি এর জন্য দায়ী। ব্যাংক, সরকারি অফিস ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বর্তমান সরকারের আমলে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। এর কুশীলবদের সবাই চেনেন। পি কে হালদারসহ আলোচিত অনেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে সব তথ্যপ্রমাণ থাকার পরও দুদক কার্যকর তদন্ত করতে পারেনি। বিগত এক যুগে এমন অনেক দুর্নীতিবাজ দেখা গেছে যাদের ব্যাপারে কোনো অভিযোগ দায়েরের দরকার পড়ে না। বরং এ সময় আমরা দেখেছি; দুদকের অভ্যন্তরে থাকা কেউ দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন। অন্যদিকে সংস্থাটির সৎ কর্মকর্তারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিলেও তাদের উৎসাহিত করা দূরে থাক; চাকরিচ্যুত করার অভিযোগ উঠেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে সব ধরনের দুর্নীতি সরকারদলীয় লোকজন ও ক্ষমতাসীনদের আশীর্বাদপুষ্ট ব্যক্তিরা করেছেন। অথচ দুদক একটি অংশকে সৎ ও ন্যায়পরায়ণ হিসেবে সনদ দিয়েছে। ওইসব ব্যক্তি নিজেদের সাদা মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠায় তা প্রদর্শন করেন। এদিকে দুদক সক্রিয় হয়েছে সরকারের বিরাগভাজন বিরোধী দলের লোকজনের ওপর। তাই জনবল বৃদ্ধি ও সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর পরও দুর্নীতি দমনে প্রতিষ্ঠানটি কাজে আসছে না। এ অবস্থায় প্রয়োজন, দুদককে উদ্ধারে পরিকল্পনা। এ নিয়ে সরকারের আন্তরিক মনোযোগ দরকার।


আরো সংবাদ



premium cement
ডেঙ্গুতে এ বছর ৪০ হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে মালিতে তীব্র গরমে রুটি-দুধের চেয়ে দাম বেশি বরফের বান্দরবানে সংঘর্ষে দুই কেএনএফ সদস্য নিহত আওয়ামী দুঃশাসনে সমগ্র দেশ এখন জুলুমের নগরী : ফখরুল চুরির ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে অস্ত্রের সন্ধান পেল পুলিশ ইউসিবির সাথে একীভূত হবে না ন্যাশনাল ব্যাংক চিরস্থায়ীভাবে বাকশাল করতে খালেদা জিয়াকে বন্দী রাখা হয়েছে : রিজভী স্কুল-কলেজ খোলার দিনেই পরিবহন ধর্মঘটের দুর্ভোগে চট্টগ্রামের মানুষ তিন মোটরসাইকেল চালকসহ নিহত ৫ চলনবিলের ২৫ নদী ভুগছে দখল দূষণ ও নাব্যতা সঙ্কটে ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়ায় মানবাধিকার ক্ষুণ্ণ হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে

সকল