০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`


আল-আকসায় মুসল্লিদের ওপর হামলা

ইসরাইলি সন্ত্রাস রোধে ব্যবস্থা নেই

-

ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সুযোগ ক্রমেই হাওয়ায় মিলিয়ে যাচ্ছে। বিপরীতে ইসরাইলের নিয়ন্ত্রণ আরো নিরঙ্কুশ হচ্ছে। প্রতিদিন নতুন নতুন ফিলিস্তিন এলাকা দখলে নিচ্ছে ইসরাইল। তাদের নিজ এলাকা থেকে বিতাড়িত করে গড়ে তোলা হচ্ছে ইসরাইলের নতুন নতুন আবাসিক এলাকা। ফিলিস্তিনিরা রক্ত ঝরিয়ে প্রতিবাদ করছেন বটে। কিন্তু সন্ত্রাসী কায়দায় সেই প্রতিবাদ দমন করছে ইসরাইল। যখন বেআইনিভাবে ইসরাইল এসব করছে তখন তা রুখতে কেউ নেই। ফিলিস্তিনিদের উৎখাতের বিরুদ্ধে জোরালো কোনো আওয়াজ বিশ্বপর্যায় থেকে নেই। এ অবস্থায় অসহায় ফিলিস্তিনিদের আর্তনাদে বাতাস ভারী হয়ে উঠছে। সর্বশেষ আল-আকসা মসজিদে ফিলিস্তিনিদের ওপর কড়াকড়ি আরোপের পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভয়াবহ হামলা চালায় ইসরাইলের সরকারি বাহিনী।
ফিলিস্তিনিরা এখন নিজ দেশে পরবাসী। অনেক এলাকায় তাদের জীবন প্রবাসীদের চেয়েও খারাপ। ইসরাইলিরা নিরাপত্তার নামে ফিলিস্তিনি এলাকাগুলো ঘিরে ফেলছে। কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে তাদের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। বের হওয়ার পথগুলোতে বসিয়ে দেয়া হয়েছে নিরাপত্তাচৌকি। ফিলিস্তিনিরা মুক্তভাবে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাবেন তার সুযোগ সীমিত করে ফেলা হয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রাস্তা বন্ধ করে রাখা হয়। সময় মতো কাজে যাওয়া এমনকি চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যাওয়াও তাদের জন্য দুরূহ হয়ে উঠেছে। শুক্রবার আল-আকসা মসজিদে মুসল্লিদের ওপর হামলার ঘটনাটিও এই সূত্রে ঘটেছে। পূর্ব জেরুসালেমের কয়েকটি এলাকা থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করা নিয়ে সেখানে উত্তেজনা চলছিল। এ নিয়ে দফায় দফায় ইসরাইলি বাহিনী ফিলিস্তিনিদের ওপর চড়াও হয়। শেষ পর্যন্ত তারা আল-আকসা মসজিদে নামাজরত মুসল্লিদের ওপর হামলা চালায়।
প্রথমে ইসরাইলি বাহিনী আল-আকসায় প্রবেশ করতে ফিলিস্তিনিদের বাধা দেয়। তারপর নামাজরত মুসল্লিদের ওপর রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস ও শব্দবোমা নিক্ষেপ করে। অকুস্থল থেকে পাঠানো সংবাদচিত্রে দেখা যাচ্ছে, তারা নামাজরত মুসল্লিদের লক্ষ্য করে অস্ত্র প্রয়োগ করছে। কাঁদানে গ্যাসের ধোঁয়ায় সব আচ্ছন্ন হয়ে যায়। এর ঝাঁজে অনেক মুসল্লি মসজিদের মধ্যেই লুটিয়ে পড়েন। ওই সময় দুই শতাধিক ফিলিস্তিনি আহত হন। ধাতব বুলেটের আঘাতে অনেকে গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের ৮৮ জনকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। তাদের চিকিৎসায় রেড ক্রিসেন্ট সেখানে হাসাপাতাল খুলেছে। এটা ঠিক যে, ফিলিস্তিনি যুবকরা তাদের প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছে। শত প্রতিকূলতার মধ্যেও তারা ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছেন। ফিলিস্তিনি তরুণরা মসজিদে হামলার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তারা নামাজরত মুসল্লিদের বাঁচানোর চেষ্টা করেন। তাদের প্রতিরোধের মুখে ইসরাইলি বাহিনীর ১৭ সদস্য আহত হয়।
উপাসনার সময় রাষ্ট্র্রীয় কোনো বাহিনীর এভাবে হামলার নজির কেবল ইসরাইলেই দেখা যায়। সাধারণত উপাসনাকে বিশ্বের মানুষ পবিত্র কর্ম হিসেবে গণ্য করে। এই অবস্থায় রাষ্ট্রীয় বাহিনী কাউকে হামলা চালালে তীব্র প্রতিক্রিয়া হওয়ার কথা। বাস্তবে ইসরাইলের সাম্প্রদায়িক সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের শক্তিশালী কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না। এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র একটি গতানুগতিক বিবৃতি দিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও সাথে সুর মিলিয়েছে। এই প্রতিক্রিয়ার কার্যকারিতা না থাকায় ইসরাইল সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত হবে না। অতিতেও এমনটিই দেখা গেছে। শেষ পর্যন্ত ইসরাইলের সন্ত্রাসের প্রতিই পশ্চিমাদের সমর্থন থাকে। ফলে ইসরাইলের মানবতাবিরোধী অপরাধের কোনো প্রতিকার পান না ফিলিস্তিনিরা। অন্য দিকে আরব রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে এখন আর মুসলিম চেতনা তেমন কার্যকর নেই, একইভাবে আরব জাতীয়তাবাদের চেতনাও অনুপস্থিত। মসজিদে এভাবে হামলার পর জর্দান ও ইরানের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে শুধু। দেশ দু’টির উদ্বেগ জানানো এ পর্যন্ত ফিলিস্তিনিদের রক্ষায় খুব একটা কাজে আসেনি। এমন হামলার প্রতিকার পেতে হলে মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধভাবে জোরালো প্রতিবাদ জানাতে হবে। আপাতত সেটি দেখা যাচ্ছে না।

 


আরো সংবাদ



premium cement
উপজেলা নির্বাচনের কেন্দ্রগুলো খাঁ খাঁ করছে : মেজর হাফিজ আল্লাহর মেহমান হজ্ব গমনেচ্ছুদের জীবনের বাকি সময়েও আল্লাহর রাস্তায় নিজেকে উজাড় করে দিতে হবে-ডা. শফিকুর রহমান ডলারের দাম ৭ টাকা বাড়াল বাংলাদেশ ব্যাংক চুয়াডাঙ্গায় নির্বাচনে আটক ৩, প্যানেল চেয়ারম্যানের কারাদণ্ড নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের গ্রুপে খেলবে স্কটল্যান্ড মারাদোনোর চুরি যাওয়া গোল্ডেন বল নিলামে উঠছে প্রথম ধাপের উপজেলা ভোট শেষ, চলছে গণনা যুদ্ধবিরতির কাজ এগিয়ে নেয়ার সময় গাজায় নতুন করে হামলা ইসরাইলের গাজায় সাহায্য সরবরাহে কেরাম শালোম সীমান্ত খুলে দিয়েছে ইসরাইল উত্তর কোরিয়ার প্রচারণা বিভাগের সাবেক প্রধানের মৃত্যু মুসলিম দেশগুলোর ঐক্য ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা কমাতে পারে : প্রধানমন্ত্রী

সকল