৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ক্ষমতাসীনরা আইন হাতে তুলে নিচ্ছে

অপরাধ সারা দেশে বিস্তৃত

-

গাইবান্ধায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এক নেতার বাসা থেকে স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ওই আওয়ামী লীগ নেতা ‘দাদন ব্যবসায়ী’ হিসেবে পরিচিত। তিনি মানুষকে চড়া সুদে ঋণ দিয়ে থাকেন। স্থানীয় ব্যবসায়ী হাসান আলীও তার কাছ থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। এরপর সময়মতো তিনি ঋণ পরিশোধ করতে পারেননি। ঋণের টাকা আদায়ের জন্য তার ওপর নেমে আসে আমানসিক নির্যাতন। গত শনিবার ওই আওয়ামী লীগ নেতার বাসায় মেলে হাসান আলীর লাশ। ক্ষমতাসীন দলের মানুষদের আইন হাতে তুলে নেয়ার প্রবণতা সারা দেশে দেখা যাচ্ছে। তারা ধরাকে সরাজ্ঞান করছেন। একইভাবে তারা জড়িয়ে পড়ছেন নানা ধরনের অপরাধে। ক্ষমতাকে তারা মানুষের বিরুদ্ধে দমনপীড়ন ও নিষ্পেষণে ব্যবহার করছেন।
খবরে জানা যাচ্ছে, জেলা শহরে একটি জুতার দোকান ছিল হাসান আলীর। ব্যবসায় মন্দা হওয়ায় তিনি জেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ও দাদন ব্যবসায়ী মাসুদ রানার কাছ থেকে ঋণ নেন। সময়মতো অর্থ পরিশোধ করতে না পারায় মাসুদ রানা অর্থ আদায়ে তার দলীয় প্রভাব কাজে লাগান। ৬ মার্চ হাসানকে তিনি বাসা থেকে তুলে নিয়ে যান। পরে তার স্ত্রী চেষ্টা তদবির করায় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নেয়। দুর্ভাগ্য হলো, পুলিশ আবারো তাকে ওই নেতার জিম্মায় ছেড়ে দেয়। এ দিকে তিনি তাকে বাসায় আটক করে নির্যাতন চালাতে থাকেন। এবার স্ত্রী তদবির করে তাকে আর ছাড়িয়ে আনতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ওই বাড়ি থেকে তার স্বামীর লাশ পাওয়া গেল। হাসান আলীর স্বজনরা মোবাইলে বার্তা দেখান সাংবাদিকদের। সেখানে তিনি পরিবারের লোকজনের উদ্দেশে লিখেছেন, মাসুদ রানা তাকে আটক করে নির্যাতন চালাচ্ছেন।
বর্তমানে পুলিশের স্বাভাবিক ভূমিকা খুব কম দেখা যায়। হাসান আলীকে পুলিশ কোন আইনের বলে ওই আওয়ামী লীগ নেতার জিম্মায় দিয়েছে? যেখানে তিনি প্রথমবার হাসানকে অপহরণ করে তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন। পুলিশ কখনো আসামিকে বাদিপক্ষের হাতে তুলে দিতে পারে না। পুলিশের দায়িত্ব অভিযুক্তকে আইনের মুখোমুখি করা। তাকে পুলিশ আদালতে চালান করে দিতে পারত। ব্যবসায়ী হাসানের হত্যায় এখানে পুলিশের ভূমিকা সহায়ক যেখানে নিপীড়কের হাত থেকে মানুষকে উদ্ধার করা পুলিশের দায়িত্ব। এভাবে একজন ব্যক্তিকে হত্যার দায় পুলিশ এড়াতে পারে না। খবরে জানা যায়, আওয়ামী লীগ নেতা মাসুদ রানাকে পুলিশ সমীহের সাথে আটক করে নিয়ে গেছে। তাকে একজন অপরাধী হিসেবে ধরে বেঁধে নেয়া হয়নি যেখানে অপরাধের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি, এমন অনেক ব্যক্তিকে পুলিশ লাঞ্ছিত অপমানিত করে ধরে নিয়ে যায়। সমাজে অপরাধীদের পোয়াবারো হওয়ার পেছনে পুলিশের এমন অন্যায় আচরণও ভূমিকা রাখছে।
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির জন্য ক্ষমতাসীন দলের বড় ভূমিকা রয়েছে। এমন কোনো অন্যায় অনিয়ম নেই ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা সারা দেশে করছেন না। খুন, গুম, চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদক চোরাচালানের কাজে তারা ক্ষমতাকে ব্যবহার করছেন। পাপিয়া, সাহেদ, সাবরিনা, সম্রাট এগুলো ‘হিমশৈলীর চূড়ায় দৃশ্যমান অতি ক্ষুদ্র একটি অংশ’। ঢাকা চট্টগ্রামসহ কয়েকটি বড় শহরে মাদক ও জুয়াসহ শত শত কোটি টাকার অবৈধ কারবারের বিরুদ্ধে সরকার অভিযান চালিয়েছিল। বড় শহরগুলো ঘিরে ক্ষমতাসীনদের অপরাধী চক্রের বিস্তৃতিটা কত বড় তখন সেটা টের পাওয়া গিয়েছিল। একেবারে উঁচু থেকে নিচে পর্যন্ত অপরাধের সাথে সম্পৃক্ততার আলামত পাওয়া যায়। তবে ক্ষমতাসীন দলের নামকাওয়াস্তে কয়েকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে অভিযানের ইতি টানা হয়। ক্ষমতাসীন দলের এখন অনেক অঙ্গসংগঠন। এগুলোর পদবি বাগিয়ে সেটা ব্যবহার করে অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ছেন লোকেরা। খোদ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও ক্ষমতা খাটিয়ে দলীয় লোকদের সাথে পাল্লা দিয়ে অপরাধ করছে। এবার র্যাবের চার সদস্য অপহরণ বাণিজ্য করতে গিয়ে আটক হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement
বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী ‘ইসলামী সমাজ বিপ্লব ছাড়া মানুষের মুক্তি সম্ভব নয়’ ইসরাইলে জার্মানির অস্ত্র বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে আইসিজের অস্বীকৃতি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন শাহরাস্তি উপজেলা আ’লীগ সভাপতি গ্রীষ্মের ছুটি কি এপ্রিলে এগিয়ে আনা দরকার? আইডিবি ২৮ দশমিক ৯ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তা দিবে গাজায় সাহায্য সরবরাহ বাড়ানোর উপায় নিয়ে আলোচনায় ব্লিঙ্কেনের জর্ডান যাত্রা বৃষ্টি আইনে ভারতের কাছে বাংলাদেশের হার ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে রংপুরে শ্রম আদালতের মামলার কার্যক্রম হাইকোর্টে স্থগিত নোয়াখালীতে নজিরবিহীন লোডশেডিং ‘আইসিজের গ্রেফতারি থেকে বাঁচতে যুক্তরাষ্ট্রকে চাপ দিচ্ছে ইসরাইল’

সকল