০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`


নির্বাচনে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য রদবদল জরুরি

-

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিশেষ করে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে পুলিশ নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করছে না বলে অভিযোগ করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের কাছে পক্ষপাতমূলক আচরণ করতে পারে, এমন বেশ কিছু পুলিশ কর্মকর্তার নাম দেয়া হয়েছে। অতীতে প্রতিটি নির্বাচনের সময় প্রশাসন বিশেষ করে পুলিশ প্রশাসনে রদবদল আনা হতো। কারণ, দীর্ঘ দিন একটি সরকার ক্ষমতায় থাকার কারণে পুলিশের সাথে রাজনৈতিক নেতৃত্বের সংযোগ তৈরি হয়। বিশেষ ধরনের সুবিধাভোগী শ্রেণী তৈরি হয়। ফলে অনেক ক্ষেত্রে কোনো প্রার্থী বা দলকে বিজয়ী করতে চেষ্টা চালানো হয়, যা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বড় ধরনের অন্তরায়।
বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে পুলিশ প্রশাসনে পরিবর্তনের দাবি কার্যত নাকচ করে দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে গণমাধ্যমে খবর এসেছে, সারা দেশে নির্বাচনব্যবস্থা মনিটরিংয়ের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিতে বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তাদের রাখা হয়েছে। দেশে গত কয়েকটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পুলিশ আচরণবিধি ও আইনি অধিকারের বাইরে গিয়ে কাজ করেছে। পুলিশের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের ভেতরে বসে ক্ষমতাসীন প্রার্থীর পক্ষে সিল মারা, বিরোধী এজেন্টদের আগে গ্রেফতার করা, বিরোধী দলের প্রার্থীদের পক্ষে সভা-সমাবেশে বাধা দেয়ার অভিযোগ ছিল। নির্বাচন কমিশনের তদন্তেও এসব অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। কিন্তু এরপরও নির্বাচন কমিশন বিরোধী দলের দাবি আমলে নেয়নি।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে ক্ষমতাসীন দলের পক্ষে পুলিশ যে অতি উৎসাহ দেখাচ্ছে, তাতে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। প্রতিদিন বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। তাদের বিভিন্ন ধরনের পুরনো মামলা এমনকি মাদক মামলায় গ্রেফতার দেখানো হচ্ছে। ফলে নির্বাচনের আগে তাদের বেরিয়ে আসার কোনো সম্ভাবনা থাকছে না। এমনকি মনোনয়নপ্রত্যাশীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। একজন মনোনয়নপ্রত্যাশী গুম হয়েছেন; কিন্তু এর সাথে জড়িত কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। নির্বাচন কমিশনও পুলিশের ওপর কোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারছে বলে মনে হয় না। ফলে সুষ্ঠু নির্বাচনের সক্ষমতা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের ওপর মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস থাকছে না। পুলিশ প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী; কোনো দলের কর্মচারী নয়। আমরা আশা করব, পুলিশ প্রশাসন স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবে।


আরো সংবাদ



premium cement