২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ক্রিকেটে মেয়েদের এশিয়া কাপ জয়

এ বিজয় অব্যাহত রাখতে হবে

-

বাংলাদেশে মহিলা ক্রিকেট দল এক নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে গত পরশু। এরা ছয়বারের এশিয়া চ্যাম্পিয়ান ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো এ ইতিহাস রচনা করল। এরা এশিয়া মহিলা ক্রিকেট কাপের ফাইনালে ভারতকে হারিয়েছে ৩ উইকেটে। বাংলাদেশের মেয়েদের এ সাফল্যে এখন গোটা বাংলাদেশ যেন আনন্দে ভাসছে। এ পাওয়া বাংলাদেশের জন্য অনন্য। কারণ ছেলেমেয়ে মিলিয়েই এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের শিরোপা এটি প্রথম। মেয়েদের এ অনন্য সাফল্যের আনন্দে গোটা জাতির সাথে আমরা শরিক। আমাদের প্রত্যাশা, বাংলাদেশের মেয়েরা এ সাফল্য আসছে দিনেও ধরে রাখবে।
সম্প্রতি দেরাদুনে বাংলাদেশ পুরুষ জাতীয় ক্রিকেট দল আফগানিস্তানের কাছে ৩ ম্যাচের টি-২০ সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর গোটা বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে নেমে এসেছিল একধরনের হতাশা ও ক্ষোভ। মেয়েদের এ এশিয়া কাপ জয়ের ফলে ক্রিকেটামুদে বাংলাদেশীদের মনের সেই হতাশা কিছুটা হলেও কাটবে। ২৮ বছর আগে যে কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশের ছেলেরা আইসিসি ট্রফির শিরোপা জয় করেছিল, সেই কুয়ালালামপুরেই বাংলাদেশের মেয়েরা বিজয় ছিনিয়ে আনল মেয়েদের এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ানশিপে। কুয়ালালামপুরের বিজয়মঞ্চ থেকে বাংলাদেশের সালমার ঘোষণা ছিলÑ ‘আমাদের হারানোর কিছু ছিল না; ওদের হারানোর ছিল অনেক কিছু। আমাদের পাওয়ার ছিল অনেক কিছু।’ সালমার কথা ধরেই বলতে হয়, আগামী টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের হারানোর থাকবে অনেক কিছু। আগামী ম্যাচে এ বিজয় অব্যাহত রাখতে না পারলে হারাতে হবে শিরোপা জয়ের গৌরব। তাই এখন থেকেই বাংলাদেশের মেয়েদের প্রস্তুতি নিতে হবে যেন এ বিজয় ধরে রাখা যায়। মনে রাখতে হবে, আমরা যখনই ক্রিকেটাঙ্গনে কোনো গৌরব অর্জনের মতো কিছু করতে পেরেছি, তখন এর পরবর্তী সময়ে সে গৌরব আর ধরে রাখতে পারিনি, এ অভিজ্ঞতাকে মাথায় রেখে নিতে হবে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রস্তুতি।
এবার আমাদের মেয়েদের শিরোপা বিজয়টা অনন্যসাধারণ একটি গৌরব। কারণ আমরা ভারতের মতো একটি দলকে ফাইনালে হারিয়ে এ শিরোপা বিজয়ের সাফল্য অর্জন করেছি। ভারত ইতঃপূর্বে ছয়বার এ শিরোপা বিজয়ের একটি সুখ্যাত দল। তাই এ বিজয় ধরে রাখার জন্য বাংলাদেশের মহিলা ক্রিকেট দলকে সচেতন প্রস্তুতি নিয়ে নামতে হবে আগামী মহিলা এশিয়া ক্রিকেট কাপ প্রতিযোগিতায়।
আমরা বিশেষভাবে বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট দলের এ সাফল্যকে স্বাগত জানাচ্ছি। কারণ পুরুষ ক্রিকেট দল যেটি পারেনি, মেয়েদের ক্রিকেট দল সেটি পেরেছে। মেয়েদের এ সাফল্য আমাদের ছেলেদের ক্রিকেট দলকে ভবিষ্যৎ এশিয়া কাপ শিরোপা লাভে উজ্জীবিত করবে বলেই আমাদের আশা। আমরা জানি, এর আগে ২০১২ এবং ২০১৬ সালে দু’বার এশিয়া কাপ ফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ পুরুষ ক্রিকেট দল; কিন্তু শিরোপা জয়ের স্বপ্ন আর পূরণ হয়নি। এর ফলে পুরুষ ক্রিকেট দল হৃদয় ভাঙার কষ্ট নিয়ে এখন অবস্থান করছে। মেয়েদের এ বিজয় তাদের কিছুটা হলেও এশিয়া জয়ে উজ্জীবিত করবে। আমাদের প্রত্যাশা, আল্লাহ চাহে তো আমাদের পুরুষ ক্রিকেট দলও একদিন মেয়েদের মতোই এশিয়া জয় করবে। আবারো শুভেচ্ছা রইল বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট দলের প্রতি।

 


আরো সংবাদ



premium cement