পশুর দেহে গ্লোব বায়োটেকের টিকা (ভ্যাকসিন) পরীক্ষায় সফলতা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন গ্লোবের রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলাপমেন্টের প্রধান ড. আসিফ মাহমুদ। তিনি জানান, পশুর উপর টিকা পরীক্ষার (অ্যানিমেল ট্রায়াল) ব্যাপারে যেমনটি আশা করেছিলাম আমরা ঠিক তেমনই সাড়া পেয়েছি। চলতি মাসের মধ্যেই হিউম্যান ট্রায়ালের জন্য আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন ড. আসিফ মাহমুদ।
তিনি বৃহস্পতিবার রাতে নয়া দিগন্তকে বলেন, পশুর দেহে পরীক্ষা করার যতগুলো পর্যায় আছে সবগুলো পর্যায় আমরা সময় নিয়ে সতর্কতার সাথে পরীক্ষা করে সফল হয়েছি। এখন আমরা হিউম্যান ট্রায়ালের (মানুষের দেহে পরীক্ষা) জন্য বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড রিসার্চ কাউন্সিলে (বিএমআরসি) আবেদন করবো। তিনি এ ব্যাপারে জানান, ইতোমধ্যে হিউম্যান ট্রায়ালের জন্য একটি প্রটোকল তারা তৈরি করে রেখেছেন যেন বিএমআরসির অনুমোদন পেলেই শুরু করে দিতে পারেন।
তিনি নয়া দিগন্তকে জানান, একটি ভ্যাকসিন তৈরি করতে দীর্ঘ সময় লাগে। কিন্তু বর্তমানে পুরো বিশ্বে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে তা এর আগে মানবজাতি কখনো দেখেনি। এসব কারণে সময়ের প্রয়োজনে বিশ্বের বড় ভ্যাকসিন উৎপাদনকারীরা অল্প সময়ের মধ্যে কিছু ট্রায়াল শেষ করেছে এবং অবশিষ্ট ট্রায়ালও শেষ করার চেষ্টা করছে। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, যেমন যুক্তরাষ্ট্রের মডার্না ৬৩ দিন আগে শুরু করেছে, ইতোমধ্যে তারা হিউম্যান ট্রায়ালের তৃতীয় দফার পরীক্ষার করছে।
গ্লোব বায়োটেক কিভাবে করোনা ভ্যাকসিন তৈরি করছে? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা ২০১৬ সাল থেকে শুরু করলেও আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। যেমন ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় ভ্যাকসিন তৈরি করে করা যায় (অ্যাস্ট্রাজেনেকা এভাবে করছে), ভাইরাসের জেনেটিক পরিবর্তন করে (মডার্না, ফাইজার করছে), পাশাপাশি ডিএনএ নিয়ে ভ্যাকসিন তৈরি করা যায়।
ড. আসিফ মাহমুদ বলেন, গ্লোব বায়োটেকের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। জীবন্ত ভাইরাসকে কালচার করে ভ্যাকসিন বানানোর প্রযুক্তি আমাদের আছে এবং ভ্যাকসিন তৈরির জন্য যে পরিমাণ অ্যাক্টিভ ফার্মাসিউটিকেল ইনগ্রেডিয়েন্ট (এপিআই) প্রয়োজন হবে এর সবই তৈরি করার সক্ষমতাও গ্লোব বায়োটেকের রয়েছে। এককথায় টোটাল বায়োলজিক্যাল ড্রাগ তৈরি করার সক্ষমতা আমাদের আছে। তবে ভ্যাকসিন ভায়ালে করে পৌঁছে দেয়ার জন্য আমাদের অন্য কারো (অন্য কোনো কোম্পানি) সহায়তা লাগতে পারে। তিনি বলেন, আমাদের এসব কিছুই নির্ভর করছে সরকারি অনুমোদনের ওপর। যত তাড়াতাড়ি অনুমোদন পাবো তত তাড়াতাড়ি আমরা কাজ শুরু করতে পারবো।
এ ব্যাপারে গ্লোব বায়োটেকের চেয়ারম্যান মো: হাবিবুর রহমান জানান, আগামী ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আমরা হিউম্যান ট্রায়ালে যেতে চাচ্ছি । অ্যানিমেল ট্রায়াল সফল হয়েছে কি না প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শতভাগ সফল।
এর আগে গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালস গ্রুপ অব কোম্পানিজ লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল যে তারা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই ভ্যাকসিন তৈরি করে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারবে। তবে ড. আসিফ মাহমুদ এ ব্যাপারে গতকাল বলেন, আমাদের প্রটোকল অনুযায়ী সবকিছু যদি হয় তাহলে বলতে পারি চলতি বছরের ডিসেম্বর অথবা আগামী বছরের জানুয়ারির শুরুতে আমরা ভ্যাকসিন বাজারে আনতে পারবো। তবে পুরোটা আমাদের হাতে নেই, বিএমআরসি এবং সরকারসহ অনেক বিষয় জড়িত।
উল্লেখ্য, গত ২ জুলাই প্রতিষ্ঠানটি দেশে প্রথম ভ্যাকসিন আবিষ্কারের ঘোষণা দেয়। গত ৮ মার্চ তারা করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কারের কাজ শুরু করেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা