২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ছুটে যাই রামভদ্রপুরে

-


আমি বারবার ছুটে যাই রামভদ্রপুরে। ভ্যান থেকে নেমে
রুদ্ধশ্বাসে ছুটতে থাকি ঘুটঘুটে অন্ধকারে; আমার জন্মের
আঙিনায় দাঁড়িয়ে নিঃশ্বাস বন্ধ করে মা মা বলে চিৎকার
করে উঠি আর অপেক্ষা করতে থাকি-এই বুঝি ঘর থেকে
হুড়মুড় করে বের হয়ে এলো মা, ‘বাজান, তুমি আইচাও?’
বলে বুলাতে লাগলো হাত আমার মাথার ’পরে, আর
মুহূর্তেই মাথার বিস্রস্ত চুলগুলো বর্ষার কদমফুল হয়ে
দুলতে লাগল পরম শান্তিতে। আমার চিৎকার শুনে
ছুটে এলো পাড়াপ্রতিবেশীরা; বলল, মা কি কারো
চিরদিন বাঁচে, বাছা? আমি খাঁ খাঁ আমাদের বাড়িটার
চতুর্দিকে এক নজর বুলিয়ে নিয়ে ছুটে যাই মার কবরের
দিকে। মা যেন কবরে শুয়ে দেখতে পায় তার পুত্রের
চিত্তের অস্থিরতা। সূরা ফাতেহা ও দরুদ শরিফ পাঠ
করে আমি হাত তুলে ভেজাই আমার দু’চোখের পাতা
আর শাদা হয়ে ওঠা দাঁড়ি। হায় প্রভু দয়াময় রহমান
ও রহিম! মা ছাড়া, মায়ের অপত্য স্নেহের তুমুল
ঝড়বৃষ্টি ছাড়া কিভাবে শীতল হবে পৃথিবীর বুক?
কিভাবে পবিত্র হবে ঘৃণা লোভ কাম ক্রোধ অহঙ্কার
ও উচ্চাকাক্সক্ষার পাপে পোড়া সভ্যতার ধূসর জমিন?
ভালোবাসা ভুলে যাওয়া পাথরমানুষগুলো কিভাবে নরম
হবে মাতৃহস্তের পবিত্র স্পর্শ ছাড়া? আমার নিঃশব্দ
আর্তনাদে কেঁপে কেঁপে ওঠে বিষণ্ন বাতাস। কেউ যেন
ধাক্কা দিয়ে ঠেলে দেয় আমাকে রাস্তার দিকে, আমাকে যা
টেনে নিয়ে চলে ফের নরকনগরে। বেদনার নরকনগর থেকে
আমি তবু ছুটে যাই রামভদ্রপুরে কারণ কী করে বাঁচে মাছ
পানির সান্নিধ্য ছাড়া?


আরো সংবাদ



premium cement