৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


যে ক থা হ য় নি ব লা

লেখক সত্তায় প্রতিনিয়ত সৃষ্টির আনন্দ আছে : ফারুক হোসেন

-

শিশুসাহিত্যিক হয়ে ওঠার কারণ কী? কিভাবে লেখালেখিতে এলেন?
লেখালেখি করতে এসে যেটি মনে হলো, দীর্ঘ সময় ধরে পড়ার মতো পাঠকের ধৈর্য নেই, সময় নেই, ইচ্ছাও নেই। আবার খুব অল্প সময়ের মধ্যে, ছোট্ট কথার মধ্যে অনেক কথা বলা যায় ছড়ায়। ছড়া ছোটদের জন্য-এমন একটি ধারণা সবার আছে। কিন্তু ছড়া সবার জন্য এই বিবেচনায় আমার ছড়া দিয়ে সিরিয়াস লেখার যাত্রা শুরু। এটি সত্তরের বিকাল বেলা। লিখতে শুরু করি ছোটদের জন্য। একটি লেখায় দিতে পারি ছন্দ, মাত্রা, তাল এবং সুকৌশলে কিছু ভাব/বক্তব্য যাতে প্রকৃতপক্ষে অনেক অর্থ বহন করে। সেই থেকে শুরু ছোটদের জন্য লেখালেখি। একসময় গল্প, প্রবন্ধ ও ভ্রমণও লিখে ফেলি এবং অব্যাহত রাখি যা আমাকে পথ দেখিয়েছে শিশুসাহিত্যিক হয়ে ওঠার।
শিশুসাহিত্যিক হলেন আর কী হতে চেয়েছিলেন?
ডাক্তার হতে চেয়েছিলাম। হতে চেয়েছিলাম সামরিক কর্মকর্তা। এই ইচ্ছের সঙ্গে লেখক হওয়ার কোনো বিরোধ নেই। যদি বোঝানো হয়ে থাকে শিল্প-সংস্কৃতির মাঠে আর কী হতে চেয়েছিলাম-না অন্য কোনো কিছু হতে চাইনি। তবে গান গাই শখের বশে। আমি মনে করি শিশুসাহিত্যিক হয়ে ওঠা সবচেয়ে বড় দায়িত্ব, স্পর্শকাতর চর্চা এবং সবচেয়ে কঠিন কাজ।
কী প্রতিবন্ধকতা জয় করে লেখক হলেন?
সবাই মনে করত, লেখক হতে চেষ্টা করা মানেই একাডেমিক পড়াশোনা গোল্লায় যাবে। তবে এটি ঠিক একাডেমিক পড়াশোনা সৃষ্টিশীল চর্চার ক্ষেত্রে একটি প্রতিবন্ধকতা-যদিও আমি এটি জয় করেছি। আমি ধরে রেখেছিলাম দুটোই যুগপৎভাবে।
লেখক এবং জাগতিক জীবনের মাঝে কোন জীবন বেশি উপভোগ করেন?
জাগতিক জীবন অনেক ভঙ্গুর। হিসেব করে পা রাখতে হয়। হিসেব করে চলতে হয়। নানা রকমের দায়িত্ব আছে এখানে। চাওয়া-পাওয়া, পারা-না পারার অনেক টানাপড়েন আছে এখানে। জাগতিক জীবনকে আঁকড়ে ধরলে অনেক প্রতিশ্রুতি সামনে এসে দাঁড়ায়। এখানে ভোগ এবং উপভোগ দুটোই আছে। কিন্তু লেখক জীবনের প্রতিশ্রুতিগুলো অদৃশ্য। নিজের কাছে নিজের চ্যালেঞ্জ। আমি উপভোগ করি লেখকসত্তা। এখানে প্রতিনিয়ত সৃষ্টির আনন্দ আছে।
সমাজের প্রতি কবির কোনো দায় আছে কি?
সমাজের কাছে কবির দায় আছে। সত্য ও শুদ্ধ কথা বলার দায়। সমাজের মানুষের মন ও মনন গড়ে তুলতে সাহায্য করার দায়।
শিল্পসম্মত রচনা সৃজনের উপায় কী হতে পারে?
যে রচনা পাঠকের জন্য কল্যাণকর। এটি খাবারের মতো। অতি ঝাল, অতি টক, অতি তেতো অথবা অতি পানসে-ভালো লাগবে না। শিল্পসম্মত রচনার ক্ষেত্রেও উপায় হলো ‘অতি’কে এড়িয়ে চলা। অতি আমাদের ক্ষতি করে।
শিশুসাহিত্য লিখে আমাদের শিশুদের কী শেখাতে পেরেছি?
শিশুদের শেখাতে পেরেছি নৈতিকতা। শেখাতে পেরেছি দেশপ্রেম, দেশের প্রতি তাদের দায়। শেখাতে পেরেছি কী করা উচিত, কী নয়। লেখার মধ্য দিয়ে ওরা এইসব বুঝতে শিখছে। যারা একদম ছোট তাদের শেখাতে পেরেছি পাঠাভ্যাস। এই পাঠাভ্যাস তাকে একজন পাঠক নাগরিক হয়ে গড়ে তুলবে। লেখক হয়েও উঠতে পারে সে একদিন।
খ্যাতির তৃষ্ণার পেছনে একজন কবি কেন ছোটেন?
শুধু কবি নন, সবাই একসময় খ্যাতির তৃষ্ণার পেছনে ছোটেন। এ নিয়ে নিশ্চয়ই শুনেছেন, গধংষড়'িং যরবৎধৎপযু ড়ভ হববফং. ওঃদং ধ সড়ঃরাধঃরড়হধষ ঃযবড়ৎু রহ ঢ়ংুপযড়ষড়মু পড়সঢ়ৎরংরহম ধ ভরাব-ঃরবৎ সড়ফবষ ড়ভ যঁসধহ হববফং, ড়ভঃবহ ফবঢ়রপঃবফ ধং যরবৎধৎপযরপধষ ষবাবষং রিঃযরহ ধ ঢ়ুৎধসরফ. ঋৎড়স ঃযব নড়ঃঃড়স ড়ভ ঃযব যরবৎধৎপযু ঁঢ়ধিৎফং, ঃযব হববফং ধৎব: ঢ়যুংরড়ষড়মরপধষ (ভড়ড়ফ ধহফ পষড়ঃযরহম), ংধভবঃু (লড়ন ংবপঁৎরঃু), ষড়াব ধহফ নবষড়হমরহম হববফং (ভৎরবহফংযরঢ়), বংঃববস, ধহফ ংবষভ-ধপঃঁধষরুধঃরড়হ. সুতরাং সবকিছু পূরণ হলে মানুষ সব শেষে খ্যাতির পেছনে দৌড়াবে। কবিরাও তাই। পিরামিডের সবচে উঁচুতে অবস্থান করে খ্যাতি।
শিশুসাহিত্যের প্রতি একজন শিশুসাহিত্যিকের কী দায়?
শিশুসাহিত্যিকের দায় হচ্ছে এমন শিশুসাহিত্য রচনা করা যে সাহিত্য শিশুর মন ও মননকে গঠন করে, উজ্জীবিত করে, মানুষের মতো মানুষ হয়ে উঠতে সাহায্য করে।
আমাদের শিশুসাহিত্যকে কিভাবে দেখছেন?
আমাদের শিশুসাহিত্য প্রচণ্ড শক্তিশালী, কার্যকর ও পরিপূর্ণ শিল্পমাধ্যম। প্রশ্ন হচ্ছে দেশের নীতিনির্ধারকদের এই নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই।
নিজেকে নিয়ে প্রিয়জনের কোন অভিযোগ মিষ্টি মনে হয়?
অভিযোগ, বিছানায় যাবার সাথে সাথে আমি ঘুমিয়ে পড়ি। আমি খুশি, এটি আল্লাহর আশীর্বাদ আমার প্রতি। অভিযোগ কোনো খাবারেই আমার না নেই। সবই আমার ভালো লাগে। আমি খুশি, আল্লাহ আমাকে এমন রুচি দিয়েছেন, তার দেয়া খাবারের কোনোটাকেই আমার খারাপ লাগে না।
জীবনের ব্যর্থতার কথা বলুন?
ডাক্তার হতে পারিনি।
এখনকার ছড়া কাব্যশূন্য ফলে ছড়া আর কবিতা হয়ে উঠছে না, এমন হওয়ার কারণ কী?
বেশি লেখা, বেশি দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা, দ্রুত পরিচিতি লাভ করার ইচ্ছা, পড়াশোনার মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ সমৃদ্ধি লাভ ও প্রস্তুতি ছাড়াই লেখা-ইত্যাদি কারণে তা হয়। এখন এ রকম একটা প্রবাহ চলছে। আবার মানসম্পন্ন লেখাও হচ্ছে। সব লেখাই কাব্যশূন্য হচ্ছে আমি তা বলব না।
লেখালেখির পাশাপাশি ব্যক্তিজীবন কতখানি সফল মনে করেন?
ব্যক্তিজীবনে আমি সফল, এজন্য আল্লাহর কাছে আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। কোনো কিছুই স্রষ্টার ইচ্ছে ছাড়া হবে না। তিনি আমাকে প্রশাসনের সর্বোচ্চ পদমর্যাদায় উন্নীত করেছেন।
কবি জীবনের শেষ ইচ্ছে কী?
শেষ ইচ্ছে, শেষ দিন পর্যন্ত লিখে যাওয়া। আর ছড়ার জন্য কিছু একটা করে যাওয়া, যা আমাদের আগামী দিনের ছড়ালেখকদের উদ্বুদ্ধ করবে।
জীবনে অপূর্ণ যে স্বপ্ন?
যে স্বপ্ন পূরণ হয়নি সেটি বলতে চাই না। সেটি স্বপ্ন হয়েই থাক।
আপনার শিশুসাহিত্য দর্শন কী?
শিশু-কিশোর পাঠককে একটি বার্তা দেয়া যা তাকে সচেতন করবে, সমৃদ্ধ করবে, বিকশিত করবে।
সাহিত্যে কতটুকু অবদান রেখেছেন?
আমার জায়গা থেকে আমি কাজ করেছি, এখনো করে যাচ্ছি, সেটি কতটুকু অবদান আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয়। পাঠক, বোদ্ধা, গবেষকই তা বলতে পারেন।
পাঠকের ভালোবাসা কেমন পান?
পাঠকের ভালোবাসা অনেক, সারা দেশ থেকে অনুরাগী পাঠকের কথা শুনতে পাই। আমার মনে হয়, এই ভালোবাসাই লেখার সবচেয়ে বড় রিটার্ন।
কোন বই বারবার পড়ার ইচ্ছে এখনো তাড়িত করে?
সবসময়ই যে বইটি পড়ার ইচ্ছে আমাকে তাড়িত করে সেটি হচ্ছে অর্থসহ পবিত্র আল কুরআন।
এখনো উজ্জীবিত রাখে যে বাণী?
যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবেÑ বঙ্গবন্ধু


আরো সংবাদ



premium cement
বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের বাধাহীন প্রবেশের দাবি সম্পাদক পরিষদ ও নোয়াবের পেকুয়া উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন বিএনপির ২ প্রার্থী নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন ১৮৫ দিন : শিক্ষামন্ত্রী মঙ্গলবার ২ হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং, দুর্ভোগে মানুষ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা বাড়ল জ্বালানি তেলের দাম, কার্যকর বুধবার বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী ‘ইসলামী সমাজ বিপ্লব ছাড়া মানুষের মুক্তি সম্ভব নয়’ ইসরাইলে জার্মানির অস্ত্র বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে আইসিজের অস্বীকৃতি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন শাহরাস্তি উপজেলা আ’লীগ সভাপতি গ্রীষ্মের ছুটি কি এপ্রিলে এগিয়ে আনা দরকার?

সকল